বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হেনস্তা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেবে জবি প্রশাসন
Published: 24th, June 2025 GMT
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) যানবাহনে যাতায়াতকারী বাসে নবীন ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। এ ধরনের কাজে কেউ জড়িত প্রমাণিত হলে নিয়ম অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক তারেক বিন আতিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহনে যাতায়াতকারী ছাত্র-ছাত্রীদের জানানো যাচ্ছে যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। ফলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী ক্লাসে মনোনিবেশ করতে পারছেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ধরনের কার্যক্রম র্যাগিংয়ের পর্যায়ে পড়ে, যা শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের কার্যক্রমে জড়িত প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়ম অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক তারেক বিন আতিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ২৫টি বাস পরিদর্শন করে এসেছি। সতর্কবার্তা দিয়ে এসেছি, কেউ যাতে শিক্ষার্থীদের র্যাগিং না দেয়। বাসে কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।’
তারেক বিন আতিক আরও বলেন, ‘সে লক্ষ্যে শিক্ষার্থী-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে আমরা একটা জরুরি বৈঠক করব। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ বাসে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক বলেন, ‘আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং বাসে র্যাগিং কার্যক্রম বন্ধ হোক। যদি এ ধরনের অভিযোগে কারও সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মেলে, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এ ধরন র ব যবস থ য় র পর
এছাড়াও পড়ুন:
চা খেতে এক লাখ টাকা করে চাওয়া শুরু করেছে দুদক, অভিযোগ হাসনাতের
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা মিতুর কাছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তা ঘুস চেয়েছেন বলে দাবি করেছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’
মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ দাবি করেন হাসনাত। ওই পোস্টের সঙ্গে তিনি তিনটি ভিডিও ক্লিপ যুক্ত করেছেন।
‘স্বাধীন বাংলাদেশে দুদকের চা খাওয়ার বিল ১ লাখ টাকা’ শিরোনামে পোস্টে হাসনাত আবদুল্লাহ লেখেন, ‘আপনার নামে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ না থাকলেও সেটার ক্লিয়ারেন্স নিতে আপনাকে এক লাখ টাকা দিতে হবে। সম্প্রতি মাহমুদা মিতুর কাছে থেকে এই টাকা চাওয়া হয়েছে দুদকের ডিজি আকতার আর তার ডিডি পরিচয়ে। মাহমুদা মিতুকে বলা হয় আপনি একজন ডাক্তার, আপনার তো টাকা-পয়সার অভাব থাকার কথা না। আপনি এক লাখ টাকা দিয়ে ক্লিয়ারেন্স নিয়ে যান।’
তিনি লেখেন, ‘দুদকের সর্বনিম্ন রেট নাকি এক লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আকতার আবার ফোন দিয়ে জানতে চান টাকা দেবে কি না? টাকা না দিলে নাকি খবর করে ছেড়ে দেওয়া হবে। রেড ক্রিসেন্টে মাহমুদা মিতু যোগ দিয়েছেন ৫ আগস্টের পরে। দুদক এখন তদন্ত করছে আওয়ামী লীগের সময়ের দুর্নীতি নিয়ে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘অথচ হাস্যকরভাবে আওয়ামী আমলের কর্মকর্তাদের নাম না দিয়ে তখনকার দায় চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এখনকার লোকজনের ওপর। এখানে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেনের সমূহ সম্ভাবনা আছে। কিছু না করাদের কাছে থেকেই যদি এক লাখ করে নেয়, আওয়ামী লীগ আমলের কর্মকর্তাদের থেকে তাহলে কত করে নিয়েছে?’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, ‘দুদকের এসব কাজকারবার এই প্রথম না। শেখ হাসিনার আমলে খালেদা জিয়াসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকে এরা হয়রানি করেছে। অথচ আওয়ামী লীগের হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি নিয়ে এরা কিছুই বলেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ৫ আগস্টের পর এদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। কিন্তু আসেনি। বরং এরা এখন চা খাওয়ার জন্য এক লাখ করে টাকা চাওয়া শুরু করেছে। মাহমুদা মিতু সাহস করে ভিডিও করে রেখেছেন, অন্যায় ঘুস দেন নাই। কিন্তু কত সাধারণ মানুষ এদের এই চায়ের বিল দিতে বাধ্য হয়েছে জানা নেই।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার- মাহমুদা মিতু কেন, যদি আমার নামেও এক পয়সা দুর্নীতির অভিযোগ আসে, সেটা মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিন। কাউকে ফোন করারও দরকার নেই, দুর্নীতি পেলেই সেগুলো প্রকাশ করে মামলা করে দেন। আইনের হাতে তুলে দেন। তা না করে নিরীহ লোকজনের ওপরে এই চাঁদাবাজি কেন করছেন? কেন চা খাওয়ার বিল চান, কেন টাকা না দিলে হুমকি দেন? ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ চাই।’
হাসনাত বলেন, ‘শেখ হাসিনার করে যাওয়া দুর্নীতির পথে যেন আর কেউ না যেতে পারে সেজন্য দুদককেও আমরা নতুন রূপে দেখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নতুন বাংলাদেশেও দুদক সেই পুরোনো পথেই হাঁটা শুরু করেছে। আমলাতন্ত্র আবারও বিষদাঁত নিয়ে কামড় বসাতে হাজির হয়েছে। এই বিষদাঁত ভাঙতে না পারলে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন হেরে যাবে, আমরাও হেরে যাবো। আমরা দুদকের এই দুর্নীতির বিচার চাই। আমলাদের এক লাখ টাকার চা খাওয়ানোর জন্যই কি জুলাইতে বাংলাদেশের মানুষ জীবন দিয়েছিল?’