পটুয়াখালীতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া ও ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৩ জন। একই সময়ে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে ১২ জনের শরীরে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডায়রিয়া রোগী রয়েছে ৭৭ জন, ডেঙ্গু রোগী ৫০ জন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবার থেকে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ কাইব হাসান (২) নামের এক শিশু। সে শহরের কাঠপট্টির মোহাম্মদ কাওসারের ছেলে। কাওসার বলেন, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়া ছেলেকে নিয়ে পাঁচ দিন ধরে হাসপাতালে আছেন। এখানে আসার পর থেকে মোটামুটি ভালো আছে। এই হাসপাতালের চিকিৎসাও আগের চেয়ে ভালো হয়েছে। চিকিৎসক-নার্সের কাছে সেবা পাচ্ছেন।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত লাল বানুকে একই হাসপাতালে শনিবার ভর্তি করা হয়। তাঁর মেয়ে সদর উপজেলার বশাক বাজার এলাকার মালা বেগমের ভাষ্য, এখানে আসার পর ওষুধ ও স্যালাইন পেয়েছেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষাও হয়েছে। তাঁর মায়ের শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। 
বরগুনার আমতলী উপজেলার মোখলেছুর রহমানের শরীরে ডেঙ্গু শনাক্ত হয় কয়েকদিন আগে। তিনি পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সোমবার। মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তিন দিন এ হাসপাতালে আছি। ডাক্তাররা নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছেন। চিকিৎসা মোটামুটি ভালো চলছে। ডাক্তার-নার্স সবাই নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন।’
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন দপ্তর সূত্র জানায়, জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জেলায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৫৩ জন। এই সময়ের মধ্যে ৪৫৮ জনের শরীরে শনাক্ত হয়েছে ডেঙ্গু। তারা পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বেশির ভাগ সুস্থ হয়ে ফিরে গেলেও ৭৭ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসাধীন। এদের মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৫ জন, মির্জাগঞ্জে ছয়জন, দশমিনায় ১১ জন, বাউফলে ছয়জন, কলাপাড়ায় আটজন, গলাচিপায় আটজন ও দুমকিতে তিনজন রোগী ভর্তি।
এ ছাড়া ৫০ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন ২১ জন। এ ছাড়া মির্জাগঞ্জে ২১ জন, কলাপাড়ায় দু’জন, গলাচিপায় পাঁচজন ও বাউফলে একজন ডেঙ্গু চিকিৎসাধীন।
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.

দিলরুবা ইয়াসমিন লিজার ভাষ্য, তাদের হাসপাতালে প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগী বাড়ছে। ডাক্তার-নার্স সতর্ক আছেন। তারা যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন। এই চিকিৎসক সবাইকে সচেতন হতে ও রাস্তার পাশের শরবত, বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ডেঙ্গু আপাতত নিয়ন্ত্রণে থাকলেও সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। বাসাবাড়ির আশাপাশে জমানো পানি ফেলে দেওয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৬

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় যাত্রীবাহী সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার আনুমানিক বেলা আড়াইটার দিকে কবিরহাট আলিম মাদ্রাসার সামনে সোনাপুর–কোম্পানীগঞ্জ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের নাম–পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা আড়াইটার দিকে কবিরহাট বাজার থেকে যাত্রীবাহী একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটের দিকে যাচ্ছিল। অটোরিকশাটি কবিরহাট হাটবাজার পার হয়ে কবিরহাট আলীম মাদ্রাসার সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগামী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিশার চালকসহ তিনজন যাত্রী নিহত হন। এ ছাড়া হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

জানতে চাইলে দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বেলা আনুমানিক আড়াইটার দিকে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। দুর্ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন নারী, তিনজন পুরুষ।

ওসি জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। তবে এখনো নিহত ব্যক্তিদের কারও নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৬