নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইমাদির নতুনমহল্লায় তিন মাসের ঘর ভাড়া বকেয়া রয়েছে। ভাড়ার টাকা আদায় নিয়ে ভাড়াটিয়ার সঙ্গে বাড়ির মালিকের মারামারি হয়েছে। এতে প্রাণ গেছে আবুল বাসার নামে এক বাড়িওয়ালার। গতকাল সোমবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভাড়াটিয়ার পরিবারের তিন সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহীনূর আলম। আটক ব্যক্তিরা হলেন– সোহাগ হোসেন, তাঁর মা ফাতেমা বেগম ও স্ত্রী আলেয়া বেগম।

জানা গেছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে আবুল বাসারের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন সোহাগ হোসেনের পরিবারের সদস্যরা। ৩ মাস ধরে ঘর ভাড়া পরিশোধ করেননি ভাড়াটিয়া। এতে বাড়ির মালিক আবুল বাসার ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ছাড়ার কথা জানান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাঁটি হতো। সর্বশেষ সোমবার রাতে সোহাগ হেসেনের ভাড়া ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন বাড়ির মালিক। রাতে সোহাগ পরিবার নিয়ে বাসায় ফিরে ঘরের দরজায় তালা ঝুলতে দেখেন। তখন বাড়িওয়ালার ছেলে নাফিজকে গেট খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন সোহাগ। এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে তালা খুলে দেন নাফিজ। এর পরও কথা কাটাকাটি করতে থাকেন তারা। এ সময় তাৎক্ষণিক নাফিজের ছোট ভাই বাঁধন ঘটনাস্থলে এসে বাগ্বিতণ্ডায় যোগ দেন। দুই ভাই মিলে ভাড়াটিয়া সোহাগের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ান। ঝগড়া ও মারামারির সময় বাড়িওয়ালা আবুল বাসার এবং ভাড়াটিয়া সোহাগের স্ত্রী ও মা এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। ঝগড়া থামাতে গিয়ে ধস্তাধস্তি ও মারামারির একপর্যায়ে বাড়িওয়ালাকে সোহাগ মারধর করে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে আঘাত পান আবুল বাসার। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় ভাড়াটিয়া পরিবারের তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহীনূর আলম বলেন, তিন মাসের ঘর ভাড়া পাওনা নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন নিহত আবুল বাসারকে ভাড়াটিয়ারা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। তিনি আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে খানপুর হাসপাতালে মারা গেছেন। ভাড়াটিয়াদের আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বাগেরহাটে ভূমি কার্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তিন ভুয়া সাংবাদিক আটক

বাগেরহাটে সাংবাদিক পরিচয়ে ভূমি কার্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে যাওয়ার অভিযোগে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের পুরাতন বাজার এলাকার ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় (তহসিল কার্যালয়) থেকে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন মনিরুজ্জামান, মো. মোস্তফা শিকদার ও মো. নাসির সরদার। তাঁদের কাছ থেকে সাংবাদিক লেখা তিনটি আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। কার্ডের তথ্য অনুযায়ী, মনিরুজ্জামান এসটিভি বাংলার ক্রাইম রিপোর্টার, মোস্তফা ও নাসির সাপ্তাহিক তথ্য বাণী ও দৈনিক রূপবাণী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার।

বাগেরহাট সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম নুরুন্নবী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তাঁরা প্রথমে আমার দপ্তরে আসেন। তাঁরা সেখানে নাজির ও সার্ভেয়ারের খোঁজ করতে থাকেন। একই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যাওয়ার পথ জানতে চান। একপর্যায়ে তাঁদের একজন আমার অফিসের সার্ভেয়ারের কাছে বলেন যে তাঁদের কিছু টাকা দরকার, তাঁরা ঢাকা থেকে আসছেন। পরে সেখান থেকে তাঁরা পাশের তহসিল অফিসে যান। পরে খবর পেয়ে আমি সেখানে গেলে তাঁরা নিজেদের অবৈধ আইপি টিভির সাংবাদিক পরিচয় দেন। আমি নিজেও সাংবাদিকতার শিক্ষার্থী। আমি তাঁদের জিজ্ঞাসা করি, আইপি টিভির তো বৈধতা নেই। একপর্যায়ে তাঁরা বলেন, তাঁরা ঢাকা থেকে আসছেন, একটা মাদকের স্টোরি করার জন্য এবং এখানে এসে বসছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করে থানা-পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এসে তাঁদের আটক করে নিয়ে যায়।’

বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহামুদ-উল-হাসান বলেন, তাঁরা একটি প্রতারক চক্র। সাংবাদিকের ভুয়া পরিচয় দিয়ে তাঁরা টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ঢাকায় যাওয়ার ভাড়া নেই বলে তাঁরা টাকা চান। এ ঘটনায় ভুয়া পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান বলেন, কিছু ব্যক্তি সাংবাদিকতা পেশার পরিচয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন, যা প্রকৃত সাংবাদিকদের জন্য লজ্জাজনক। আটক তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাগেরহাটে ভূমি কার্যালয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে তিন ভুয়া সাংবাদিক আটক