ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বলেন, বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ও অন্যান্য অনুপ্রবেশকারীদের আশ্রয় দিয়ে ওই ভোটেই তার ভাইপোকে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।

রবিবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত বিজেপির সাংগঠনিক সভায় যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন। 

সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে বলেন, “মমতা বাংলাদেশিদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছেন। অবাধে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক। একমাত্র বিজেপিই এই অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারে।”

অমিত শাহ আরও বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে বেড়া নির্মাণের জন্য জমি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে অনুপ্রবেশকে উৎসাহিত করছেন, যাতে তার ভোট ব্যাংক বজায় থাকে এবং তার ভাইপো ভবিষ্যতে মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন হতে পারেন। কিন্তু জনগণ তা হতে দেবে না।”

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আপনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সময় এখন শেষ। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন করবে। এই নির্বাচন কেবলমাত্র রাজ্যের নির্বাচন নয়, এটি দেশের সুরক্ষার নির্বাচন।”

শাহ তার বক্তৃতায় তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণ, দুর্নীতি, এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অভিযোগ এনে বলেন, মমতা বাংলার মাটি, মা ও মানুষের নামে রাজনীতি শুরু করলেও বর্তমানে রাজ্যটি অনুপ্রবেশ, মহিলাদের উপর অত্যাচার, বোমা বিস্ফোরণ এবং হিন্দুদের উপর আক্রমণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে শত শত বিজেপি কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি রিগিংয়ের মাধ্যমে ভোটে জেতেন। রিগিং ছাড়া ভোট হলে তৃণমূল শুধু হারবেই না, বরং মুখ্যমন্ত্রীর জামানতও জব্দ হয়ে যাবে।

অমিত শাহ তার বক্তৃতায় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর প্রসঙ্গ টেনে মমতার বিরুদ্ধে হিন্দু নারীদের ভাবাবেগের অবমাননার অভিযোগ তোলেন। তার কথায়, “মুসলিমদের খুশি করতেই দিদি অপারেশন সিঁদুরের বিরোধিতা করেছেন। বাংলার মাতৃশক্তির কাছে আমার আবেদন, ২০২৬ সালের নির্বাচনে এর উপযুক্ত জবাব দিন।”

বিজেপির এই সভাকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে এই সভা থেকেই কার্যত ২০২৬ সালের নির্বাচনের রণকৌশল নির্ধারণ করে ফেলেছেন অমিত শাহ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বন দ য প ধ য য ম খ যমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা

জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।

হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—

১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

আবেদনে যোগ্যতার শর্ত

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—

—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।

—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা

—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।

—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।

—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।

—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।

বৃত্তির সুবিধা

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:

১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।

২। মাসিক ভাতা।

—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।

—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।

—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।

—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।

—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।

—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেন্ট যোসেফের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি, নিয়ম প্রকাশ
  • জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা