প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সদস্যদের নিয়ে সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে প্রস্তুতি নিচ্ছে। 

বুধবার (২৬ নভেম্বর) রাজধানীর পিলখানায় বিজিবির ৫ ব্যাটালিয়নের মাঠে আয়োজিত নির্বাচনকেন্দ্রিক মক এক্সারসাইজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

সিইসি বলেন, “এই বিশেষ প্রশিক্ষণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং ১৩ কোটি ভোটারের সমন্বিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।”

তিনি বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব কয়েক বছর পরপর আসে। তাই, প্রতিটি বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বিজিবির নিয়মিত কাজ সীমান্ত পাহারা হলেও নির্বাচনকালীন মহড়া তাদের জন্যও সমান জরুরি। 

তিনি জানান, পুলিশ ১৩০টি কেন্দ্রে নির্বাচন-সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পাশাপাশি আনসার, ভিডিপি ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও মহড়ায় অংশ নিচ্ছেন।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, “নির্বাচন প্রতিহতের ঘোষণা কেউ দিলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাংবাদিক, ভোটার ও সাধারণ মানুষ মিলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রতিরোধে সচেতন থাকতে হবে।”

সরকারের উপদেষ্টাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে সিইসি বলেন, এটি সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের বিষয়। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী তার দায়িত্ব পালন করবে।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা প্রসঙ্গে তিনি জানান, ঝুঁকি মূল্যায়ন সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রগুলোকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন—এই তিন জোনে ভাগ করে বাহিনী মোতায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিজিবি জানিয়েছে, নির্বাচনে সারা দেশে ১ হাজার ২১০ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন থাকবে। সন্দীপ, হাতিয়া ও কুতুবদিয়া ব্যতীত সব উপজেলায় বিজিবি দায়িত্ব পালন করবে। সীমান্তবর্তী ১১৫টি উপজেলার মধ্যে ৬০টিতে তারা এককভাবে দায়িত্বে থাকবে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ব চনক

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে দুই নাগরিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। ঘটনাগুলোকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে দুই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন দুটি। আজ রোববার গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছেন সংগঠন দুটির নেতারা।

বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের

আইন ও সালিশ কেন্দ্র তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গণমাধ্যমের সূত্রে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ডিবি পুলিশের হেফাজতে মুক্তার হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুই নাগরিকের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ঘটনায় আসক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

আসক মনে করে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব ও সাংবিধানিক কর্তব্য। এ ধরনের মৃত্যু আমাদের জাতীয় মানবাধিকার অঙ্গীকার, সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার প্রয়াসে নতুন করে আলোচনা ও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকা কোনো ব্যক্তির মৃত্যু অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। যেখানে হেফাজতে থাকা ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের আইনগত ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

আসকের হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা হেফাজতসহ, র‍্যাব, পিবিআই ও ডিবির হেফাজতে রাখা অবস্থায় দেশে কমপক্ষে ১৫ নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। এটা কেবল পরিসংখ্যান নয়, এটি দায়িত্বহীনতা, জবাবদিহির অভাব ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।

হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলোতে দায়ী ব্যক্তিদের দায় নিরূপণ করে আইনগত জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচারের অধিকার এবং আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করাও অত্যাবশ্যক।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ

একইভাবে ডিবি হেফাজতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। নিহত ওই দুই ব্যক্তি অভিযুক্ত আসামি ছিলেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বজনদের অভিযোগ, ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন মনে করে, গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দুটি মৃত্যুর বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি রাখে। কারণ, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা যেকোনো ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আইনি দায়িত্ব। এমএসএফ মোক্তার ও শাহাদতের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি অনতিবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরো ভালো হবে: সিইসি
  • নির্বাচন ঠেকাতে চাইবে যারা, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: সিইসি
  • সরকারের প্রতিশ্রুতি ও কাজে মিল দেখতে চাই
  • নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: নৌবাহিনী প্রধান
  • মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির ৫ সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি
  • ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি