১৪৫৩ সালের ২৯ মে  ঘড়িতে সময় রাত দেড়টা। পৃথিবীর এক অন্যতম প্রাচীন ও শ্রেষ্ঠ শহরের প্রাচীর আর গম্বুজগুলোর ওপর দিয়ে হলুদ চাঁদ পশ্চিমের দিকে হেলে পড়ছে, যেন বড় কোনো বিপদের সংকেত দিচ্ছে।

অস্তমিত চাঁদের ম্লান আলোয় আকাশের তারাগুলো দেখতে পাচ্ছে যে, শহরের প্রাচীরের বাইরে সেনারা ধীরে ধীরে এবং সুশৃঙ্খলভাবে জড়ো হচ্ছে।

ওই সৈন্যরা তাদের হৃদয় দিয়ে যেন অনুভব করছিল, তারা ইতিহাসের মোড় ঘোরানো এক মুহূর্তের সামনে দাঁড়িয়ে আছে।

এই শহর হচ্ছে কনস্টান্টিনোপল (বর্তমান ইস্তাম্বুল) এবং প্রাচীরের বাইরে অটোমান বা ওসমানীয় সেনারা চূড়ান্ত আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শহরের প্রাচীর লক্ষ্য করে ওসমানীয় কামান ৪৭ দিন ধরে গোলাবর্ষণ করে। সেনাপতিরা বিশেষভাবে তিনটি স্থান লক্ষ্য করে তাদের গোলাবর্ষণ চালিয়ে যায়, যাতে প্রাচীর ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

২১ বছর বয়সী ওসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদ হঠাৎ করেই তাঁর বাহিনীর সামনে সারিতে পৌঁছে যান। তিনি সিদ্ধান্ত নেন, চূড়ান্ত হামলা হবে ‘মেসুত টিকিওন’ নামক প্রাচীরের মাঝামাঝি অংশে, যেখানে অন্তত নয়টি ফাটল সৃষ্টি হয়েছে এবং পরিখার একটি বড় অংশে ফাটল ধরেছে।

মাথায় মোটা পাগড়ি আর সোনালি পোশাক পরে সুলতান তুর্কি ভাষায় তাঁর সৈন্যদের বললেন, ‘আমার বন্ধু ও ছেলেরা, এগিয়ে চলো, নিজেদের প্রমাণ করার সময় এসে গেছে।’

সঙ্গে সঙ্গেই বাঁশি, শিঙা, ঢোল ও বিউগলের শব্দ রাতের নীরবতা ভেদ করে দেয়। কিন্তু এই কানফাটা শব্দেও ওসমানীয় সেনাদের আকাশ ফাটানো চিৎকার পরিষ্কার শোনা যাচ্ছিল। এরপর তারা প্রাচীরের দুর্বল অংশে হামলা চালায়।

এক পাশে স্থলভাগ থেকে আর অন্য পাশে সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজে লাগানো কামানের মুখ থেকে গোলা ছুড়তে শুরু করে সেনারা।

বাইজেন্টাইন সৈন্যরা প্রাচীর রক্ষা করতে প্রস্তুতি নিয়েছিল। কিন্তু দেড় মাস ধরে চলা অবরোধে তাদের মনোবল ভেঙে যায়। তারা হতাশ ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

অনেক সাধারণ মানুষও সেনাদের সাহায্য করতে প্রাচীরের কাছে এসে আক্রমণকারীদের লক্ষ্য করে পাথর ছুড়তে থাকে।

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে হায়া সোফিয়া মসজিদের ভেতরের অংশ। প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক হায়া সোফিয়া দেখতে আসেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওসম ন য

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।

অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।

ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।

কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ