সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ছিল ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’
Published: 11th, June 2025 GMT
সংসদে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইন’ ছিল বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫০ পাতার এ রায় প্রকাশিত হয়।
গত বছরের ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগের রায়ের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে বহাল করা হলো।
রায়ে ছয় বিচারপতি পৃথকভাবে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্যরা হলেন– বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি সৈয়দ মো.
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। রিটের পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা সংবলিত ৯৬ অনুচ্ছেদের (২), (৩), (৪), (৫), (৬), (৭) ও (৮) পুনর্বহালের জন্য বলা হয়েছে।
পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘এ রিভিউ আবেদনে উত্থাপিত বিষয়বস্তুর মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় রয়েছে, যার মধ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কর্তৃত্ব। যেমন প্রয়োজনে বিচারকদের আচরণবিধির মূল্যায়ন ও সংশোধন করা। ৯৬ অনুচ্ছেদের বর্তমান পুনর্বহাল করা ধারা (৪) (ক) এর অধীনে বিবেচনা করা এ বিষয়টি সর্বাগ্রে একটি অপরিহার্য উপাদান। প্রকৃতপক্ষে, সংবিধানে বিচারিক আচরণের সাংবিধানিকতা, যা নিজেই একটি জীবন্ত দলিল এবং তা চিরস্থায়ী পুনঃউদ্ভাবনের অনুমতি দেয়।’
তিনি বলেন, ‘এটাও ঠিক যে, সংবিধানের মূল চেতনা এবং সংবিধানের অক্ষর এই ধরনের বর্ণনার বাইরেও প্রাধান্য লাভ করে। অন্যথায়, সংবিধান নিজেই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এ প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে আচরণবিধিকে শুধুমাত্র সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে বৃদ্ধি এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা উচিত, যা প্রয়োজনে বিদ্যমান বিধানগুলোও পুনর্বিবেচনা করতে পারে।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে পুনরুজ্জীবিত করা হলো। এ রিভিউ আবেদনটি উপরোক্ত পর্যবেক্ষণের সঙ্গে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তবে যে কোনো বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এবং বিতর্কিত রায়ের কার্যকরী অংশের কার্যকারিতায় প্রয়োজনীয় অস্পষ্টতা এবং বিরোধ দূর করার জন্য ৯৬ অনুচ্ছেদের ২-৮ ধারাগুলো সম্পূর্ণরূপে পুনর্বহাল করার ঘোষণা করা হলো।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব চ রপত আওয় ম ল গ ধ ন ব চ রপত ল ক উন স ল র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর তফসিল সোমবার
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।
রবিবার (২ নভেম্বর) চূড়ান্ত করা হবে নির্বাচনি আচরণবিধি এবং আগামীকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।
জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “২৭ নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জকসু নির্বাচন হবে। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ডিসেম্বরের ৮, ৯ বা ১০ তারিখ যাচাই করে দেখা হচ্ছে। যেহেতু ১৩ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ কর্মদিবস—সেক্ষেত্রে ১০ ডিসেম্বর বুধবার নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি।”
তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জকসু নির্বাচন। তাই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। অনেক ছাত্র সংগঠনও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, যাতে তারা প্রচারণা চালাতে পারে। তবে আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব একটি উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করতে।”
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “ভোটার তালিকা, প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা, ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া—এসব খসড়া তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি আচরণবিধিও প্রস্তুত করা হয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে।”
আজ সব কার্যকর ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও নির্বাচনের অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ যেন দ্বিমত না করে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। আচরণবিধি চূড়ান্ত হলেই সোমবার বা মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করব।”
ছাত্রদলের সম্পাদকীয় ও সদস্য পদ বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “জকসুর সংবিধি পাস হয়ে গেছে। এখন এটি সংশোধন করতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, ইউজিসি, মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে—এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই নতুন করে সংযোজনের সুযোগ নেই।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেটা স্বীকার করছি। তবে আমরা চাই, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় জবির ছাত্র সংগঠনগুলো অনেক ঐক্যবদ্ধ। তাদের সহযোগিতা পেলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই হবে জকসু নির্বাচন।”
অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন, “২০ বছর পর প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই, জবির এই নির্বাচন সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।”
ঢাকা/লিমন ইসলাম/ইভা