কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিচালিত সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ ও আন্তর্জাতিক এনজিও সেভ দ্যা চিলড্রেন।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার বরাবর পাঠানো এক যৌথ চিঠিতে এ ঘোষণা দেয় সংস্থা দুইটি। 

চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ইউনিসেফ কক্সবাজার ফিল্ড অফিসের প্রধান এঞ্জেলা কার্নে এবং সেভ দ্যা চিলড্রেন- এর প্রতিনিধি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা।

আরো পড়ুন:

খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি দখল করে নেওয়ার অভিযোগ  

খুবির ক্যাফেটেরিয়া: ভাব-আবেগে মেশানো বন্ধুত্বের গল্প

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‍“উখিয়ায় চলমান অস্থির পরিস্থিতির কারণে ক্যাম্পভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রাখা হলো।”

এর আগে গত ২ জুন সংবাদ ব্রিফিংয়ে ইউনিসেফ জানায়, তহবিল সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু শিক্ষার ঝুঁকিতে রয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে তারা স্থানীয় শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকদের পর্যায়ক্রমে চাকরিচ্যুত করতে বাধ্য হচ্ছে।

১২৫০ জন শিক্ষক ছাঁটাই, সড়ক অবরোধ:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা নিয়ে কাজ করা এনজিওগুলো একযোগে ১২৫০ জন স্থানীয় শিক্ষককে ছাঁটাই করেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকালে উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন কোটবাজার ও হোয়াইক্যং এলাকায় চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক অবরোধ করেন। সড়ক অবরোধে যানচলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং যাত্রীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

দুপুরে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীর আশ্বাসে বিক্ষোভ স্থগিত করেন শিক্ষকরা। 

ইউএনও কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) সঙ্গে কথা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শিক্ষা-সংক্রান্ত সব প্রকল্পের কার্যক্রম বুধবার (৪ জুন) থেকে স্থগিত থাকবে। যতদিন পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্থানীয় শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহাল না হবে, ততদিন শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।” 

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, “ইউনিসেফ ও সংশ্লিষ্ট এনজিওগুলো একযোগে ১২৫০ জন স্থানীয় শিক্ষককে ছাঁটাই করেছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি এবং শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহালের বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।”

অভিযোগ ও ক্ষোভ:
আন্দোলনকারী শিক্ষক জসিম উদ্দিন বলেন, “আমরা বহু বছর ধরে রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষাদানে কাজ করেছি। অথচ এখন আমাদের বাদ দিয়ে রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের শিক্ষক হিসেবে বহাল রাখা হয়েছে।”

আরেক শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, “চাকরি ফেরতের দাবিতে বহুবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তারা অর্থসংকটের অজুহাত দেখিয়ে কিছুই করছেন না।”

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন স ফ

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ