গ্রিসে আজও কেন বৃহস্পতিবারকে অশুভ দিন মনে করা হয়
Published: 9th, June 2025 GMT
১৪৫৩ সালের ২৯ মে ঘড়িতে সময় রাত দেড়টা। পৃথিবীর এক অন্যতম প্রাচীন ও শ্রেষ্ঠ শহরের প্রাচীর আর গম্বুজগুলোর ওপর দিয়ে হলুদ চাঁদ পশ্চিমের দিকে হেলে পড়ছে, যেন বড় কোনো বিপদের সংকেত দিচ্ছে।
অস্তমিত চাঁদের ম্লান আলোয় আকাশের তারাগুলো দেখতে পাচ্ছে যে, শহরের প্রাচীরের বাইরে সেনারা ধীরে ধীরে এবং সুশৃঙ্খলভাবে জড়ো হচ্ছে।
ওই সৈন্যরা তাদের হৃদয় দিয়ে যেন অনুভব করছিল, তারা ইতিহাসের মোড় ঘোরানো এক মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
এই শহর হচ্ছে কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান ইস্তাম্বুল) এবং প্রাচীরের বাইরে অটোমান বা ওসমানীয় সেনারা চূড়ান্ত আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
শহরের প্রাচীর লক্ষ্য করে ওসমানীয় কামান ৪৭ দিন ধরে গোলাবর্ষণ করে। সেনাপতিরা বিশেষভাবে তিনটি স্থান লক্ষ্য করে তাদের গোলাবর্ষণ চালিয়ে যায়, যাতে প্রাচীর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
২১ বছর বয়সী ওসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদ হঠাৎ করেই তাঁর বাহিনীর সামনে সারিতে পৌঁছে যান। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, চূড়ান্ত হামলা হবে ‘মেসুত টিকিওন’ নামক প্রাচীরের মাঝামাঝি অংশে, যেখানে অন্তত নয়টি ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিখার একটি বড় অংশে ফাটল ধরেছে।
মাথায় মোটা পাগড়ি আর সোনালি পোশাক পরে সুলতান তুর্কি ভাষায় তাঁর সৈন্যদের বললেন, ‘আমার বন্ধু ও ছেলেরা, এগিয়ে চলো, নিজেদের প্রমাণ করার সময় এসে গেছে।’
সঙ্গে সঙ্গেই বাঁশি, শিঙা, ঢোল ও বিউগলের শব্দ রাতের নীরবতা ভেদ করে দেয়। কিন্তু এই কানফাটা শব্দেও ওসমানীয় সেনাদের আকাশ ফাটানো চিৎকার পরিষ্কার শোনা যাচ্ছিল। এরপর তারা প্রাচীরের দুর্বল অংশে হামলা চালায়।
এক পাশে স্থলভাগ থেকে আর অন্য পাশে সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজে লাগানো কামানের মুখ থেকে গোলা ছুড়তে শুরু করে সেনারা।
বাইজেন্টাইন সৈন্যরা প্রাচীর রক্ষা করতে প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু দেড় মাস ধরে চলা অবরোধে তাদের মনোবল ভেঙে যায়। তারা হতাশ ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
অনেক সাধারণ মানুষও সেনাদের সাহায্য করতে প্রাচীরের কাছে এসে আক্রমণকারীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে হায়া সোফিয়া মসজিদের ভেতরের অংশ। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক হায়া সোফিয়া দেখতে আসেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওসম ন য
এছাড়াও পড়ুন:
২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী
অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।
স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।
পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।
পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।
ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।