ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত
Published: 3rd, June 2025 GMT
ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিনো পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা বিষয়ক সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলোসহ অন্যান্য দেশের এ সংক্রান্ত আইন বা আইনের সমকক্ষ ডকুমেন্ট বিবেচনায় এবং বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে সমাদৃত হয় এ রকম একটি আইনের রূপকল্প নিয়ে ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এর খসড়া প্রস্তুত করা হয়ছে। যে কোনো নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত তার সম্পদ। রাষ্ট্র এর সুরক্ষা দিতে দায়বদ্ধ। বর্তমান সময়ে ব্যক্তিগত সকল তথ্যই বিশ্বব্যপী বিভিন্নভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং নাগরিকদের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলঅ হয়েছে, নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তা, সুরক্ষা এবং তা আইনানুগ পদ্ধতিতে সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ব্যবহার দেশে কিংবা দেশের বাইরে উপাত্তধারীর সম্মতি সাপেক্ষে হওয়া উচিত। বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হলেও তার গোপনীয়তা, সুরক্ষা ও আইনানুগ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ এবং প্রয়োজনে স্থানান্তরের ক্ষেত্রে কোনো আইন প্রণীত হয়নি। সে কারণেই জনসাধারণের তথ্য সরকারি, বেসরকারি বা অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠান ইচ্ছেমতো সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও স্থানান্তর করে আসছে। এ কারণে অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিতভাবে তথ্য সংগ্রহ ও আদান প্রদানের ক্ষেত্রে দেশের জনসাধারণ তাদের তথ্যের আইনী অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের মেয়াদে খসড়ায় এ সংক্রান্ত উত্তম চর্চার প্রতিফলন ঘটিয়ে একটি ব্যবসাবান্ধব আইন প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়িক সংগঠন, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তথ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহারকারী সংগঠনগুলো, মিডিয়া এবং সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতামত গ্রহণের জন্য অধ্যাদেশের খসড়া কপি একাধিকবার অনলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে। একইভাবে স্টেকহোল্ডারদের উপস্থিতিতে একাধিক সভা আয়োজন করে মতামত নেওয়া হয়েছে। প্রাপ্ত মতামত যাচাই-বাছাই করে খসড়াটি সংযোজন বিয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স রক ষ স রক ষ উপ ত ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাদেশের কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে: আইন উপদেষ্টা
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এ বিষয়ে কর্মচারীদের আপত্তিগুলো শোনা ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার লক্ষ্যে উপদেষ্টা পর্যায়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’-কে ‘কালো আইন’ আখ্যায়িত করে এটি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সচিবালয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। ঈদের পর প্রয়োজন হলে আন্দোলন কর্মসূচি ডিসি অফিস, বিভাগীয় অফিসসহ সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মচারী নেতারা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
ওই স্মারকলিপি পাওয়ার পর আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, এই অধ্যাদেশের ব্যাপারে তাঁদের (কর্মচারীদের) অনেক আপত্তি আছে। তাঁদের আপত্তিগুলো শোনার পূর্ণ মানসিকতা সরকারের রয়েছে। তিনি (আইন উপদেষ্টা) যত দূর জানেন, এ বিষয়ে উপদেষ্টা পর্যায়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে। কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হবে আপত্তিগুলো ভালো করে শোনা ও বিবেচনা করা এবং সুপারিশ করা। কমিটি প্রস্তাব দেবে। অধ্যাদেশটি উপদেষ্টা পরিষদে পাস হয়েছে, তাই উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপিত হবে।
আরও পড়ুন‘এমন কর্মসূচি দেব, কল্পনা করতে পারবেন না’৬ ঘণ্টা আগেএক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এমনি আপাতদৃষ্টিতে মনে হয়েছে কিছু ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগের সুযোগ রয়েছে। অপপ্রয়োগের সুযোগ থাকা কখনো প্রত্যাশিত ব্যাপার হতে পারে না। ভালো করে শোনা ও বোঝার জন্যই কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
এর আগে গত রোববার অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন কর্মচারীরা। সেদিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি অধ্যাদেশটি দেখেছি। উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজনের নজরে এই জিনিসটা এনেছি। এখানে কিছু প্রভিশন আছে, যেগুলো অপপ্রয়োগের সম্ভাবনা আছে।’
অধ্যাদেশটি বাতিলের দাবি জানিয়ে খাদ্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের কাছেও স্মারকলিপি দিয়েছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিলের দাবিতে ১০ দিনের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন সচিবালয়ে কর্মরত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীরা। আন্দোলন চলার মধ্যেই অধ্যাদেশটি জারি করে সরকার। এর পর থেকে বিক্ষোভ, কর্মবিরতি ও স্মারকলিপি দেওয়ার মতো কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারী কর্মচারীরা।
আরও পড়ুনঅধ্যাদেশের কিছু বিধানের অপপ্রয়োগের আশঙ্কা রয়েছে: উপদেষ্টা ফাওজুল০১ জুন ২০২৫