সুপারম্যানের কাছে আছে পৃথিবীর শক্তি সংকটের সমাধান
Published: 15th, June 2025 GMT
যাঁরা কল্পকাহিনিভিত্তিক সিনেমার ভক্ত, তাঁদের অনেকের কাছে সুপারম্যান ভীষণ প্রিয়। সুপারম্যান সিরিজে দেখা যায়, সুপারম্যান যেখানকার মানুষ, সেই কাল্পনিক গ্রহের তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ক্রিপ্টোনাইট। কাল্পনিক ক্রিপ্টোনাইটের বিপরীতে জ্যাডারাইট নামের সাদা ও পাউডারময় একটি পদার্থ নিয়ে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এই পদার্থ কোনো বিকিরণ নির্গত করে না। এটি সার্বিয়ার একটি অঞ্চল থেকে আসে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, ‘ক্রিপ্টোনাইটের মতো এই উপাদান আমাদের গ্রহের জন্য সবুজ ভবিষ্যৎ তৈরির সুযোগ দিচ্ছে।’ যুক্তরাজ্যের লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন। বিরল লিথিয়াম বহনকারী এই খনিজ পৃথিবীর শক্তির চাহিদার জন্য একটি গেমচেঞ্জার হতে পারে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
জ্যাডারাইট সার্বিয়ার জ্যাডার অববাহিকা অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই খনিজের সঙ্গে কাল্পনিক ক্রিপ্টোনাইটের আশ্চর্যজনক মিল রয়েছে। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বৈদ্যুতিক যানবাহনের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত শক্তি সরবরাহ করার জন্য পর্যাপ্ত লিথিয়াম সরবরাহ করতে পারে এই খনিজ। এখন বছরে এক লাখ টন লিথিয়াম উৎপাদিত হয়। পেট্রোল ও ডিজেল গাড়ির বিপরীতে বৈদ্যুতিক যানবাহনের ব্যাটারির চাহিদা মেটাতে লিথিয়াম প্রয়োজনীয় পরিমাণের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ পাওয়া যায়।
বিজ্ঞানী রবিন আর্মস্ট্রং বলেন, নবায়নযোগ্য শক্তির চাহিদা মেটাতে লিথিয়ামের অব্যাহত চাহিদা রয়েছে। খনন করে সংগ্রহ করা হলে জ্যাডারাইটের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের বেশির ভাগ লিথিয়াম স্পোডুমিন নামক একটি খনিজ থেকে আসে। জ্যাডারাইট থেকে লিথিয়াম বের করার চেয়ে স্পোডুমিন থেকে লিথিয়াম সংগ্রহে বেশি শক্তি লাগে। লিথিয়াম সংগ্রহের সময় একটি দরকারি উপজাত হিসেবে বোরন পাওয়া যায়।
জ্যাডারাইট ২০০৪ সালে রিও টিন্টো নামক একটি খনি কর্পোরেশনের মাধ্যমে প্রথম আবিষ্কৃত হয়। ভূতাত্ত্বিকেরা একে অনন্য উপাদান বললেও প্রকৃত সম্ভাবনা উপলব্ধি করতে পারেননি। ২০০৬ সালের ‘সুপারম্যান রিটার্নস’ সিনেমায় ক্রিপ্টোনাইটের জন্য উদ্ভাবিত সূত্রের সঙ্গে রাসায়নিক সূত্রের মিল পাওয়া যায়। সিনেমায় সুপারম্যানের চিরশত্রু লেক্স লুথার ক্রিপ্টোনাইট চুরি করে কাল্পনিক এক সূত্র দিয়ে। সোডিয়াম লিথিয়াম বোরন সিলিকেট হাইড্রোক্সাইড উইদ ফ্লোরিনের কথা বলা হয় সিনেমায়। যেখানে জ্যাডারাইটের রাসায়নিক গঠন সোডিয়াম লিথিয়াম বোরন সিলিকেট হাইড্রোক্সাইড। এ আবিষ্কারের পর থেকে বিশেষজ্ঞেরা নতুন লিথিয়ামের উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। বিজ্ঞানীদের মতে, জ্যাডারাইট তৈরির জন্য ক্ষারসমৃদ্ধ হ্রদ, লিথিয়াম–সমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির কাচ ও খনিজ পদার্থের স্ফটিক কাঠামোর কাদামাটিসহ বিরল অবস্থার প্রয়োজন হয়।
সূত্র: এনডিটিভ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র প ট ন ইট র জ য ড র ইট পদ র থ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশে আতঙ্ক-উত্তেজনা, ট্রাম্প আসলে কী চান
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রিচার্ড কোরেল ভেবেছিলেন, দেশটির পারমাণবিক বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে তাঁর নিয়োগ নিশ্চিত হওয়া নিয়ে গত বৃহস্পতিবার শুনানি সহজভাবেই শেষ হবে। তবে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের আগের দিন বুধবার রাত ৯টা ৪ মিনিটে সে আশা ভেঙে গেছে।
ওই সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকে চমকে দেন। বলেন, তিনি মার্কিন বাহিনীকে পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা অবিলম্বে শুরু করতে বলেছেন। তাঁর যুক্তি, যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে রাশিয়া ও চীনের পেছনে থাকতে পারে না।
ট্রাম্প বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় এবং চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সিনেটে সশস্ত্র বাহিনী কমিটির প্রায় ৯০ মিনিটের শুনানিতে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বারবার কোরেলকে প্রশ্ন করা হয়। ট্রাম্পের মন্তব্যে অনেক আইনপ্রণেতাই এ সময় ছিলেন বিভ্রান্ত। এ থেকে বোঝা যায়, রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও এর বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন।
মার্কিন কর্মকর্তারা পরিষ্কার করেননি যে ট্রাম্প পারমাণবিক অস্ত্র সরবরাহ ব্যবস্থার পরীক্ষা করতে বলছেন, নাকি বিস্ফোরক পরীক্ষায় ৩৩ বছরের নিষেধাজ্ঞা শেষ করতে চাইছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ট্রাম্পের নির্দেশ বিপর্যয় সৃষ্টি করতে পারে ও প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়াতে পারে, যা শীতল যুদ্ধের ভয়ংকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে।কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট সদস্য সিনেটর জ্যাক রিড কোরেলকে প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা শুরু করলে তা কি বিশ্বে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বাড়াবে এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করবে।
কোরেল বলেন, ‘যদি আমাকে স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের (স্ট্র্যাটকম) কমান্ডার হিসেবে নিশ্চিত করা হয়, আমার কাজ হবে, পারমাণবিক পরীক্ষাবিষয়ক যেকোনো আলোচনা সম্পর্কে সামরিক পরামর্শ দেওয়া।’
ভাইস অ্যাডমিরাল কোরেলকে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প স্ট্র্যাটকমের প্রধান করার জন্য মনোনীত করেন। স্ট্র্যাটকম পারমাণবিক হামলা প্রতিরোধ ও আক্রমণের সক্ষমতা নিয়ে কাজ করে। কোরেল পুরো শুনানিতে সতর্কভাবে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন।
পারমাণবিক অস্ত্রে রাশিয়া দ্বিতীয় ও চীন বেশ দূরে তৃতীয় অবস্থানে। কিন্তু দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে আমাদের সমপর্যায়ে উঠে আসতে পারে।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টশুনানির এক পর্যায়ে স্বতন্ত্র সিনেটর অ্যাঙ্গাস কিং প্রশ্ন করেন, ট্রাম্প কি পারমাণবিক ডিভাইসের বিস্ফোরক পরীক্ষা নয়, বরং ক্ষেপণাস্ত্র বা অন্য সরবরাহ ব্যবস্থা পরীক্ষার কথা বলছেন কি না।
জবাবে কোরেল বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্য জানি না, তবে এটি এমন একটি ব্যাখ্যা হতে পারে, আমি তা মেনে নিই।’
দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে গত বৃহস্পতিবার মুখোমুখি বৈঠকে যোগ দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সি চিন পিং