প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ আজ সোমবার শুরু হচ্ছে। বিকেল ৪টায় কমিশন সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এই বৈঠক হবে। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ ৩১ দল এবং জোটের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। 

নির্বাচনের রোডম্যাপের দাবিতে সোচ্চার বিএনপির সঙ্গে সরকারের দূরত্ব সৃষ্টি হলেও দলটি আজকের সংলাপে অংশ নেবে। জামায়াতের নায়েবে আমির ডা.

সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহামম্মদ তাহেরও সমকালকে জানিয়েছেন, সংলাপে অংশ নেবেন তারা।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ছয় মাস মেয়াদি ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ধাপের সংলাপের সূচনা করেন প্রধান উপদেষ্টা। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন এবং দুদক সংস্কার কমিশনের ১৬৬ সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল এবং জোটের কাছে মতামত চাওয়া হয়। মতামত দেওয়া ৩৩ দল এবং জোটের সঙ্গে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে ৪৫টি বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন।

গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই সংলাপের মধ্যে দিয়ে সরকার জুলাই সনদ ঘোষণার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হতে পারবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ হবে। সোমবার ছাড়াও ঈদের আগে-পরে আরও দু্ই একটি সংলাপ হবে। 

প্রথম ধাপের সংলাপে অধিকাংশ দল আনুপাতিক পদ্ধতি উচ্চকক্ষ গঠন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা কমাতে জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ এবং প্রধানমন্ত্রীর পদ দুইবারে সীমাবদ্ধ করার সুপারিশে একমত হলেও বিএনপিসহ কয়েক দল রাজি হয়নি। এই সুপারিশগুলোকেই মৌলিক সংস্কার বলছে ঐকমত্য কমিশন। 

দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের মতভিন্নতা কমিয়ে এনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য সৃষ্টি করে জুলাইয়ের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ সই করার কথা বলছে কমিশন। এই সনদে বলা থাকবে কী কী সংস্কার কীভাবে হবে। তবে বিএনপি চায় পরবর্তী সংসদে সংস্কার হোক। জামায়াতে ইসলামীর মতামত, গণভোটের মাধ্যমে সংলাপ হবে। শেখ হাসিনার পতন ঘটানো অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের গঠিত দল এনসিপি চায়, গণপরিষদের মাধ্যমে সংস্কার হোক।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চায় বাসদ

ডিসেম্বরের আগেই জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে বলে বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ জানিয়েছেন।

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বজলুর রশীদ ফিরোজ। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একটি আরেকটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুন কেন, এমন প্রশ্ন তুলে বাসদের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে, জুলাই মাসের মধ্যেই তারা প্রস্তুত। আমরা বলেছি, ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনের তারিখ দিয়ে সংস্কার প্রস্তাবকে এগিয়ে নিতে হবে এবং বিচারকে দৃশ্যমান করতে হবে।’

বৈঠকের আলোচনা নিয়ে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘আমরা বলেছি যে প্রধান উপদেষ্টা জাপান গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছে, সেটা একটি পার্টিকে ব্লেম করা হয়েছে। বন্দর ও মানবিক করিডর দেওয়ার যে চক্রান্ত, সেগুলো বন্ধ করতে হবে। এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়। আমরা বলেছি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের বক্তব্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষ সেটা প্রমাণ করতে হবে।’

এ ছাড়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রথম পর্যায়ের আলোচনায় কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছে বাসদ। বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, ‘তিন মাস ধরে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, সেই তিন মাসের আলোচনার সারসংক্ষেপ কী? কোন কোন বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো জাতির সামনে পরিষ্কার করতে হবে। আমাদের কাছে পরিষ্কার করতে হবে, সেগুলো বাস্তবায়নের কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ চায় বাংলাদেশ জাসদ

বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি বলেন, ‘সংস্কারের আলোচনাকে যদি আমাদের অর্থবহ করতে হয়, তাহলে সর্বাগ্রে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করতে হবে, সম্ভব হলে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যায়।’

এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদকে তার নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে উল্লেখ করে বাংলাদেশ জাসদের এই নেতা বলেন, ‘প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে মাঠপর্যায়ে যারা নির্বাচনের ডিউটি করবে, তাদেরও নিরপেক্ষতা প্রমাণ করতে হবে। যদি সংস্কারের আলোচনা করতে হয়, তাহলে সন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে এবং বিদেশের সঙ্গে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ চুক্তি করা যাবে না। এগুলো যদি আমরা নিশ্চয়তা পাই, তাহলে সংস্কারের আলোচনা সফল হতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫০ ভাগ সংসদীয় কমিটির সভাপতি বিরোধী দল থেকে চায় জামায়াত
  • শতাধিক সংস্কার প্রস্তাব চিহ্নিত করে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে: আইন উপদেষ্টা
  • নির্বাচনে সব দল থেকে ২০ শতাংশ নারী প্রার্থী রাখার প্রস্তাব গণসংহতি আন্দোলনের
  • বিএনপি, এনসিপিসহ কয়েকটি দল সরকারের স্থায়িত্বের জন্য আস্থা ভোটের পক্ষে
  • সরকারের স্থায়িত্বের জন্য আস্থা ভোটের পক্ষে বিএনপি, এনসিপিসহ কয়েকটি দল
  • আজও ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা
  • সংস্কারের বৈঠকেও নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা
  • ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপিসহ অনেক দল
  • ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াত
  • ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন চায় বাসদ