রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূবিজ্ঞান অনুষদে এমএস প্রোগ্রাম, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের সুযোগ
Published: 17th, September 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূবিজ্ঞান অনুষদের অধীন ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে জুলাই ২০২৪-জুন ২০২৫ সেশনে এমএস প্রোগ্রামে বহিরাগত শিক্ষার্থীদের শূন্য আসনে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
প্রার্থীর যোগ্যতা১. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত অন্য যেকোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অথবা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ/ইনস্টিটিউট থেকে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে (ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা/ভূতত্ত্ব/ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান/পেট্রোলিয়াম ও মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং/পরিবেশবিজ্ঞান/দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে) চার বছর মেয়াদি স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনকারী আবেদন করতে পারবে।
২.
৩. স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জনের দুই বছরের মধ্যে আবেদন করতে পারবে।
আরও পড়ুনজাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা৪ ঘণ্টা আগেআবেদন করতে লাগবে১. প্রাথমিক আবেদনপত্র এক হাজার টাকা।
২.আবেদনপত্রের সঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সার্টিফিকেট, মার্কস সার্টিফিকেট, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্রের সত্যায়িত কপি এবং সদ্য তোলা দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের সত্যায়িত ছবি ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
দরকারি তথ্য১. লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের ফলাফল ৯ অক্টোবর বেলা ৩টার মধ্যে প্রকাশ করা হবে।
২. লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একই দিনে অনুষদ অফিসে সাক্ষাত্কার গ্রহণ করা হবে।
৩. সাক্ষাত্কারের সময় শিক্ষার্থীকে সব সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র সার্টিফিকেট ও অন্যান্য সনদপত্রের মূল কপি বোর্ডের সদস্যদের দেখাতে হবে।
৪. সাক্ষাত্কার শেষে চূড়ান্ত মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে।
৬. ভর্তির সময় আবেদনকারীকে নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয় হতে সংগৃহীত মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট অবশ্যই জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনইতালির বিশ্ববিদ্যালয়ে আইইএলটিএস ছাড়াই ডিএসইউ স্কলারশিপ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ভর্তির লিখিত পরীক্ষা১. লিখিত পরীক্ষার তারিখ: ৯ অক্টোবর ২০২৫, বেলা ১১টা-১২টা পর্যন্ত,
২. লিখিত পরীক্ষার সময়: এক ঘণ্টা,
৩. লিখিত পরীক্ষার স্থান: ভূবিজ্ঞান অনুষদে অনুষ্ঠিত হবে,
৪. লিখিত পরীক্ষার বিষয়: ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিষয়ে স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) পাঠ্যক্রমের ওপর লিখিত পরীক্ষা হবে,
৫. লিখিত পরীক্ষার নম্বর: লিখিত পরীক্ষা হবে ১০০ নম্বরের, সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন-উত্তরে নম্বর পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে।
৬. ভর্তি পরীক্ষার পাস নম্বর ৪০%। ভর্তি পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগে ভর্তিতে আবেদনকারীর স্নাতক/স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩ (৪ স্কেলে) থাকতে হবেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ র
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
সরকারি নথিপত্রে যেকোনো ঐতিহাসিক ঘটনার ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্যের ইচ্ছাকৃত অন্তর্ভুক্তি সন্দেহাতীতভাবে ইতিহাস বিকৃতির সবচেয়ে খারাপ ধাপ। স্বাধীনতা-পরবর্তী সরকারগুলোর প্রায় প্রত্যেকে এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় রাজাকারদের, আর রাজাকারের তালিকায় সুবিদিত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের অন্তর্ভুক্তি দেখা গেছে। কিন্তু হাজারো তরুণের রক্তস্নাত জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব নেওয়া অরাজনৈতিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে, তা অকল্পনীয় ছিল।
কিন্তু বাস্তবতা দেখিয়েছে, আগের সেই রেশ থামেনি। দেখা যাচ্ছে, সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শহীদদের যে তালিকা করেছে, তাতে এমন অর্ধশতাধিক লোকের নাম এসেছে, যাঁরা জুলাই শহীদ নন।
জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন বিধিমালা, ২০২৫ স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করেছে: শুধু রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী অথবা আওয়ামী শাসক দলের লোকদের হাতে নিহত ব্যক্তিরাই জুলাই শহীদ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, সরকারের তৈরি করা জুলাই শহীদদের তালিকায় কমপক্ষে ৫২ জনের নাম আছে, যাঁরা জমিসংক্রান্ত বিরোধ বা অন্য কারণে প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কিংবা নানা ঘটনা-দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। এ ছাড়া তালিকায় তিনজন পুলিশ কর্মকর্তা, একজন ছাত্রলীগ নেতা আছেন। এমনকি তালিকায় এমন একজনকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যিনি প্রতিবাদীদের ওপর হামলায় যুক্ত ছিলেন।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে এককালীন মোট ৩০ লাখ টাকা দেবে সরকার। এর মধ্যে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেওয়া হয়েছে। বাকি টাকা চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রত্যেক শহীদ পরিবার মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে। ঢাকায় তাদের ফ্ল্যাট দেওয়ার জন্য একটি প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে।
জনমানসের যৌক্তিক ধারণা, এই অর্থনৈতিক সুবিধার প্রলোভন তালিকা প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় প্রতারণা, শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং অপকৌশলের সুযোগ তৈরি করেছে। শুধু জালিয়াতি করে শহীদ দেখিয়ে শুধু সহায়তা নেওয়া নয়; সংশ্লিষ্ট নিহতের ঘটনায় মামলা করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার নজিরও মিলেছে।
এই পরিস্থিতি প্রমাণ করছে, তালিকাভুক্তকরণের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক ও আর্থিক স্বার্থ কাজ করে থাকতে পারে। ঘটনাটিকে দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু কর্মকর্তার মিলিত কৌশল এবং সুযোগসন্ধানীদের চক্রান্ত হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা। তবে প্রথম আলোর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি সরকার আমলে নিয়েছে, এ জন্য আমরা তাদের সাধুবাদ জানাতে চাই।
বহু শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে সরকার এক মহান দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছে। তাদের মনে রাখতে হবে, শহীদের মর্যাদাকে সরকারি পরিসরে আর্থিক প্রলোভন, সংকীর্ণ রাজনৈতিক সুবিধা বা স্বার্থপর উদ্দেশ্যে বিকৃত করা হলে সেটি ইতিহাস, নৈতিকতা ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লঙ্ঘনের অমার্জনীয় অন্যায় হয়ে ওঠে।
এ অন্যায় থেকে বাঁচতে ও মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপনে অবিলম্বে বিতর্কিত সব নামের সব সরকারি সুবিধা অবিলম্বে স্থগিত করতে হবে। স্বাধীন ও অরাজনৈতিক কমিটি গঠন করে প্রতিটি নামের পুনঃ যাচাই নিশ্চিত করা জরুরি। বাদ পড়া শহীদদের নামও তালিকায় যুক্ত করতে হবে। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে যাদের গাফিলতি বা দুর্নীতির কারণে এই অনিয়ম হয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসে এক অমর মাইলফলক। এর শহীদদের তালিকায় নকল বা অপ্রাসঙ্গিক নাম সংযোজন করা হলে ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা’ সব ‘ধরার ধুলায় হবে হারা’। সরকারকে এ সত্য উপলব্ধি করতে হবে।
আশার কথা হলো, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কথা ও কাজের সম্মিলিত প্রয়াস আমরা দেখব, সেটিই কাম্য।