ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে বড় ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আজ রাতে। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের এই ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইন্টার মিলান ও পিএসজি। ম্যাচ শুরুর আগে জেনে নেওয়া যাক ফাইনাল কোথায়, কখন আর কী কী আয়োজন থাকছে সেই দ্বৈরথকে ঘিরে…কবে, কোথায়, কখন

আজ বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টায় জার্মানির মিউনিখ শহরের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান ও ফরাসি ক্লাব পিএসজি।

ফাইনালে দুই দলের ইতিহাস

দুই লেগের মহাকাব্যিক এক সেমিফাইনাল শেষে বার্সেলোনাকে ৭-৬ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ইন্টার। সিরি ‘আ’ ক্লাবটি এ নিয়ে সপ্তমবার উঠল ইউরোপীয় শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতার ফাইনালে। প্রথম ছয়বার ফাইনালে উঠে তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে দলটি। ইতালিয়ান শহর মিলানের এই ক্লাবটি সর্বশেষ ট্রফি জিতেছিল ২০০৯-১০ মৌসুমে।

অন্যদিকে পিএসজি ফাইনালে উঠেছে ফেবারিট আর্সেনালকে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ গোলে হারিয়ে। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে প্যারিসের দলটি। ২০২০ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠে জার্মানির বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ১-০ গোলে হেরে রানার্সআপ হয় পিএসজি।

ফাইনালের ভেন্যুর যত কথা

জার্মান পরাশক্তি বায়ার্ন মিউনিখের হোম ভেন্যু আলিয়াঞ্জ অ্যারেনা দ্বিতীয়বার আয়োজন করতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল। ২০১২ সালে এই মাঠে হওয়া প্রথম ফাইনালে বায়ার্নকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইংলিশ ক্লাব চেলসি।
মিউনিখে অবশ্য আরও দুবার চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল হয়েছে।

১৯৯৩ ও ১৯৯৭ সালে সেই দুই ফাইনালের ভেন্যু ছিল অলিম্পিক স্টেডিয়াম। বায়ার্নের সাবেক ‘হোমে’ ১৯৯৩ সালে ইতালির এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্সের মার্শেই। ১৯৯৭ সালে ইতালির জুভেন্টাসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মান ক্লাব বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।

কোথায়, কীভাবে দেখবেন

বাংলাদেশ থেকে খেলা দেখা যাবে সনি স্পোর্টস টেন ১ চ্যানেলে। এ ছাড়া সাবস্ক্রাইব করে সনি লাইভ অ্যাপ বা ওয়েবসাইটেও দেখা যাবে ফাইনাল। তবে স্পোর্টসজেডএক্স অ্যাপ ডাউনলোড করেও দেখা যাবে ফাইনাল ম্যাচটি।

চ্যাম্পিয়ন দল কী পাবে

৭৩.

৫ সেন্টিমিটার উচ্চতার ও সাড়ে ৭ কেজি ওজনের ট্রফি তুলে দেওয়া হবে চ্যাম্পিয়নদের হাতে। এ ছাড়া চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ২ কোটি ৫০ লাখ ইউরো বা ৩৪৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার। বিপরীতে রানার্সআপ দল পাবে ১ কোটি ৮৫ লাখ ইউরো বা ২৫৫ কোটি টাকার অর্থ পুরস্কার।

রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন কে

চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল পরিচালনার গুরুদায়িত্ব থাকবে রোমানিয়ার ৪০ বছর বয়সী রেফারি ইস্তভান কোভাচের কাঁধে।

ফাইনালে ফুটবল ছাড়া আর কী থাকছে

‘ইন দ্য এন্ড’খ্যাত জনপ্রিয় রক ব্যান্ড লিনকিন পার্ক ফাইনালের আগে মঞ্চ মাতাবে। কিক অব শোর দায়িত্বে আছে পেপসি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ র ফ ইন ল ফ ইন ল র ম উন খ প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

ছবিতে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়

মিউনিখের ফাইনাল নিয়ে ছিল অনেক জল্পনা-কল্পনা। প্রত্যাশা ছিল হাড্ডাহাড্ডি এক লড়াইয়ের। কিন্তু বাস্তবে দৃশ্যপট হলো একেবারে ভিন্ন। ফাইনালকে একতরফা করে তুলল প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি)। শনিবার রাতে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্ব ছিনিয়ে নিল ফরাসি ক্লাবটি।

এই জয়ের মাধ্যমে ইতিহাস গড়ল পিএসজি—এক মৌসুমে জিতল তিনটি বড় শিরোপা। এর আগে তারা ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ান এবং ফ্রেঞ্চ কাপের ট্রফিও ঘরে তুলেছিল। ইউরোপ সেরা হয়ে সেই সাফল্যে যোগ হলো আরেকটি মুকুট, পূর্ণ হলো ঐতিহাসিক ট্রেবল।


পিএসজি সেই ৯ ক্লাবের একটি, যারা কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ এক মৌসুমে তিনটি শিরোপা বা ট্রেবল জিতেছে।

 

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও আগের ইউরোপিয়ান কাপ জিতেছে এ পর্যন্ত মোট ২৩ ক্লাব। পিএসজি সেই তালিকায় সর্বশেষ ২৪তম সংযোজন।

ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জয়ের ২৯ বছরের অপেক্ষা ফুরাল পিএসজির। সর্বশেষ ১৯৯৬ সালে উয়েফা কাপ জিতেছিল তারা।

ফ্রান্সের দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছে পিএসজি। সর্বশেষ ১৯৯৩ সালে ইউরোপিয়ান কাপ জিতেছিল ফরাসি ক্লাব অলিম্পিক মাঁশেই। ৩২ বছর পর ফ্রান্সের দ্বিতীয় ক্লাব হিসেবে ফের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতল পিএসজি। এ ছাড়া পেপ গার্দিওলার পর দ্বিতীয় কোনো কোচ হিসেবে দুইবার ট্রেবল জয়ের রেকর্ড গড়েছেন পিএসজির স্প্যানিশ কোচ লুই এনরিকে। এবং সেই ছয় ভাগ্যবান কোচের তালিকায় নিজেকে নিয়ে গেছেন, যারা কিনা ভিন্ন ভিন্ন ক্লাবের হয়ে অন্তত দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন।

ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনালে সর্বকনিষ্ঠ (১৯ বছর ৩৬২ দিন) হিসেবে দেজিরে দুয়ে দুটি গোল করেছেন। এ ছাড়া দুয়ে ফরাসি ফুটবলারদের মধ্যে প্রথম, যিনি কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে জোড়া গোল করেছেন। এ ছাড়া দুয়ে ও সেনি মায়ুলু প্রথম দুই কিশোর, যারা কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে কোনো দলের হয়ে একাধিক গোল করেছেন। এ ছাড়া আশরাফ হাকিমিও প্রথম সেই খেলোয়াড়, যিনি কিনা এই আসরের ফাইনালে তাঁর কোনো সাবেক ক্লাবের বিপক্ষে গোল করেছেন।

গত পঁচিশ বছরের মধ্যে ইন্টার মিলানের সবচেয়ে বড় হার (৫-০ গোলে)। এর আগে ২০০১ সালে এসি মিলানের কাছে তারা ৬-০ গোলে হেরেছিল।

মিউনিখে এ পর্যন্ত যে পাঁচটি ইউরোপিয়ান কাপ ফাইনাল হয়েছে, তার সবকটিতেই নতুন চ্যাম্পিয়ন দল উপহার পেয়েছে। এর আগে ২০১২ সালে চেলসি, ১৯৯৭ সালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, ১৯৯৩ সালে মাঁর্শেই এবং ১৯৭৯ সালে নটিংহ্যাম ফরেস্ট চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল জার্মানির এই শহর থেকেই।

ফাইনালে খেলা পিএসজির শুরুর একাদশে যারা খেলেছেন, তাদের মূল্য ৪১৭.৩ মিলিয়ন ইউরো। সেখানে ইন্টার মিলানের ছিল ১৪৯.২৫ মিলিয়ন। ব্যবধান ৩২২.০৫ মিলিয়ন ইউরো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছবিতে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়