কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় পৃথক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের দুই আরোহীসহ অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এ দুটি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও তিনজন।

নিহতরা হলেন পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের চরটেকি গ্রামের দুলাল মিয়া (৪৫), একই ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামের শাহাব উদ্দিন (৫৫) ও ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা গ্রামের প্রয়াত আনোয়ার হোসেনের ছেলে সারোয়ার হোসেন (১৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার চণ্ডীপাশা ইউনিয়নের কোদালিয়া চৌরাস্তা এলাকায় এক দুর্ঘটনায় দুলাল মিয়া ও শাহাব উদ্দিন মারা যান। এ ঘটনায় একই ইউনিয়নের চরটেকি গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সাব্বির মিয়া (২৫) গুরুতর আহত হন। তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জগামী একটি বাসের পেছনে একটি মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ পেছন দিক থেকে আসা একটি মাইক্রোবাস সজোরে ধাক্কা দিলে মোটরসাইকেল আরোহী তিনজন গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক হেলিশ রঞ্জন সরকার জানান, গুরুতর আহত দুলাল মিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। শাহাব উদ্দিনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলেও তাঁর স্বজনেরা তাঁকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে। আহত সাব্বিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

অপরদিকে জেলার পাকুন্দিয়ায় বাসচাপায় সারোয়ার হোসেন নামের একজন নিহত ও দুজন আহত হয়েছেন। আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে কিশোরগঞ্জ-গাজীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাকুন্দিয়া উপজেলার মরুড়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।

এ ঘটনায় আহতরা হলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা গ্রামের মালেক মিয়ার ছেলে আশ্রফ আলী (২০) ও মারুফ রহমানের মেয়ে জেবিন আক্তার (১৮)।

স্থানীয় লোকজন জানান, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ঢাকা থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। সকাল সাড়ে আটটার দিকে পাকুন্দিয়ার মরুড়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাস অটোরিকশাটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী সারোয়ার হোসেন নিহত ও দুজন আহত হন। দুর্ঘটনায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন দুই দুর্ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ দ র ঘটন য় উপজ ল র ন ন হত

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ