অন্তর্বর্তী সরকারের সব উদ্যোগে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে: ব্যারিস্টার ফুয়াদ
Published: 12th, June 2025 GMT
দেশের রাজনীতির চলমান ঘটনা প্রসঙ্গে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধান ড. ইউনূসের প্রতি আস্থা না রাখার কোনো ঘটনা এখনও ঘটেনি। জাতীয় ঐকমত্য গঠনে ইউনূস সরকার এ পর্যন্ত যত উদ্যোগ নিয়েছে, সবগুলোতে এবি পার্টির সমর্থন রয়েছে। শুক্রবার লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ড.
দেশের শীর্ষ রাজনীতিবিদ ও আমলাদের চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ ও আমলাদের দেশের সরকারি হাসপাতালেই চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তাহলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের দায়িত্বশীলরা সবসময় সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। চিকিৎসা সরঞ্জামাদিও সর্বাক্ষণিক সচল রাখবেন। এর সুবিধা ভোগ করবেন সাধারণ মানুষ, যারা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান।
তখন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশ গমন ও ফেরত আসা নিয়ে সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন। এর জবাবে ফুয়াদ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার ঘোর বিরোধিতা করে বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ যে কোনো ভিআইপির চিকিৎসা নিতে বিদেশ যাওয়া ঠিক নয়। কিন্তু এ দেশে ভিআইপিদের একটা ঐতিহ্য হয়ে গেছে, বিদেশের হাসপাতালে চিকিৎসা না নিলে পরপারে গিয়ে জবাব দেওয়া লাগতে পারে– কেন তুমি গরিবের হাসপাতালে গিয়ে মরলা।
আবদুল হামিদের বিদেশ যাওয়ার পর সরকারে ঘটে যাওয়া ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাঁর (হামিদ) বিদেশে আসা-যাওয়ার বিষয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই। তাহলে কেন তাঁকে বিদেশ যেতে বাধা দেওয়া হবে। হামিদের বিদেশ যাওয়ার পর বিমানবন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্তের বিরোধিতা করেন ফুয়াদ।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ ঈদের পর তাঁর নির্বাচনী এলাকা বাবুগঞ্জ-মুলাদী উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা ঘুরেছেন। এর তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, দেশে রাজনীতির নামে গুন্ডামি চলছে। সরকারি দপ্তরগুলোতে এখনও ঠিকাদারি কাজের জন্য নানাভাবে চাপ দেওয়া হয়। আগের সরকারের লোকজনদের কাজ দিয়েছেন, আমাদের কেন দেবেন না– এমন
হুমকি-ধমকি দেওয়া হয় কর্মকর্তাদের।
উন্নয়ন বরাদ্দ লুটপাট হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সড়ক নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে ইউনিয়নে ৮৪ লাখ ও পৌর শহরে আড়াই কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। অথচ ইউনিয়নে ৩০ লাখ ও পৌর শহরে ৮৪ লাখ টাকায় আন্তর্জাতিক মানের সড়ক নির্মাণ সম্ভব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ