সিদ্ধিরগঞ্জে বন্ধ একটি দোকান ঘরের ভেতর ঘর থেকে  হাত-পা বাঁধা অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে  সিদ্ধিরগঞ্জের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াপাড়া দক্ষিন কদমতলী অনাবিল ব্রিজ সংলগ্ন ভান্ডারির পুল খালপাড় এলাকার ফখরুল ইসলামের মালিকানাধীন দোকান ঘর থেকে এই লাশ উদ্ধার করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কয়েকদিন আগে দোকানটি ভাড়া নেয় এক ব্যক্তি। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দোকান ঘরের ভেতর থেকে দুর্গন্ধ ও রক্ত বের হতে দেখে তারা সন্দেহ করেন। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দিলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং লাশটি উদ্ধার করে। লাশের পা দড়ি দিয়ে বাঁধা এবং কাপড় দিয়ে মুখ বাঁধা। 

কালো ক্যামিকেল যুক্ত কিছু দিয়ে মুখ বিকৃতি করে দেয়া হয়েছে। লাশের কমর থেকে নিচের দিকে কোন কাপড় নেই। দেখে মনে হচ্ছে দীর্ঘ সময় ধরে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। 

দোকান মালিক ইসলাম জানান, গত ১ জুন তিনি এক ব্যক্তিকে দোকানটি ভাড়া দেন। তবে কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) কিংবা ছবি সংগ্রহ করেননি। ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে কেবল একটি মোবাইল নম্বর রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমার ধারণাও নেই লোকটা কে ছিল, কী করত। চুক্তিপত্রে শুধু নাম্বার ছিল।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনুর আলম বলেন, দোকান ঘর থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে—জড়িতদের দ্রুতই শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

পুলিশ জানিয়েছে, দোকানটি সিলগালা করা হয়েছে এবং পাশ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এলাকাবাসী জানায়, ঘটনাস্থলের অদুরে কদমতলী দক্ষিপাড়া এলাকায় গত ২৩ মে রাতে একটি অফিসের ভেতর মো.

আব্দুল্লাহ খাঁন রায়হান (১৪) নামে এক কিশোরকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে কিশোরগ্যাং সন্ত্রাসীরা।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ দ ক ন ঘর

এছাড়াও পড়ুন:

অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ক্রেতা

রংপুরের জিপিআই পণ্য ‘হাঁড়িভাঙা’ আম। দেশজুড়ে এর সুখ্যাতি। প্রতি বছর জুনের মাঝামাঝি বাজারে আসে হাঁড়িভাঙা। তখনই সম্পূর্ণ পরিপক্ব হয়। এবার নির্ধারিত সময়ের আগেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা। কৃত্রিমভাবে এসব আম পাকিয়ে বাজারজাত করায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন ক্রেতারা। 

হাঁড়িভাঙা আমের উৎপাদন এলাকা মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ও ময়েনপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, হাঁড়িভাঙা আম বাজারজাত করা হচ্ছে। স্থানীয় বাজারে বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে প্লাস্টিকের ক্যারেটে ভরা হচ্ছে। পরে সেগুলো ট্রাকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। 

গত মঙ্গলবার রাতে ময়েনপুর ইউনিয়নের কদমতলা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিপুল পরিমাণ হাঁড়িভাঙা আম স্তূপ করে রাখা হয়েছে। পাশেই সড়কে দাঁড়ানো একটি ট্রাক। ক্যারেটে ভরা হচ্ছে আম। সেগুলো ট্রাকে লোড করা হচ্ছে। দেখা গেল একটি প্লাস্টিকের বোতলে পানি সদৃশ্য কিছু আমের ওপর স্প্রে করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানালেন, হাঁড়িভাঙা আমে এখনও পরিপক্বতা আসেনি। তাই ফরমালিন স্প্রে করা হচ্ছে।

কদমতলা বাজারে যেখানে আম ট্রাকে লোড করা হচ্ছে, তার আশপাশে অনেক মানুষের জটলা। স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, এখনও আম পরিপক্ব হয়নি। তার পরও অসাধু ব্যবসায়ীরা বাড়তি লাভের আশায় বাগান থেকে আম পেড়ে বিভিন্ন এলাকায় পাঠাচ্ছেন।

শফিউল ইসলাম নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, আম পাকাতে বিষ (ফরমালিন) মেশানো হচ্ছে। এটা একটা ভয়ংকর ব্যাপার।

পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্য, বাগানে আম পুরাট (পরিপক্ব) হয়েছে।  বাগান মালিকরা তাঁকে ডেকে আম বিক্রির কথা বলেন। তাই তাদের কাছ থেকে তিনি আম কিনছেন।  

শুধু কদমতলা বাজারই নয়, হাঁড়িভাঙা আমের প্রধান উৎপাদন এলাকা খোড়াগাছ ইউনিয়নের পদাগঞ্জ বাজার, পাইকাড়ের হাটসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। সর্বত্রই আম বিক্রি করার ধুম চলছে। 

স্থানীয় বাগান মালিক আবু তাহের জানান, কিছু কিছু গাছে আম পাকা শুরু হয়েছে। তবে পাইকারিভাবে (গণহারে) আম পাড়া ঠিক হচ্ছে না। তিনি এখনও আম পাড়া শুরু করেননি। অনেকে টাকার লোভে অপরিপক্ব আম পেড়ে বিক্রি করছে, এটা ঠিক নয়। এতে হাঁড়িভাঙার সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে। 

এ ব্যাপারে মিঠাপুকুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল আবেদীন বলেন, প্রশাসন থেকে এখনও হাঁড়িভাঙা আম গাছ থেকে সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ হয়নি। তবে প্রতি বছর জুনের ১৫ থেকে ২০ তারিখে আম পাড়া হয়। এর আগে আম পাড়া ও বিক্রি করা অন্যায়। কোথাও আগে হাঁড়িভাঙা আম পাড়া হলে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুলতামিস বিল্লাহ সমকালকে বলেন, অপরিপক্ব আম পাড়া ও ফরমালিন মেশানোর ব্যাপারে কোনো অভিযোগ কেউ দেয়নি। কোথাও এটা করে থাকলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপরিপক্ব হাঁড়িভাঙা আম, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ক্রেতা
  • সিদ্ধিরগঞ্জে তালাবদ্ধ দোকানে হাত-পা বাঁধা মরদেহ
  • কদমতলীতে অধ্যাপক মামুন মাহমুদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ 
  • চাঁদপুর জেলা আ.লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন ঢাকায় গ্রেপ্তার
  • চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন ঢাকায় গ্রেপ্তার