মাদক ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্য তারাবো ৮ নং ওয়ার্ড
Published: 29th, May 2025 GMT
মাদকের কালো ছায়ায় অন্ধকার রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড । এখানে প্রায় অর্ধ্বশত মাদকের স্পট রয়েছে। এ সব স্পটকে ঘিরে ছোট-বড় শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী রয়েছে।
এখানে সহজেই মিলছে মরণ নেশা গাঁজা, হেরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল, আইসপিল, টিডিজেসিক ও লুপিজেসিক ইঞ্জেকশনসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য। সচেতন মহল বলছে পর্যাপ্ত নজরদারি ও তদারকির অভাবেই তারাবো পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডটি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের ‘অভয়ারণ্য’।
বিভিন্ন সমীক্ষালব্ধ তথ্য থেকে জানা যায়, ওই এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রন করছে একাধিক সিন্ডিকেট। এদের মধ্যে রাসেল, শ্রাবন ও রুবেল সিন্ডিকেটই মূলত ওই এলাকার অধিকাংশ মাদক স্পট নিয়ন্ত্রন করছে। এদের মাধ্যমে এখানে প্রতিদিন দেড় থেকে দু’লাখ টাকার মাদক বিক্রি হয়ে থাকে।
মাদকের বিষাক্ত ছোবলে হাজার হাজার তরুণের জীবন বিপন্ন। মাদকের টাকা জোগাড় করতে তারা চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। মাঝে মাঝে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত চুনোপুঁটিরা ধরা পড়লেও রাঘব-বোয়ালরা রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাসেল সিন্ডিকেটর প্রধান রাসেলের নিয়ন্ত্রনে নির্বিঘ্নে ৮নং ওয়ার্ডে মাদক স্পট চলছে। এদের মধ্যে তারই আপন ভায়রা তারাবো গ্রামের ইয়াসিনের ছেলে আবদুল্লাহ ও দক্ষিণপাড়ায় রাসেলের আপন বড় ভাই জুয়েল তারাবো ৮ নং ওয়াডে মাদক সাপ্লাই করে থাকে।
তারাবো বাজারে সিএমবির ভিতরে মাদক স্পট চালায় কামাল উদ্দিনের ছেলে জাহেদ আলি, ওয়াকিলের ছেলে ফারুক, মৃত রসিদের ছেলে এরশাদ। তারাবো অপূর্ব ডাইং সামনে রহিম বাদশা পিতা মৃত শুকুর আলী বিপুল পিতা রহম আলী বাদল ওরফে তোতলা বাদল।
তারাবো সিএমবি বালুর মাঠ নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে মাদক স্পট চালায় মতিন সাউথের ছেলে চান্দু, আব্দুর রহমানের ছেলে আবুল, মোশারফের ছেলে শাহিন।
তারাবো বউ বাজারের সামনে স্পট চালায় মৃত লাল মিয়ায় ছেলে রিপন। তারাবো গাবর পাড়ায় স্পট চালায় আনোয়ারের ছেলে নাঈম, বারেকের ছেলে আলামিন ওরফে চাপাটি আলামিন, ফজর আলির রাজু।
নিসান জুট মিলের সামনে স্পট চালায় জাকিরর ছেলে মেহেদি ও ওগাতের ছেলে রবিন। তারাবো সোলতান বাগ নদির পাড়ে স্পট চালায় আলমগীরের বাপি, শামসুলের ছেলে মোবারক ও সেরাজুল। তারাবো নয়া বাড়িতে স্পট চালায় শাহজাহান উদ্দিনের ছেলে মালেক, মৃত মঞ্জুর ছেলে জসিম পাগলা ও হৃদয়ের ছেলে নিরব।
তারাবো রিতার বিটায় স্পট চালায় দিলুর ছেলে রানা ও জসিম পাগলার ছেলে জাহিদ। তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় তোফাজ্জলের ছেলে নুরু ও নুর ইসলামের ছেলে উজ্জল। তারাবো হাটি পাড়ায় স্পট চালায় রতন সরকারের ছেলে দিগন্ত বাবু, ইন্নাত আলীর ছেলে আরিফ।
রাসেল সিন্ডিকেটের প্রত্যেকটি স্পট দেখভাল করে রুবেল ভুইয়া। এছাড়াও রাসেলের আপন বড় ভাই সুলতান বাগ নয়াবাড়ি স্পটটি কন্ট্রোল করে। রাসেলের আপন বিয়াই আনোয়ার এসব স্পটের ইয়াবা ফেনসিডিল গাজা মদ বিয়ার সাপ্লাই করে।
তারাবো দক্ষিণপাড়া থেকে আব্দুলার বাড়িতে রাসেলের বড় ভাই জুয়েল প্রতিদির সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন মাদকদ্রব্য ডেলিভারি দেয়। এছাড়া তারাবো হাটিপাড়া হিন্দু পাড়ার প্রত্যেকদিন জুয়ার স্পট বসায়। এই স্পট থেকে প্রতিদিন ২০ হাজার টাকা বখড়া পায় রুবেল রাসেল শ্রাবণ।
আরও একটি জুয়ার স্পট বসায় তারাবো সি এম বি নদীর পাড় আকবরের বালুর গদির সামনে। সেখান থেকেও প্রতিদিন ১৫ হাজার টাকা বখড়া পায় রাসেল, রুবেল ও শ্রাবণ।
স্থানীয়দের দাবি যদি ৮ নং ওয়ার্ডের এসব মাদক স্পট বন্ধ না করা হলে এ এলাকা বসবাসের অয়োগ্য হয়ে পড়বে। মাদক সেবী আর মাদক ব্যবসায়ীদের বিচরণে সাধারণ মানুষ প্রতিটা মুহুর্তে আতংকে থাকছে। দ্রুত এদের প্রতিহত করতে হবে।
বিশেষ করে অপ্রতিরোধ্য রাসেলকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে তারা সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত বলেন, মাদকবিরোধী অভিযান নিয়মিত চলে। রূপগঞ্জের অনেক এলাকা দুর্গম। এ সব এলাকায় যেতে অনেক সময় লাগে।
এ সুযোগে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। তবে মাদকের সাথে কোনো আপষ নেই। এদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।
আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জে গাঁজাসহ নারী মাদক কারবারি আটক
জামায়াত নেতা আজাহারুল ইসলামের মুক্তি, এতিমদের মাঝে খাবার বিতরণ
বন্দরে লোহা চুরি করে বিক্রি সময় ২ যুবক আটক
বন্দরে বিভিন্ন ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার ৪
তারুণ্যের সমাবেশে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সজিব’র যোগদান
বন্দরে মাটি কেটার অভিযোগে ২ জনকে ৩ লাখ জরিমানা
বন্দরে ঋণের বোঝা সইতে না পেরে কিডনি বিক্রির ঘোষনা নারীর
বন্দরে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীকে অপহরন, মুক্তিপন দাবি : গ্রেপ্তার ১
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ র স মন
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।
নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।
নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।
তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা।
এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।
তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা।
এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই।
তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।
চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না।
এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই।
তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।
তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো?
আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।