পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী মহাকাশ অভিযানের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাপ্রতিষ্ঠান নাসার মার্স সায়েন্স ল্যাবরেটরি মিশন। এ মিশনের প্রাণ হলো কিউরিওসিটি রোভার। ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর অ্যাটলাস ভি নামের রকেটে করে মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে রোভারটি। প্রায় ৯ মাসের দীর্ঘ মহাজাগতিক ভ্রমণের পর ২০১২ সালের ৬ আগস্ট রোভারটি মঙ্গল গ্রহের গেল ক্রেটারে সফলভাবে অবতরণ করে, যা ‘ব্র্যাডবেরি ল্যান্ডিং’ নামে পরিচিত।

মঙ্গল গ্রহে দুই বছর পর্যন্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য তৈরি করা হয়েছিল কিউরিওসিটি রোভার। তবে বিজ্ঞানীদের অবাক করে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে মঙ্গল গ্রহে কাজ করছে রোভারটি। নাসার তথ্যমতে, মঙ্গল গ্রহে কখনো অণুজীবের জীবনধারণের জন্য অনুকূল পরিবেশ ছিল কি না, তা খুঁজে বের করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে মানব অভিযানের জন্য মঙ্গল গ্রহের বিকিরণ স্তর পরিমাপ করছে রোভারটি। বর্তমানে রোভারটি গেল ক্রেটারের কেন্দ্রে অবস্থিত বিশাল মাউন্ট শার্প বা ইওলিস মন্সের স্তরের তথ্য সংগ্রহ করছে।

গাড়ির আদলে তৈরি কিউরিওসিটি রোভারটি ২.

৯ মিটার লম্বা, ২.৭ মিটার চওড়া ও ২.২ মিটার উঁচু। এর শক্তির উৎস সৌর প্যানেল নয়, বরং একটি অত্যাধুনিক মাল্টি-মিশন রেডিওআইসোটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর। এটি প্লুটোনিয়াম-২৩৮ মৌলে তেজস্ক্রিয় ক্ষয় থেকে বিদ্যুৎ তৈরি করে। এটিকে রাতের বেলা বা ধূলিঝড়ের সময়ও একটানা কাজ করতে পারে। কিউরিওসিটির চলাচলের জন্য ছয়টি চাকার একটি জটিল গতিশীলতা ব্যবস্থা রয়েছে। রোভারটির রোবোটিক বাহুতে ড্রিল করার এবং নমুনা সংগ্রহের ক্ষমতা রয়েছে।

গত সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মঙ্গল পৃষ্ঠে ৩৫ দশমিক ৯৭ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে কিউরিওসিটি রোভার। ২০১৮ সালে রোভারটি গেল ক্রেটারে থাকা ৩০০ কোটি বছরের পুরোনো শিলার নমুনায় বেনজিন ও প্রোপেনের মতো জৈব অণু আবিষ্কার করে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে এটি কাদাপাথরে দীর্ঘ-শৃঙ্খলের অ্যালকেন আবিষ্কার করে, যা জৈব বা অজৈব উৎস থেকে উদ্ভূত হতে পারে। রোভারটি এমন শিলা এবং কাদামাটির উপস্থিতি প্রমাণ করেছে, যা একসময় দীর্ঘস্থায়ী হ্রদ বা নদীর তলদেশ ছিল।

সূত্র: নাসা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

পেছনে কতটা কাজ করি, তা দেখাই না: জেফার

বর্তমান সময়ের আলোচিত সংগীতশিল্পী ও অভিনেত্রী জেফার রহমান। গানে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর অভিনয়েও পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু এবার এক ভিডিও বার্তায় জেফার মন খারাপ ও হতাশার কথা শোনালেন।  

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ৩ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডের ভিডিও বার্তায় নিজের দীর্ঘদিনের কষ্ট, পরিশ্রমের স্বীকৃতি না পাওয়া নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন জেফার। তার ভাষ্য, “অনেকেরই ধারণা, আমি শুধু গান করি—একজন কণ্ঠশিল্পী। এটা ঠিক আছে। কারণ আমরা শিল্পীরা পেছনে কতটা কাজ করি, সেটা দেখাই না। আপনারা জানবেন না, সেটাই স্বাভাবিক।” 

আরো পড়ুন:

বিয়ে স্থগিত: স্মৃতির সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ, মুখ খুললেন গায়কের মা

সাতপাকে বাঁধা পড়লেন কণ্ঠশিল্পী পূজা

তার কাজ শুধু গান গাওয়া নয়। এ তথ্য উল্লেখ করে জেফার বলেন, “সত্যিকার অর্থে আমি শুধু গান করি না। গান সুর করা, কথা লেখা, প্রস্তুতি, মিউজিক ভিডিও—সবকিছুতে আমাকে নিজে যুক্ত থাকতে হয়। আমার গানের ৯০ শতাংশই আমার নিজের সুর। লিরিক্সেও আমি অনেক সময় জড়িত থাকি।” 

মন খারাপের কথা জানিয়ে জেফার বলেন, “এত কষ্ট করে গান প্রকাশের পর প্রশংসা যেমন আসে, গালিও আসে। কিন্তু যখন মানুষ গানের পেছনে থাকা আমার পরিশ্রম বোঝে না, আমার অবদানটুকু দেখে না—তখন খুবই খারাপ লাগে। এটা মাঝে মাঝে মানসিকভাবে প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে এখন। তাই আজ এসব নিয়ে বলছি।” 

সবশেষে শিল্পীদের, বিশেষ করে নারী শিল্পীদের পাশে থাকার অনুরোধ জানান জেফার রহমান। তার বক্তব্য, “প্লিজ, শিল্পীদের সাপোর্ট করুন—বিশেষ করে নারী শিল্পীদের। আমাদের অনেক সামাজিক বাধা পেরিয়ে কাজ করতে হয়। তারপর নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্যে হতাশ হয়ে পড়ি। বাংলাদেশের মতো দেশে এই কাজ বেছে নেওয়া সহজ নয়… আপনাদের সামান্য সাহায্যই আমাদের এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করবে।”

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ