প্রযুক্তিগত ত্রুটিসহ অন্য কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার একদিনেই বাতিল হয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার অন্তত ৬টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। আর সব ফ্লাইটেই উড়োজাহাজ হচ্ছে বোয়িংয়ের ড্রিমলাইনার। 

বাতিল হওয়া বাকি ফ্লাইটগুলো হলো-দিল্লি-দুবাই (এআই ৯১৫), দিল্লি-ভিয়েনা (এআই ১৫৩), দিল্লি-প্যারিস (এআই ১৪৩), আহমেদাবাদ-লন্ডন (এআই ১৫৯), বেঙ্গালুরু-লন্ডন (এআই ১৩৩) ও লন্ডন-অমৃতসার (এআই ১৭০)। এ সবগুলো ফ্লাইটেই বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার ব্যবহার করার কথা ছিল। এছাড়া এআই ৩১৫ নামের একটি দিল্লিগামী ড্রিমলাইনারও কারিগরি সমস্যার কারণে হংকংয়ে ফিরে গেছে জানানো হয়। 

এক বিবৃতিতে এয়ার ইন্ডিয়া বলেছে, ‘ফ্লাইট ছাড়ার আগে বাধ্যতামূলক কিছু পরীক্ষায় সমস্যা ধরা পড়ায় দিল্লি থেকে প্যারিসগামী ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে প্যারিস থেকে দিল্লিগামী ফিরতি ফ্লাইট, যা আগামীকাল বুধবার ছাড়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে।’

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে এয়ার ইন্ডিয়া তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘যাত্রীদের ভোগান্তির জন্য আমরা দুঃখিত। বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা তাঁদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করছি।

‘এ ছাড়া যাত্রীরা যদি ফ্লাইট বাতিল করতে চান, তাহলে তাদের সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দিচ্ছি বা বিনা খরচে তারিখ পরিবর্তনের সুযোগ দিচ্ছি।’

এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লি-প্যারিসগামী ফ্লাইট বাতিলের কয়েক ঘণ্টা আগে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন অভিমুখী ফ্লাইট বাতিল করা হয়।

এর কারণ হিসেবে এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, আকাশপথের ওপর বিধিনিষেধ এবং অতিরিক্ত সতর্কতামূলক পরীক্ষা-নিরীক্ষার কারণে তাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

পাঁচ দিন আগে গত বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদ-লন্ডনমুখী এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইট উড্ডয়নের কয়েক মিনিটের মধ্যে আবাসিক এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

একজন বাদে সেটিতে সওয়ার ২৪১ জন আরোহীর সবাই সেদিন প্রাণ হারান। এ ছাড়া আহমেদাবাদ শহরের যে এলাকায় সেটি আছড়ে পড়েছিল, সেখানে অবস্থানরত ৩৩ জনও এই দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচতে পারেননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ল ইট ফ ল ইট ব ত ল আহম দ ব দ ব ত ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে ২ বছর কারাদণ্ড

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করেছে সরকার। মঙ্গলবার রাতে এ অধ্যাদেশের গেজেট জারি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা নিলে এতে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। এর আগে গত ১৫ মে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।

অধ্যাদেশের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা যে কোনো শ্রেণির আহত জুলাইযোদ্ধা না হওয়া সত্ত্বেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা জ্ঞাতসারে কোনো মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন করে বা বিভ্রান্তিকর কাগজাদি দাখিল করে নিজেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত জুলাইযোদ্ধা দাবি করে কোনো চিকিৎসা সুবিধা বা আর্থিক সহায়তা বা পুনর্বাসন সুবিধা দাবি করেন বা গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি অপরাধ করেছেন বলে গণ্য হবে। এ ক্ষেত্রে তাঁকে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা বা নেওয়া সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার দ্বিগুণ পরিমাণ জরিমানা দিতে হবে।’

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাইযোদ্ধাদের কল্যাণ, পুনর্বাসনসহ গণঅভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। যেহেতু সংসদ ভেঙে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এবং রাষ্ট্রপতির কাছে এটি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে– আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে, তাই সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ প্রণয়ন ও জারি করলেন।’

পুনর্বাসনের বিষয়ে অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে শহীদ হয়েছেন এমন ব্যক্তির পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য এবং আহত জুলাইযোদ্ধাদের অনুকূলে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক উপার্জনমুখী কাজের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে সহজ শর্তে ঋণ বা এমন সুবিধাদি প্রদান এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদান।

এরই মধ্যে গঠন করা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ এ অধ্যাদেশের অধীনে আনা হয়েছে। জুলাই শহীদ ও আহতদের তালিকাও এই অধ্যাদেশের অধীনে প্রকাশ করা হয়েছে বলে ধরা হবে। অধ্যাদেশে আহতদের তিন শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের যথাক্রমে ‘জুলাই শহীদ’ এবং ‘জুলাইযোদ্ধা’র স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ