প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে নেবে ২৫ জন, আবেদন করেছেন কি
Published: 18th, June 2025 GMT
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। রাজস্ব খাতে ৪টি পদে মোট ২৫ জনকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে পদগুলোয় যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে যোগ দিতে পারবেন আপনিও। অনলাইনে আবেদন করতে হবে আগ্রহীদের।
পদের নাম ও পদসংখ্যা
১. সাঁট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৭
বেতনস্কেল: ১১০০০–২৬৫৯০ টাকা
২.
পদসংখ্যা: ১
বেতনস্কেল: ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা
৩. অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১০
বেতনস্কেল: ৯৩০০-২২৪৯০ টাকা
৪. অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ৭
বেতনস্কেল: ৮২৫০-২০০১০ টাকা
আরও পড়ুনঅপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস–তাহরির স্কয়ার–পিপল’স অ্যাকশন পার্টি কী, জেনে নিন বিস্তারিত১৫ মে ২০২৫আবেদনকারীদের জন্য কিছু শর্ত প্রযোজ্য। এগুলো হলো—
১. সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
২. আবেদনকারীর বয়স ০১/০৫/২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছর হতে হবে। ১ ও ৩ নং ক্রমিকে বর্ণিত পদে আবেদনের ক্ষেত্রে বিভাগীয় প্রার্থীদের বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। এসএসসি সনদের ভিত্তিতে বয়স নির্ধারণ করা হবে। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য নয়। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ সচিবালয় (নন-ক্যাডার গেজেটেড অফিসার এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী) নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৪ (সংশোধিত ২০২০) অনুসারে নিযুক্ত বা নিয়োজিত কর্মচারীরা বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হবেন।
৩. চাকরির আবেদনপত্রে সব শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করতে হবে।
৪. যদি কোনো প্রার্থী বাংলাদেশের নাগরিক না হন কিংবা বাংলাদেশের নাগরিক নন—এমন কোনো ব্যক্তিকে বিয়ে করেন বা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন কিংবা কোনো ফৌজদারি আদালত কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত অভিযোগে দণ্ডিত হন কিংবা কোনো সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের চাকরি হতে বরখাস্ত হয়ে থাকেন তবে তিনি আবেদন করার জন্য যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
আরও পড়ুনচীনের সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মিলবে বই কেনারও অর্থ, আইইএলটিসে ৭ হলে আবেদন০৭ মে ২০২৫৫. সরকারি, আধা-সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রার্থীদের নিজ নিজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। এ ছাড়া মৌখিক পরীক্ষার সময় চাকরিরত প্রার্থীদের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/অধিদপ্তর/সংস্থার অনাপত্তি সনদ দাখিল করতে হবে।
অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণসংক্রান্ত নিয়মাবলি ও শর্তাবলি আছে। এগুলো হলো—
ক. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও আবেদন ফি জমাদান শুরু ২০ মে ২০২৫ তারিখ সকাল ১০টা।
খ. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণের শেষ তারিখ ও সময় ১৯ জুন ২০২৫ বিকেল ৫টা।
গ. এ সময়ের মধ্যে ইউজার আইডি (User ID) প্রাপ্ত প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদনপত্র সাবমিটের সময় থেকে পরবর্তী ৭২ (বাহাত্তর) ঘন্টার মধ্যে এসএমএসে পরীক্ষার ফি জমা দেবেন।
ঘ. অনলাইনে আবেদনপত্রে পূরণকৃত তথ্যই যেহেতু পরবর্তী সব কার্যক্রমে ব্যবহৃত হবে, সেহেতু অনলাইনে আবেদনপত্র সাবমিট করার পূর্বেই পূরণকৃত সব তথ্যের সঠিকতা সম্পর্কে প্রার্থী নিজে শতভাগ নিশ্চিত হবেন।
ঙ. প্রার্থী অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্রের একটি প্রিন্টকপি পরীক্ষা–সংক্রান্ত যেকোনো প্রয়োজনে সহায়ক হিসেবে সংরক্ষণ করবেন এবং মৌখিক পরীক্ষার সময় এক কপি জমা দেবেন।
চাকরি আবেদনের বয়স
প্রার্থীর বয়স ০১-০৫-২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে।
আবেদনের নিয়ম
আগ্রহী প্রার্থীরা ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন।
আরও পড়ুনবিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সিলেবাস প্রকাশ১৩ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব তনস ক ল পর ক ষ র পদস খ য
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।
কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।
জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।
বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।
এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।
আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।