সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বৃষ্টি কিছুটা কমলেও সীমান্তের ওপারে ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢল থামেনি। ফলে নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের অনেক গ্রাম ও রাস্তা এখনো প্লাবিত রয়েছে। গতকাল সোমবার জকিগঞ্জ উপজেলা সদরের বাজার প্লাবিত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোরে পানি পুরোপুরি নেমে গেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে এবং কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে আগের দিনের মতো পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৬৯ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৯৪ মিটার ওপরে। অমলশিদ পয়েন্টে ১৭ দশমিক ৩৬ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৯৬ মিটার ওপরে। শেওলা পয়েন্টে ১৩ দশমিক ৫২ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৪৭ মিটার ওপরে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯ দশমিক ৯৮ মিটারে অবস্থান করছিল, যা বিপৎসীমার শূন্য দশমিক ৫৩ মিটার ওপরে। এ চারটি পয়েন্টেই গতকালের চেয়ে পানি বেড়েছে।

সুরমা ও কুশিয়ারা নদী ছাড়াও জেলার ধলাই, লোভা, সারি ও ডাউকি নদ-নদের পানি বেড়েছে। কেবল সারি-গোয়াইন নদের পানি গতকালের চেয়ে আজ কিছুটা কমেছে।

স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকার বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, জেলার গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও ওসমানীনগর উপজেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছেই। জকিগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর একাধিক স্থানে বাঁধ ভেঙে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। অনেক বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। এ ছাড়া বেশ কিছু গ্রামীণ রাস্তা তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় অনেকেই পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এতে বন্যাকবলিত মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছেন।

জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ঠিক কতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, কত মানুষ পানিবন্দী আছেন, তা এখনো নির্ধারণ করা যায়নি। তবে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে দুটি পরিবারের মোট ৯ জন ঠাঁই নিয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনজকিগঞ্জে কুশিয়ারার তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে পা‌নি ঢুকছে লোকালয়ে২২ ঘণ্টা আগে

এদিকে সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটে ২৬ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেটে বৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে এলেও ভারত থেকে সীমান্তবর্তী নদ-নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢল আসা অব্যাহত আছে। এতে বৃষ্টি কমলেও পানি বাড়ছে। তবে ভারতেও বৃষ্টি কমে আসছে। এ ছাড়া ভাটিতেও পানি দ্রুত গতিতে চলে যাচ্ছে। তাই নতুন করে বৃষ্টি না হলে দু-এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আমরা ধারণা করছি।’

আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল, কম বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তি০২ জুন ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ ন করছ ল নদ নদ র প ন প ল ব ত হয় ব পৎস ম র ম ট র ওপর গতক ল দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ