শিল্পী সমিতিতে থাকার ইচ্ছা মরে গেছে: ওমর সানী
Published: 28th, June 2025 GMT
ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক ওমর সানী। যিনি একসময় পর্দায় এলেই দর্শকদের হৃদয়ে আলোড়ন তুলতেন, সেই তিনি আজ অনেকটা নীরব, আড়ালে। অভিনয়ে এখন আর আগের মতো নিয়মিত নন, তবে এখনো অপেক্ষা করেন একটি ভালো গল্প, একটি ভালো সিনেমার জন্য।
“আমাদের দেশে এখন ৫৫ পেরোলেই আমরা হয়ে যাই বয়স্ক। অথচ পাশের দেশে এই বয়সে অনেকে ক্যারিয়ার শুরু করেন,”—বলতে বলতে কণ্ঠে যেন ভেসে আসে আক্ষেপের সুর।
ওমর সানী বলেন, “আমি এখনো সিনেমা ছাড়িনি। কাজের অফার আসে, কিন্তু গল্পে মন ভরে না বলেই নিজেই না করে দেই।”
আরেকটু খোলাসা করে তিনি বলেন, “শিল্পী সমিতিতে আমি এখন এক মরা মানুষ। থাকলে সবাই জিজ্ঞেস করে নির্বাচন করব কি না। না থাকলে কেউ কিছু বলবে না। তাই, মিশাকে বলেছি, আমার মেম্বারশিপটা বাদ দিতে। আমার এখন আর ইচ্ছাও নেই, সেই ইচ্ছাটা যেন মরে গেছে।”
ওমর সানীর কথায় ঘনীভূত হয় অভিমান। তিনি বলেন,“নব্বইয়ের দশকে এ ক্যাটাগরির শিল্পী ছিল ১০০ জনের বেশি। এখন আছে হাতেগোনা কয়েকজন। যারা আছে, তারা থেকেও নেই। এখন অনেকেই ভাইরাল হতে সমিতির পেছনে ছুটছে। টার্গেট—চেয়ার, তারপর সেটাকে নানা কাজে ব্যবহার করা। এই খারাপ রাজনীতি শিল্পী সমিতিকে ধ্বংস করেছে।”
ওমর সানীর নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি হয়েছে ‘গরিবের রানী’সহ কয়েকটি চলচ্চিত্র। পর্দার বাইরে থেকেও তিনি ছিলেন সিনেমার ভেতরে। ছেলেকে পাঠিয়েছেন চলচ্চিত্র ও প্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনা করতে। আশা করেছিলেন, হয়ত ছেলে একদিন হাল ধরবে পারিবারিক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের।
কিন্তু বাস্তবতা আবারও অন্যকিছু বলে দেয়। তিনি বলেন, “সেদিন এফডিসিতে নির্বাচনের সময় শাকিব খানের ওপর হামলা হলো। আমার ছেলে তখন আমার সঙ্গেই ছিল। ভয়ে কাঁপছিল। বলছিল, বাবা, আমার কপাল ভালো না। আমি আর সিনেমায় কাজ করতে পারব না। চলচ্চিত্র নিয়ে পড়াশোনা করেও সে মুখ ফিরিয়ে নিল।”
ওমর সানী সর্বশেষ ‘ডেড বডি’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বর্তমানে নানারকম ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।
ঢাকা/রাহাত/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ওমর স ন
এছাড়াও পড়ুন:
হোয়াটসঅ্যাপ আসার আগে মায়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য অ্যাপ বানিয়েছিলাম
তখন হোয়াটসঅ্যাপ ছিল না। বাইরে থেকে বাংলাদেশে টেলিফোন করাটা ছিল এক বিরাট ঝক্কি। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রায়ই সময়ে অসময়ে আমাকে বাংলাদেশে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে হতো। টেলিফোন করার দু-একটা অ্যাপ আমার আইফোনে ছিল, কিন্তু সেগুলো ছিল খুব বাজে।
হঠাৎ লাইন কেটে যেত, ক্রেডিট কার্ড থেকে বেশি পয়সা কেটে নিতো। একসময় মনে হলো নিজেই একটা টেলিফোন অ্যাপ বানাই না কেন। যেহেতু আইফোন ব্যবহার করি, তাই নিয়েই শুরু করলাম।
কিছুদিন পড়াশোনা করে বুঝলাম, কাজটা সহজ নয়। আর বেশ সময়সাপেক্ষ। ভয়েসওভার টেলিফোন (ভিওআইপি) অ্যাপ্লিকেশন এমনিতেই বেশ জটিল ধরনের অ্যাপ। আর আমরা যেসব প্ল্যাটফর্মে কাজ করি, সেগুলো কতগুলো নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড ও প্রচলিত প্রটোকল মেনে চলে।
কিন্তু স্টিভ জব আপেলের জন্য সবকিছু নিজস্ব ধারায় করে গেছেন। আপেল তাদের প্ল্যাটফর্মে সব কিছুতে এখনো নিজেদের তৈরি কাস্টম মেনে চলে। তবু কাজ শুরু করলাম, দেখা যাক কতটুকু যাওয়া যায়!
অ্যাপের নাম দিলাম ‘কলকরো’প্রথমে স্ক্রিনের কাজ, যেমন ডায়াল প্যাড ও বিভিন্ন আইকন। যুক্তরাষ্ট্রে এসব গ্রাফিকসের কাজ খুব ব্যয়বহুল। ঠিক করলাম, বাইরের ফ্রিলান্সার দিয়ে করাব। ইন্টারনেটে ফ্রিলান্সারদের ভালো কিছু প্ল্যাটফর্ম আছে। আমার পছন্দ ‘আপওয়ার্ক’। কী কী লাগবে তার বিবরণ দিয়ে একটা ‘প্রয়োজন’ পোস্ট করলাম।
দুই দিনের মধ্যেই সারা দুনিয়ার গ্রাফিকস ডিজাইনার হাজির! দুজনকে বাছাই করে কয়েক দিন ধরে তাঁদের সঙ্গে আমার প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারগুলো নিয়ে কথা বললাম। দুজনের মধ্যে ইউক্রেনের ডিজাইনার ছিলেন ব্যয়বহুল।
তাঁকে বাদ দিয়ে ভারতীয় একজন ডিজাইনারকে নিয়োগ দিলাম। এখানে বলে রাখি, ফ্রিলান্সারের পারিশ্রমিক ও টাকাকড়ির লেনদেন সব আপওয়ার্ক ব্যবহার করে করা হয় এবং একটা অংশ তারা কমিশন হিসেবে কেটে নেয়।
গ্রাফিকস ডিজাইন এমন কাজ যে একবারে তৃপ্ত হওয়া যায় না, বারবার আরও ভালো করার চেষ্টা চলতে থাকে। একসময় ডিজাইন শেষ হলো। স্ক্রিন লে–আউট ডিজাইনও বেশ কষ্টসাধ্য। পরের ধাপগুলো ছিল রুটিন—আপেল এপিআই ব্যবহার করে ব্যাকগ্রাউন্ড সার্ভিসগুলো তৈরি করে ব্যবহারকারী ও ব্যাকগ্রাউন্ড সার্ভিসের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি।
অ্যাপস্টোরে ‘কলকরো’ অ্যাপ