যশোরে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পুলিশের এসআই সাময়িক বরখাস্ত
Published: 17th, June 2025 GMT
ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে যশোরের চৌগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রথমে তাঁকে যশোর পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়। পরে গতকাল সোমবার যশোরের পুলিশ সুপার রওনক জাহান তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর চৌগাছা উপজেলার ফুলসারা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে মাসুম বিল্লাহ তাঁর সহপাঠী এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় মেয়েকে উদ্ধারের জন্য তাঁর বাবা চৌগাছা থানা-পুলিশের সহযোগিতা চান। মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য চৌগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন অভিযুক্ত মাসুম বিল্লাহকে না পেয়ে তাঁর বাবা জাহিদুল ইসলামকে থানায় তুলে আনেন। ছেলেকে হাজির করতে না পারায় জাহিদুল ইসলামকে দুই দিন থানায় আটকে রাখা হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় পলাতক ছেলে ও মেয়েকে হাজির করে উভয় পরিবারের মধ্যে সমঝোতা হয়। কিন্তু পালিয়ে যাওয়া ছেলে ও মেয়েকে থানায় হাজির না করলে জাহিদুল ইসলামকে ছাড়া হবে না বলে জানিয়ে দেন এসআই আশরাফ। একপর্যায়ে ৩০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে তাঁকে থানা থেকে ছেড়ে দেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এদিকে গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার মসিয়ূরনগর বাজার থেকে ১০টি ইয়াবা বড়িসহ তিনজনকে আটক করেন এসআই আশরাফ। তাঁদের মধ্যে দুজন ক্রেতা এবং একজন বিক্রেতা ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে বিক্রেতাকে ছেড়ে দিয়ে ক্রেতা দুজনকে আটক দেখানো হয়। প্রাথমিকভাবে ঘুষ গ্রহণের এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এসআই আশরাফকে প্রথমে যশোর পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়। পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, এসআই আশরাফের বিরুদ্ধে কিছু গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। বিভাগীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। যে কারণে প্রথমে তাঁকে প্রত্যাহার ও পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। অভিযোগগুলো নিয়ে তদন্ত চলমান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ দ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও দেড় শ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপপরিচালক মো. আজিজুল হক বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া আসাদুজ্জামান নূরের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
দুদকের অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকা। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একে একে মামলা ও গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।