ইরান ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো পরমাণু কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বৈশ্বিক বাধ্যবাধকতা মানছে না বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)।

সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজ বৃহস্পতিবার গৃহীত একটি প্রস্তাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ ভবিষ্যতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বিষয়টি উত্থাপনের পথ খুলে দিতে পারে।

গত সপ্তাহে আইএইএ ইরানের পারমাণবিক কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সংস্থাটির গভর্নর বোর্ডে আজকের সিদ্ধান্তের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছিল, ইরান আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা করছে না। তারা কিছু এলাকায় গোপনে পারমাণবিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে তদন্তের আওতায় থাকা কিছু এলাকায় এমন কিছু পারমাণবিক উপকরণ রেখেছে, যার বিষয়ে তারা তথ্য দেয়নি।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আইএইএর বৈঠকের আগে ইউরোপীয় শক্তিগুলোকে প্রস্তাবটি সমর্থন না করার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এতে তাঁরা বড় ভুল করবেন এবং ইরান এর ‘জবাব’ দেবে।

আইএইএর প্রতিবেদন এবং গভর্নর বোর্ডের এমন প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন পারমাণবিক চুক্তির লক্ষ্যে চলমান আলোচনাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

আরও পড়ুননিরাপত্তাঝুঁকিতে ইরাকের দূতাবাস থেকে কর্মীদের আংশিকভাবে সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র১১ ঘণ্টা আগে

তা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে। এমন এক সময়ে আইএইএর গভর্নর বোর্ডে প্রস্তাবটি গৃহীত হলো, যার মাত্র এক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের কিছু নাগরিককে মধ্যপ্রাচ্য ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমন খবর প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশের নাগরিকদের অঞ্চলটি ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছে।

তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ এবং তারা কখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি বা অর্জনের চেষ্টা করবে না।

২০১৫ সালে ছয় বিশ্ব শক্তি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি করেছিল ইরান। এই চুক্তির আনুষ্ঠানিক নাম জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ)। ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নজরদারি করার জন্য এই চুক্তি করা হয়েছিল, যাতে দেশটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে না পারে।

আরও পড়ুন‘শান্তিপূর্ণ কার্যক্রম’ থেকে বঞ্চিত হলে পারমাণবিক চুক্তি নয়: ইরান০৪ জুন ২০২৫

চুক্তি করার বিনিময়ে ইরানের ওপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সম্মত হয়েছিল পশ্চিমা দেশগুলো। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তি থেকে একতরফা বের হয়ে যায়। তাঁর মতে, এই চুক্তি ইরানের পরমাণু বোমা তৈরির পথ বন্ধে যথেষ্ট নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে চুক্তিটি একধরনের বাতিল হয়ে যায়। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষমতায় এসে চুক্তিটি নবায়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন, কিন্তু সফল হননি।

আইএইএর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৭ মে পর্যন্ত ইরান ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, যা অস্ত্র তৈরির পর্যায়ের কাছাকাছি এবং প্রায় ৯টি পারমাণবিক বোমা বানানোর জন্য যথেষ্ট। পরমাণু অস্ত্র নেই—এমন যেকোনো দেশের ক্ষেত্রে উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত নজিরবিহীন ঘটনা। ফেব্রুয়ারির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এই মজুতের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে ১৩৩ দশমিক ৮ কেজিতে পৌঁছেছে।

আরও পড়ুনইরানের উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়ামের মজুত ৪০৮ কেজি, যা নজিরবিহীন: আইএইএ৩১ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র এই চ ক ত প রস ত ব পরম ণ

এছাড়াও পড়ুন:

ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের গুঞ্জন, প্রথমবার মুখ খুললেন অভিষেক

দু–এক মাস নয়, প্রায় এক বছর ধরে চলছে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন আর অভিষেক বচ্চনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন। দীর্ঘদিন ধরে এ গুঞ্জন চলার বড় কারণ—দুই তারকার কেউই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেননি। অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন অভিষেক। এক পডকাস্টে হাজির হয়ে প্রথমবারের মতো বিচ্ছেদের গুঞ্জন নিয়ে সরাসরি কথা বললেন অভিষেক।
বিচ্ছেদের গুঞ্জনকে ‘মিথ্যা’ ও  ‘বানানো’ বলে অবিহিত করেন অভিষেক বচ্চন। তাঁর ভাষায়, ‘আপনি যদি সেলিব্রিটি হন, মানুষ আপনাকে নিয়ে গল্প তৈরি করবেই। ওরা যা খুশি লিখেছে—সবটাই সম্পূর্ণ মিথ্যা, কোনো তথ্যের ভিত্তি নেই। বিদ্বেষপূর্ণ এবং ভুল। বিয়ের আগেও এরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছিল কবে আমাদের বিয়ে হবে, আর বিয়ের পর ঠিক করছিল কবে আমাদের ডিভোর্স হবে! সব বাজে কথা। সে আমার সত্য জানে, আমি তার সত্য জানি। আমরা সুখী, সুস্থ পরিবারে ফিরি—ওটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এসবের মধ্যে কোনো সত্যতা থাকত, তাহলে আমার খারাপ লাগত। কিন্তু লাগে না। সম্মান রেখে বলছি, মিডিয়া অনেক সময়ই ভুল করে।’

‘মিডিয়া দেশের বিবেক’
অভিষেক বচ্চন এই পডকাস্টে আরও বলেন, ‘আমাকে এমনভাবে বড় করা হয়েছে যে মিডিয়াকে দেশের বিবেক মনে করি। তবে দিনের শেষে ভুলে গেলে চলবে না—আপনি কারও সন্তান, কারও বাবা, কারও স্বামী, কারও স্ত্রী সম্পর্কে লিখছেন। দায়িত্ববোধ থাকা জরুরি। আমাকে নিয়ে যা খুশি বলতে পারেন। কিন্তু আমার পরিবারকে নিয়ে বললে তার জবাব পেতে হবে। কোনো মিথ্যা, বানানো বাজে কথা আমি বরদাশত করব না। এখানেই ফুলস্টপ।’

ঐশ্বরিয়া রাই ও অভিষেক বচ্চন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর প্রথমবার প্রকাশ্যে স্মৃতি মান্ধানা, কী বললেন
  • ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের গুঞ্জন, প্রথমবার মুখ খুললেন অভিষেক