সংবাদপত্রের কালো দিবস ছিল আজ। সোমবার এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার মধ্যরাতে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং এর মূল শর্ত হলো বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহির আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিকের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।’

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা।’

সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সই করা বাণীতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সব পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান (কঠোর) আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করা হয়েছিল। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন দ বস স ব দপত র ত র ক রহম ন গণতন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে

দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন। 

গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।  

সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।

খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।

বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।

২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’। 

জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’

ঢাকা/কেএন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক-এগারোর মতো ঘটনা ঘটা এখানে অস্বাভাবিক কিছু নয়
  • মিয়ানমারে ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা জান্তা সরকারের, জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সরাসরি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে
  • ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লুলার প্রতিবাদে অন্যরাও শামিল হোক
  • এমন কিছু করবেন না যাতে গণতন্ত্র ব্যাহত হয়: মির্জা ফখরুল
  • আইন যেভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার
  • সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
  • বিতর্কমুক্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকারব‍্যবস্থা না হলে গণতন্ত্র আবার হুমকিতে পড়বে: এবি পার্টি
  • মানুষ ঠিকমতো ইভিএম বোঝে না, পিআর বুঝবে কী করে: মির্জা ফখরুল
  • এইচএসসি পরীক্ষা: ব্যবসায় সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা ২য় পত্রে ভালো করতে হলে