সংসদে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আইন’ ছিল বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৫০ পাতার এ রায় প্রকাশিত হয়।

গত বছরের ২০ অক্টোবর আপিল বিভাগের রায়ের রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন। ফলে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে বহাল করা হলো।

রায়ে ছয় বিচারপতি পৃথকভাবে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্যরা হলেন– বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি সৈয়দ মো.

জিয়াউল করিম, বিচারপতি রেজাউল হক ও বিচারপতি এস এম ইমদাদুল হক।

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, আরশাদুর রউফ ও অনীক আর হক। রিটের পক্ষে ছিলেন মনজিল মোরসেদ। অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ছিলেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।

পর্যবেক্ষণে বিচারপতি অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা সংবলিত ৯৬ অনুচ্ছেদের (২), (৩), (৪), (৫), (৬), (৭) ও (৮) পুনর্বহালের জন্য বলা হয়েছে।

পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, ‘এ রিভিউ আবেদনে উত্থাপিত বিষয়বস্তুর মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় রয়েছে, যার মধ্যে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কর্তৃত্ব। যেমন প্রয়োজনে বিচারকদের আচরণবিধির মূল্যায়ন ও সংশোধন করা। ৯৬ অনুচ্ছেদের বর্তমান পুনর্বহাল করা ধারা (৪) (ক) এর অধীনে বিবেচনা করা এ বিষয়টি সর্বাগ্রে একটি অপরিহার্য উপাদান। প্রকৃতপক্ষে, সংবিধানে বিচারিক আচরণের সাংবিধানিকতা, যা নিজেই একটি জীবন্ত দলিল এবং তা চিরস্থায়ী পুনঃউদ্ভাবনের অনুমতি দেয়।’

তিনি বলেন, ‘এটাও ঠিক যে, সংবিধানের মূল চেতনা এবং সংবিধানের অক্ষর এই ধরনের বর্ণনার বাইরেও প্রাধান্য লাভ করে। অন্যথায়, সংবিধান নিজেই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এ প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে আচরণবিধিকে শুধুমাত্র সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে বৃদ্ধি এবং পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা উচিত, যা প্রয়োজনে বিদ্যমান বিধানগুলোও পুনর্বিবেচনা করতে পারে।’

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে পুনরুজ্জীবিত করা হলো। এ রিভিউ আবেদনটি উপরোক্ত পর্যবেক্ষণের সঙ্গে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তবে যে কোনো বিভ্রান্তি দূর করার জন্য এবং বিতর্কিত রায়ের কার্যকরী অংশের কার্যকারিতায় প্রয়োজনীয় অস্পষ্টতা এবং বিরোধ দূর করার জন্য ৯৬ অনুচ্ছেদের ২-৮ ধারাগুলো সম্পূর্ণরূপে পুনর্বহাল করার ঘোষণা করা হলো।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব চ রপত আওয় ম ল গ ধ ন ব চ রপত ল ক উন স ল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।

নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।

আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।

জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রশিবিরের ভরসা ওএমআর মেশিনে, ছাত্রদল চায় হাতে ভোট গণনা
  • গকসু নির্বাচন: জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
  • রাকসুর নির্বাচনি প্রচার শুরু, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা