সড়ক, ট্রেনে ভিড় থাকলেও লঞ্চে যাত্রী কম
Published: 3rd, June 2025 GMT
স্বজনের সঙ্গে ঈদ উদযাপনে রাজধানী ছাড়ছে মানুষ। লম্বা ছুটি থাকায় এবারের ঈদযাত্রায় ভোগান্তি কম। যথাসময়ে ছাড়ছে রেল ও সড়কপথের গণপরিবহন। এসব গণপরিবহনে যাত্রীর সংকট না দেখা গেলেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। লঞ্চে মানুষের ভিড় ছিল কম। আগাম টিকিটেও নেই প্রত্যাশিত সাড়া। অধিকাংশ কেবিনের টিকিটও বিক্রি হয়নি।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গতকাল সোমবার ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যথাসময়ে ছেড়ে গেছে ট্রেন। সকাল থেকেই যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন। এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরাও। তারা বলছেন, এবার স্টেশনে প্রবেশপথে কয়েক দফা চেকিং হয়েছে। ফলে টিকিটবিহীন কেউ ঢুকতে পারছে না। এ ছাড়া সময়মতো ট্রেন ছাড়ায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে না, পোহাতে হচ্ছে না ভোগান্তিও।
এদিকে রাজধানীবাসীর ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বাড়তি সতর্কতাসহ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। টিকিটবিহীন কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না রেলস্টেশনে। এ বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সাজেদুল ইসলাম বলেন, বিনা টিকিটের যাত্রী প্রতিরোধ এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে ব্যাপকভাবে চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। হকার ও ভবঘুরেদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে বিশেষ একটি টিম কাজ করছে।
এ ছাড়া বাস টার্মিনালগুলোতেও যাত্রীর চাপ কম। এতে করে স্বস্তিতে বাড়ি ফিরছে রাজধানীবাসী। ঈদের দুই দিন আগে যাত্রীর চাপ বাড়বে বলে মনে করছেন পরিবহনসংশ্লিষ্টরা। যাত্রীরা বলছেন, এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ভোগান্তির শিকার হননি তারা। বেশি ভাড়াও আদায় করা হচ্ছে না।
ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে। নাড়ির টানে ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। আগাম টিকিট বিক্রিতেও নেই প্রত্যাশিত সাড়া। লঞ্চগুলোর অন্তত ৭০ শতাংশ কেবিনের টিকিট বিক্রি হয়নি। সব মিলিয়ে টার্মিনালে যেন ঈদের ব্যস্ততা এখনও ধরা দেয়নি। সদরঘাট থেকে সবচেয়ে বেশি যাত্রী যায় বরিশাল রুটে। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে যাত্রা অনেক সহজ হয়েছে। ফলে নৌপথে যাত্রী সংখ্যা অনেক কমে গেছে।
ঈদের ১৫ দিন আগে থেকেই লঞ্চের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির কেবিনের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এবার বেশির ভাগ লঞ্চেই সেই চিরচেনা চিত্র অনুপস্থিত। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈরী আবহাওয়াই এর অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে আজ থেকে দক্ষিণাঞ্চলের ৪১টি রুটে বিশেষ লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে, যা চলবে ১০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু যাত্রী সেভাবে না থাকায় সংশ্লিষ্টরা উদ্বিগ্ন।
লঞ্চ মালিকরা জানিয়েছেন, ৩০ শতাংশ কেবিনের টিকিটও বিক্রি হয়নি। আগে এই সময় কেবিন পাওয়া যেত না। এবার লোকজন আসছেই না। পদ্মা সেতুর পর আমরা এখন ভাগ্যের ওপর নির্ভর করি। আবহাওয়া খারাপ, রাজনৈতিক পরিস্থিতিও ভালো নয়। এ জন্য অনেকে গ্রামে যেতে চাচ্ছেন না।
পারাবত লঞ্চের মালিক মোহাম্মদ হাবিব বলেন, সাধারণত ঈদের আগের দু’দিন যাত্রীর চাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। গার্মেন্ট ছুটি শুরু হলে শেষ মুহূর্তে কিছু যাত্রী বাড়তে পারে।
.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার
দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।
বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।
বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট
সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন
বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।
এজন্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।
আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’
এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।
তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।
আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।
মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।
ঢাকা/ইয়াসিন