ঈদের দিন দুপুর থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, সায়েন্সল্যাব, গুলশান-২ ও পুরান ঢাকার পোস্তা এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ শুরু করেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। প্রতিবারের মতো এবারও প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে হতাশ তারা। অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা মতো চামড়া দাম পাচ্ছি না।  গরুর চামড়া মানভেদে ৬০০-৭৫০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া কিনতে আগ্রহ নেই।

শনিবার বিকেলে গুলশান-২ মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন এতিমখানার লোকজন ভ্যানে চামড়া এনে জড়ো করছে। চাহিদা মতো দাম না পাওয়া বিক্রি করছেন না তারা।

২০টি চামড়া বেচতে আসা কবির বলেন, একটি বড় গরুর চামড়া কিনে এনেছি ৮০০ টাকা দিয়ে। আর তারা বলছে ৭০০ টাকা। তাহলে কীভাবে বিক্রি করব।

সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ১৫টি কাঁচা চামড়া বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ী জাফর আহমেদ। তিনি বলেন, কোরবানিদাতাদের কাছ থেকে এসব চামড়া ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে কিনে এনেছি। কিন্তু কোনো আড়তদার বা ট্যানারি প্রতিষ্ঠান ৭৫০ টাকার ওপরে দাম দিতে চায় না। তাই বাধ্য হয়ে ৭৫০ টাকা দরেই সব চামড়া বিক্রি করেছি।

মোহাম্মদপুর টাউন হল এলাকায় থেকে চামড়া ক্রয় করেন মৌসুমি ব্যবসায়ী শেখ বাবুল। তিনি বলেন, বিকেল পর্যন্ত ৬০টির বেশি চামড়া কিনেছেন। প্রতিটি চামড়া গড়ে ৭০০ টাকা পড়েছে।

আরেক ব্যবসায়ী বাবু বলেন, এক হাজার চামড়া আছে। বিক্রি হয়নি। সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। গতবার তো ৯০০–১০০০ টাকা দিয়েছিল। এবার চরম ক্ষতিতে যাচ্ছি।

আড়তদার চামড়া সংগ্রহ করে লবণ মিশিয়ে তা সংরক্ষণ করেন। পরে লবণ মেশানো চামড়া যায় ট্যানারিতে। ট্যানারি ব্যবসায়ীরা এবার ঢাকায় লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় কিনবেন, গত বছর এই দাম ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। আর ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম হবে ৫৫ টাকা ৬০ টাকা গতবছর যা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ছিল।

এছাড়া সারাদেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২ থেকে ২৭ টাকা দরে বিক্রি হবে ট্যানারিতে, যা গত বছর ছিল ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা। আর বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুটের দাম ২০ থেকে ২২ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ ল আজহ ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

মণ নয়, আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে

রাজশাহী বিভাগে এখন থেকে মণ দরে আম কেনাবেচা করা যাবে না। শুক্রবার (৬ জুন) থেকে আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। 

রাজশাহী অঞ্চলে এক মণ আম কেনার সময় আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজি পর্যন্ত আম নিয়ে থাকেন। তবে চাষিদের ৪০ কেজি বা এক মণেরই দাম দেন। বিভিন্ন সময় এই ‘ঢলন’ প্রথা থামাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও কার্যকর হয়নি। তবে এবার কেজি হিসেবে আমের কেনাবেচা হলে ‘ঢলন’ নেয়া বন্ধ হবে বলে প্রশাসন মনে করছে।

এবার এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশে কেজি প্রতি দরে আম কেনাবেচা করার সাধারণ নির্দেশনা দেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয় কিন্তু কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।

আরো পড়ুন:

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পরিপক্ক হলেই আম পাড়া যাবে : ডিসি 

লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীদের বর্ণিল পিঠা উৎসব

বর্তমানে আমের বাজার জমজমাট। এখনো বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন পরিমাণে মণ দরে আম বিক্রি হচ্ছে। এ অবস্থায় সব জায়গায় একই ওজনে আম বিক্রি পদ্ধতি প্রচলনের জন্য বুধবার (৪ জুন) চাঁপাইনবাবগঞ্জের, শিবগঞ্জ ও কানসাটের আমচাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বিভাগীয় কমিশনারে কার্যালয়ে আসেন এবং বিষয়টি আলোচনা করেন। তারা সবাই বিভাগের সকল জেলায় যেন একই পদ্ধতিতে আম কেনাবেচা করা হয় তার পক্ষে সম্মিলিত উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৫ জুন) বিভাগের সকল জেলায়, বিশেষ করে নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সভা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ। 

বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ছে, রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় উৎপাদিত আমের চাহিদা সারা দেশে বিস্তৃত। এই অঞ্চলের আমের গুণগত মান উন্নত হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আম রপ্তানি হচ্ছে। কিন্তু আমের কেনাবেচার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে আম চাষিরা ওজন বা পরিমাপগত কিছু সমস্যায় আছেন। আম চাষিরা যখন আড়তে আম বিক্রি করতে যান, তখন আড়তদাররা ৪২ থেকে ৫৫ কেজিতে মণ ধরে আম কিনে থাকেন। আম যেহেতু পচনশীল পণ্য, সেহেতু কৃষকেরা এই পদ্ধতিতে আম বিক্রি করতে বাধ্য থাকেন। এতে কৃষকেরা প্রায়শই আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন বা হচ্ছেন।

এ জন্য অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত বিভিন্ন জেলার আম চাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা খোলামেলা আলোচনা করেন। কৃষকেরা একই ক্যারেটে বিভিন্ন সাইজের আম সাজিয়ে বিক্রি করে থাকেন বলে কেউ কেউ জানান। সভায় আম ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা একটি কমিশন ঠিক করার প্রস্তাব করেন। আলোচনায় বিভিন্নজন তাদের সুচিন্তিত মতামত দেন। তবে সকলে সম্মিলিতভাবে সর্বসম্মতক্রমে কেজি প্রতি দরে আম ক্রয়-বিক্রয়ের পক্ষে মতামত দেন।

আলোচনা শেষে সভায় সর্বসম্মতভাবে জাত, গ্রেড ও গুণগত মান বিবেচনায় আম প্রতি কেজি দরে খুচরা কিংবা পাইকারি যে কোনো পর্যায়ে কেনাবেচা করতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এক্ষেত্রে আড়তদাররা কেনাবেচার কোনো পর্যায়েই কোনরূপ কমিশন পাবেন না।

সভায় আরো সিদ্ধান্ত হয়, সারা দেশে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত শুক্রবার (৬ জুন) থেকে রাজশাহী বিভাগের সকল জায়গায় একযোগে বাস্তবায়িত হবে। সভার এই সিদ্ধান্তগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সম্মিলিতভাবে সবাই সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন এবং যার যার অবস্থান থেকে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে প্রয়োজনে প্রচলিত আইনের প্রয়োগ করা হবে।
 

ঢাকা/কেয়া/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চট্টগ্রামে চামড়া কিনে বিপাকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা, দাম পাচ্ছেন না
  • কোরবানির পশুর চামড়ার ভালো দাম পেতে কী করবেন
  • মণ নয়, আম কেনাবেচা করতে হবে কেজি দরে