খসড়া টেলিযোগাযোগ সংস্কার নীতিমালা অনুসারে ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) লাইসেন্স বাতিল হলে সরকার বছরে ৩০০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে। সরকারের আয় হবে মাত্র ১৭ কোটি টাকা। চাকরি হারাবে ৭০০ প্রকৌশলী। 

বৃহস্পতিবার ‘খসড়া টেলিযোগাযোগ সংস্কার নীতিমালা-২০২৫: ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্কস বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এ কর্মশালার আয়োজন করে। 

কর্মশালায় অ্যাসোসিয়েশন অব আইসিএক্স অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এআইওবি) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আইসিএক্স টেলিকম খাতের তৃতীয় চোখ। এই খাতের প্রহরী। আমাদের আছে বিশ্বমানের প্রকৌশলী। তারাই টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়ন করেছেন। এখন এ খাত বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

এআইওবির কোষাধ্যক্ষ খুরশীদ আলম জানান, স্থানীয় ব্যবসা ও উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দেওয়া, মানিলন্ডারিং বন্ধ এবং জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষায় টেলিযোগাযোগ নীতিমালা করা হয়েছিল। সংস্কারের জন্য প্রস্তাবিত নীতিমালা পুরো খাতকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

এক আইসিএক্স ব্যবসায়ী বলেন, আইসিএক্স না থাকলে বিটিআরসির প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে সমস্যা হবে। কারণ টেলিযোগাযোগ খাতের অপারেটরগুলোর অন্যতম যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী হুয়াওয়ে। চীনা কোম্পানিটির বাংলাদেশে কর্মরত জনশক্তির অদক্ষতায় তথ্য পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। আইসিএক্স না থাকলে এ ভোগান্তি আরও বাড়বে।

বক্তারা বলেন, আইসিএক্সের মূল কাজ ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়েগুলোর (আইজিডব্লিউ) মাধ্যমে বিদেশ থেকে যেসব কল আসে, তা মোবাইল ও অন্যান্য টেলিফোন (এএনএস বা অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক সার্ভিস) অপারেটরের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আইসিএক্সের মাধ্যমে কল সরকারের নজরদারিতে থাকে। এতে অবৈধ কলের মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ সম্ভব হয়। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষায় ভূমিকার রাখে আইসিএক্স। 
দেশে ৫০টির বেশি ভয়েস সেবাদাতা অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক সার্ভিস (মোবাইল, পিএসপিএন ও আইপি-টিএসপি) অপারেটর কাজ করছে। প্রস্তাবিত নীতিমালা অনুসারে আইসিএক্স বাদ দিয়ে টেলিযোগাযোগাযোগ খাতের অপারেটরগুলো পৃথকভাবে দ্বিপক্ষীয় সংযোগ স্থাপন করতে গেলে আইসিএক্স ব্যবস্থার চেয়ে খরচ বেশি হবে। এটি না থাকলে অবৈধ ভিওআইপি বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে রাজস্ব ফাঁকির পরিমাণ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইস এক স

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ