দিনাজপুরে প্রস্তুত ৪ লাখ কোরবানির পশু
Published: 30th, May 2025 GMT
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুরে প্রস্তুত করা হয়েছে ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৯১টি কোরবানির পশু। তবে চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫টি পশুর।
জেলার গৃহস্থসহ ছোট-বড় খামারিরা এসব কোরবানির পশু প্রস্তুত করছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন হাটে এসব পশু তুলছেন তারা। তবে তারা বলছেন, অন্যান্য বারের চেয়ে এবার হাটে কোরবানির পশুর দাম অনেকটা কম।
জেলার বিভিন্ন গরুর খামার ঘুরে দেখা যায়, এবার প্রায় খামারেই বড় আকারের গরু নেই। অন্যান্য বছরে খামারিদের খামারে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা দামের বড় আকারের গরু ছিলো। এ বছরের চিত্র আলাদা। বর্তমান প্রায় খামারে সর্বনিম্ন ৯০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় থেকে দুই লাখ টাকা দামের গরু আছে।
আরো পড়ুন:
ঝিনাইদহের ৭০ হাজার পশু অন্য জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে
চাহিদার চেয়ে বেশি পশু প্রস্তুত চাঁপাইনবাবগঞ্জে
জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এসব খামারের দেখাশোনা এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।
বিরামপুর উপজেলার হাবিবপুর গ্রামের গৃহস্থ কোরবান আলী বলেন, ‘‘বাড়িতে আমার দুইটি গাভী রয়েছে। গত দুই বছর আগে দুই গাভীর দুইটি আড়িয়া গরু হয়েছে। এই আড়িয়া গরু এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছে। বিরামপুর হাটে তুলেছিলাম, দাম অনেক কম বলছে ক্রেতারা। ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হলে বিক্রি করবো।’’
ঘোড়াঘাটের একজন গরু ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘হাট থেকে অল্প দামে গরু কিনে তা মোটাতাজা করে কোরবানির হাটে বিক্রি করি। এবার বাড়িতে তিনটি কোরবানির গরু প্রস্তুত করেছি। যদি দাম ভাল পাই তাহলে বিক্রি করবো।’’
হাকিমপুরে মিশর উদ্দিন সুজন নামের একজন খামারি বলেন, ‘‘গত ৫ বছর যাবৎ আমি এই খামার করেছি। গতবার দেশি-বিদেশি একশত'র উপরে গরু, মহিষ আর ছাগল ছিলো। এবার অনেকটা কম গরু আছে। এগুলো কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে দাম তেমন ভাল পাবো না, লাভ তেমন হবে না। গরুর খাদ্যের দাম বেশি। হাটে দামও হয়তো বেশি পাব না।’’
তিনি আর বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে খামারের কয়েকটি গরুতে লাম্পি রোগ হয়েছিল। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করে বর্তমান সব গরু সুস্থ আছে।’’
হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, ‘‘হাকিমপুর উপজেলায় মোট গরু, মহিষ ও ছাগলের খামার রয়েছে ৩২০০টি। ঈদ উপলক্ষে ১৫ হাজার ৯৩৯টি কোরবানির পশু প্রস্তুত রয়েছে। তার মধ্যে চাহিদা রয়েছে ১৫ হাজার ২০০টির। চাহিদা ছাড়াও অতিরিক্ত রয়েছে ৭৩৯টি পশু। হাকিমপুরের চাহিদা পুরণ করেও বাকি কোরবানির পশুগুলো দেশের চাহিদা মেটাবে। আমরা সার্বক্ষণিক খামারিদের সুপরামর্শসহ সেবা দিয়ে আসছি।’’
দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ডিএলও) আব্দুল রহিম বলেন, ‘‘পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দিনাজপুর জেলায় মোট কোরবানির ৪ লাখ ৫ হাজার ৯৯১টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা আছে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৮৫টি পশু। অবশিষ্ট রয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি পশু। এর মধ্যে ষাঁড় ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৯৩, বলদ ১৩ হাজার ৫১, গাভী ৩৫ হাজার ৫৩৬, গরু ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯, মহিষ ৫৭৭, ছাগল ২২ হাজার ৭৮৬ ও ভেড়া ২০ হাজার ৫৪৯টি। জেলায় মোট খামারের সংখ্যা ৬২ হাজার ১০৮ টি।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এবার কোরবানির পশু জেলার চাহিদা পূরণ করেও অবশিষ্ট পশু দেশের চাহিদা পূরণ করবে।’’
ঢাকা/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক রব ন র হ ট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে ৩৭টি প্রতিষ্ঠান। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এসব প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের একেকটি ২০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে চলতি বছর ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ মাছ রপ্তানির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করে। গত বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রথমে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে সেটি কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টন করা হয়। সেই তুলনায় এবার অর্ধেক ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
চলতি বছর অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অনুমোদনপত্রে বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষ রপ্তানি পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি রপ্তানি করা যাবে না। অনুমতিপত্র হস্তান্তরযোগ্য নয়। সরকার প্রয়োজনে যেকোনো সময় এই রপ্তানির অনুমতি বাতিল করতে পারবে।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো খুলনার আরিফ সি ফুডস, বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজ, লোকজ ফ্যাশান ও মাশফি অ্যান্ড ব্রাদার্স, চট্টগ্রামের জেএস এন্টারপ্রাইস ও আনরাজ ফিশ প্রোডাক্টস, যশোরের লাকী এন্টারপ্রাইজ, এমইউ সি ফুডস, লাকী ট্রেডিং, রহমান ইমপেক্স ফিস এক্সপোর্ট, মোহাতাব অ্যান্ড সন্স, জনতা ফিস, বিশ্বাস ট্রেডার্স ও কেবি এন্টারপ্রাইজ, ঢাকার ভিজিল্যান্ড এক্সপ্রেস, স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ, মাজেস্টিক এন্টারপ্রাইজ ও বিডিএস করপোরেশন, বরিশালের মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, নাহিয়ান এন্টারপ্রাইজ, এ আর এন্টারপ্রাইজ ও তানিসা এন্টারপ্রাইজ, পাবনার নোমান এন্টারপ্রাইজ, রুপালী ট্রেডিং করপোরেশন, সেভেন স্টার ফিস প্রসেসিং কোং, ন্যাশনাল অ্যাগ্রো ফিশারিজ, আরফি ট্রেডিং করপোরেশন, জারিফ ট্রেডিং করপোরেশন, জারিন এন্টারপ্রাইজ, ফারিয়া ইন্টারন্যাশনাল ও সততা ফিস, ভোলার রাফিদ এন্টারপ্রাইজ, সাতক্ষীরার মা এন্টারপ্রাইজ ও সুমন ট্রেডার্স।