ঈদে ছয়টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। সিনেমা মুক্তির আগে থেকে এগুলো নায়িকাদের নিয়ে আলোচনাও শুরু হয়ে ছিলো। আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন সাবিলা নূর এবং তাসনিয়া ফারিণ। কিন্তু দিন যত গড়াচ্ছে আলোচনার আলোয় তত বেশি স্পস্ট হচ্ছে জয়া আহসানের মুখ ও নাম।
সিনেপ্রেমীরা বলছেন, মেগাস্টার শাকিব খানের খুব কম সিনেমায় নারী চরিত্ররা দাপিয়ে বেড়াতে পারে। দেখা যায় যে নারী চরিত্রগুলো সেরকম স্পেস পান না বা পেলেও সঠিকভাবে নিজেদের অভিনয় প্রতিভা দেখাতে পারেন না। আবার অনেক সময় দেখালেও শেষ পর্যন্ত চরিত্রগুলো পর্দায় ঠিকঠাকভাবে আসে না। সেক্ষেত্রে ‘তাণ্ডব’ ব্যতিক্রম। এ সিনেমায় শক্তিশালী চরিত্র পেয়েছেন জয়া আহসান।
তিনি নিজের আনপ্যারালাল অভিনয় প্রতিভা দিয়ে সেটি বেশ ভালোভাবে কাজেও লাগিয়েছেন এবং শেষ পর্যন্ত তাণ্ডব সিনেমার ‘সায়রা’ আইকনিক চরিত্রে রূপান্তর হয়েছে। এই চরিত্রটি দর্শক মনে রাখবেন।
আরো পড়ুন:
অতিথি পাখি শিকার বন্ধে যে কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন হুমায়ুন ফরীদি
স্ট্রিট ফুড বিক্রি করছেন আমির খান!
জয়া আহসানের গ্ল্যামার নিয়েও উচ্ছ্বসিত দর্শক। দর্শকদের প্রতিক্রিয়া হলো, সুন্দরী জয়া আহসানকে শেষ কবে কোনো সিনেমায় এতো লেগেছে, মনে পড়েনা। সাংবাদিক চরিত্রে জাদুকরী স্ক্রিন প্রেজেন্স ধরে রাখতে পেরেছেন জয়া আহসান। নজর কেড়েছে জয়া আহসানের বডি ল্যাংগুয়েজও।
এই ঈদে জয়া আহসান অভিনীত উৎসব সিনেমাতেও জয়ার চরিত্রটি দর্শকের মনে ধরেছে। তানিম নূরের ‘উৎসব’ সিনেমাতে কমেডি চরিত্র রূপায়ন করেছেন। কিন্তু তার সংলাপ জীবনবোধের গভীরতা প্রকাশ করেছে।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জয় আহস ন চর ত র আহস ন
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলে ‘তাণ্ডব’ প্রদর্শনীতে স্থানীয় 'আলেম সমাজের’ বাধা
দেশে ঈদের মত বড় দুই উৎসবে মানুষের বিনোদনের অনত্যতম অনুসঙ্গ হয়ে উঠেছে প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখা। বিগত কয়েক বছর ধরে ঈদে সিনেমা দেখার বিষয়টি যেনো আরও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। মাল্টিপ্লেক্স ও সিঙ্গেল স্ক্রিনে উপচে পড়ছে দর্শক। তবে দেশের সব জেলায় হল না থাকায় বিকল্প পদ্ধতিতে সিনেমা প্রদর্শনীতে এগিয়ে আসেন অনেক উদ্যোক্তা।
স্থানীয় অডিটোরিয়াম ভাড়া করে তারা উৎসবে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো নির্ধারিত ফি নিয়ে তা প্রদর্শনা করান। এই প্রক্রিয়াতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার আউলিয়াবাদ অডিটোরিয়ামে 'তাণ্ডব' সিনেমা প্রদর্শনীর আয়োজক জাজ মাল্টিমিডিয়ার হেড অব মার্কেটিং কামরুজ্জামান সাইফুল। কিন্তু স্থানীয় 'আলেম সমাজে'র আপত্তির মুখে তা বন্ধ হয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে সেখানে সিনেমা প্রদর্শনীর এক মাসের অনুমতি থাকলেও আয়োজকরা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই শো বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
কামরুজ্জামান সাইফুল জানান, সব জায়গা থেকে সিনেমা প্রদর্শনের অনুমতি নেয়া ছিল। সার্টিফিকেশন বোর্ডের ইউিনভার্সেল রেটেড সার্টিফিকেট সবই ছিল। তাও সিনেমা প্রদর্শনীতে বাধা।
আমি হাত জোড় করে মাফ চেয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময়ের আর্জি জানালাম। আলেম সমাজ অনড়। আমাকে কালই চলে যেতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি না চলে যাবো ততক্ষণ পর্যন্ত তারা গোনাহগার হতে থাকবে, এলাকায় গজব পড়তে থাকবে। এতবড় পাপের বোঝা নিয়ে তারা হাসরের ময়দানে দাঁড়াতে পারবেনা।
গতকাল কামরুজ্জামান সাইফুল টাঙ্গাইল জেলা পরিষদ থেকে প্রতিদিন ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় এবং পাঁচ দিনের ভাড়া অগ্রিম দিয়ে ঈদের দিন থেকে এক মাসের জন্য সিনেমাটি প্রদর্শনের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। বাধার কারণে আজকের মধ্যেই প্রদর্শনী গুটিয়ে নিতে হচ্ছে। ঈদের আগের দিন থেকেই স্থানীয় মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে মাইকে 'তাণ্ডব' প্রদর্শনী বন্ধ করতে বলা হয় এবং পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এরপর একটি মিছিলও বের করা হয়, যা স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হলে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ঈদের দিন দর্শক না আসায় মাত্র ২০-২৫ জন দর্শক নিয়েই সন্ধ্যার শো চালু রাখেন তিনি।
সাইফুল বলেন, 'পরদিন সিনেমা হল বন্ধে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর আবেদন করা হয়। ঈদের আগেই থানায় পুলিশি সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছিলাম। তবে থানা থেকে কোনো ধরনের সহায়তা করা হয়নি। ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইল ডিএসবি এবং এসপি অফিসে যোগাযোগ করেও সাহায্য না পেয়ে ব্যর্থ হতে হয়। শত বাধা সত্ত্বেও একক ইচ্ছেতে ঈদের পরের দিন অডিটোরিয়াম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিই। সেদিন মিছিল না হলেও তাদের সমাবেশ ঘটে।'
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় (ইউনিয়ন শাখা) ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি মাদ্রাসা শিক্ষক হযরত আলী গণমাধ্যমকে বলেন, 'এলাকায় বেশ কয়েকটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অশ্লীলতা ছড়াতে পারে এমন আশঙ্কায় আলেম সমাজসহ স্থানীয়রা এই সিনেমা প্রদর্শনের বিপক্ষে।'
তিনি বলেন, 'আয়োজক যিনি তিনি আমাদের কাছে এসেছিলেন, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিনেমা চালানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমরা তো তাকে এটা চালাতে বলতে পারি না।'
এদিকে আলেম সমাজের বাধা প্রধানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি সামনে আসার পরই সোস্যাল মাধ্যমে প্রতিবাদ করছেন সিনেমাপ্রেমীরা। তবে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ দেখা যায়নি কোথাও।
এ ঘটনায় কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম ঈদের ছুটিতে আছেন জানিয়ে বলেন, 'দেশে চলচ্চিত্র প্রদর্শন নিষিদ্ধ নয়। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সুরাহা করা হবে।'