টেলিযোগাযোগ খাতের নীতিমালা সংস্কারের খসড়ায় মোবাইল অপারেটরদের বিশেষ কোনো সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে মোবাইল অপারেটরগুলো দেশজুড়ে টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও প্রস্তাবিত সংস্কার নীতিতে তাদের কাজের পরিসরকে আরও সীমিত করা হয়েছে।

মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছে। এতে বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতি ২০২৫-এর প্রস্তাবিত খসড়া নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন মহলের প্রদত্ত মতামত গুরুত্ব দিয়ে তারা পর্যবেক্ষণ করেছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) আয়োজিত দুটি ভিন্ন কর্মশালায় বলা হয়, বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালার খসড়ায় শুধু মোবাইল অপারেটরদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট–বিষয়ক মতামত ও প্রস্তাবনা নীতিমালা আকারে সেখানে পেশ করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ খাতের সব নিয়ন্ত্রণ বহুজাতিক বা বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নীতিমালাটি তৈরি করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে অ্যামটব বলেছে, বর্তমান খসড়া সংস্কার নীতিতে মোবাইল অপারেটরদের এ ধরনের কোনো সুবিধা দেওয়া হয়নি।

সীমাবদ্ধ ব্যবসায়িক কাঠামোর ফলে গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে অ্যামটব বলেছে, ২০০৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসট্যান্স টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস পলিসির (আইএলডিটিএস) মতো অপ্রচলিত পুরোনো কিছু নীতিমালার কারণে নিয়ন্ত্রক ও অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এ খাতের সম্ভাবনা নিশ্চিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অ্যামটব আরও বলেছে, আইএলডিটিএস নীতিমালা টেলিযোগাযোগ খাতকে বিভক্ত করেছে এবং এর ফলে অনেক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান (আইজিডব্লিউ, আইআইজি, আইসিএক্স, এনটিটিএন ইত্যাদি) তৈরি হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি সুবিধা নিশ্চিতে তেমন কোনো অবদান রাখছে না। বরং এ প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উদ্ভাবন ব্যাহত হয়েছে।

সরকারের সংস্কারের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়ে অ্যামটব বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়ায় অপারেটরদের দীর্ঘমেয়াদি কিছু সমস্যার সমাধান হয়নি। সংস্কার প্রস্তাবনা অনুযায়ী লাইসেন্সিং কাঠামোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হলো ইন্টারন্যাশনাল কানেক্টিভিটি সার্ভিসেস, ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কানেক্টিভিটি সার্ভিসেস ও অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক সার্ভিসেস। এতে মোবাইল অপারেটরদের ফাইবার বসানো কিংবা নিজেদের টাওয়ার স্থাপনের স্বাধীনতা থাকছে না। যা আগে ছিল। তবে সরকারের এ উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

অ্যামটব বলছে, বিশ্বজুড়ে মোবাইল অপারেটরদের পুরো অবকাঠামো পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়, যাতে তাঁরা কম খরচে উন্নতমানের সেবা দিতে পারেন। কিন্তু বাংলাদেশে বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করায় খাতটির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং সাধারণ গ্রাহকও ভোগান্তিতে পড়েছেন এবং তাঁরা সর্বোত্তম সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার শুধু এ শিল্প খাতের জন্যই নয়, জাতীয় স্বার্থের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুসংগঠিত ও প্রতিযোগিতামূলক খাত দেশের ডিজিটাল অগ্রগতির ভিত্তি। এটি উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে ও ডিজিটাল সুশাসন নিশ্চিতে অবদান রাখবে এবং সার্বিকভাবে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আইজিডব্লিউ অপারেটর ও এনটিটিএনসহ সবাইকে একসঙ্গে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে অ্যামটব।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৪১১ রানের টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৯ রানে হারল জিম্বাবুয়ে

ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে মাত্র ১২৭ রানে অলআউট হয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আরও কম, ১২৫ রানে। কিন্তু রোববার (০২ নভেম্বর) তারা চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

আগে ব্যাট করে ৩ উইকেটে আফগানদের করা ২১০ রানের জবাবে জিম্বাবুয়ে ২০ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০১ রান করে হার মানে মাত্র ৯ রানে। দুই ইনিংসে রান হয়েছে মোট ৪১১টি। যা আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ।

আরো পড়ুন:

কেন বিপিএল থেকে বাদ পড়ল চিটাগং কিংস

ফাইনালে দ. আফ্রিকাকে ২৯৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

স্বাগতিকরা থেমে থেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও ব্রিয়ান বেনেট, সিকান্দার রাজা, রায়ান বার্ল ও তাশিনগা মুসেকিওয়ার ব্যাটে লড়াই করে শেষ বল পর্যন্ত। বেনেট ৩ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৪৭ রান। অধিনায়ক রাজা ৭টি চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫১ রান। বার্ল ১৫ বলে ৫ ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝড়ো ইনিংস। আর মুসেকিওয়া ২ চার ও ১ ছক্কায় করেন ২৮ রান।

বল হাতে আফগানিস্তানের আব্দুল্লাহ আহমদজাই ৪ ওভারে ৪২ রানে ৩টি উইকেট নেন। ফজল হক ফারুকি ৪ ওভারে ২৯ রানে ২টি ও ফরিদ আহমদ ৩ ওভারে ৩৮ রানে নেন ২টি উইকেট।

তার আগে উদ্বোধনী জুটিতে আফগানিস্তানের রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ১৫.৩ ওভারে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন। এই রানে গুরবাজ আউট হন ৪৮ বলে ৮টি চার ও ৫ ছক্কায় ৯২ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৮ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করেন তিনি। ১৬৩ রানের মাথায় ইব্রাহিম আউট হন ৭টি চারে ৬০ রান করে। এরপর সেদিকুল্লাহ অটল ১৫ বলে ২টি চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলে দলীয় সংগ্রহকে ২১০ পর্যন্ত নিয়ে যান।

বল হাতে জিম্বাবুয়ের ব্রাড ইভান্স ৪ ওভারে ৩৩ রানে ২টি উইকেট নেন। অপর উইকেটটি নেন রিচার্ড এনগ্রাভা।

৯২ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন গুরবাজ। আর মোট ১৬৯ রান করে সিরিজ সেরা হন ইব্রাহিম জাদরান।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ