এনবিআরের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান শুরু
Published: 29th, June 2025 GMT
ঘুষের বিনিময়ে কর দাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিয়ে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি এবং ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকির মিথ্যা মামলা দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানিসহ নানা অভিযোগে রাজস্ব বোর্ডের ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
যাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে তারা হলেন এনবিআরের সদস্য (আয়কর নীতি) এ কে এম বদিউল আলম, অতিরিক্ত কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি মির্জা আশিক রানা, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, যুগ্ম কর কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সহসভাপতি মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, অতিরিক্ত কমিশনার ও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান তারেক রিকাবদার ও অতিরিক্ত কমিশনার ও সংস্কার ঐক্য পরিষদের সদস্য সাধন কুমার কুন্ডু।
রবিবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে কমিশনের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
এনবিআরের যে ৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে তারা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতা। তারা এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
রাজস্ব বোর্ডের সংস্কারে চলমান আন্দোলন থামাতে অনুসন্ধান কিনা এক প্রশ্নের জবাবে আক্তার হোসেন বলেন, ‘‘শুধু তাদের নয়, এনবিআরের আরও অনেক কর্মকর্তার বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান চলছে। চলমান অনুসন্ধানে অংশ হিসেবে দুদক এটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে সরকারের কোনো চাপ নেই।’’
অভিযোগ রয়েছে, এনবিআরের ছয় কর্মকর্তাসহ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কতিপয় কর্মকর্তা কর ও শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে কর দাতাদের কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তাগণ নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য নির্ধারিত পরিমাণ কর আদায় না করে তাদের করের পরিমাণ কমিয়ে দিতেন। এ ক্ষেত্রে, প্রতি বছর সরকার বিপুর পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে কর্মকর্তাগণ ঘুষ না পেয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার মিথ্যা মামলা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মালিককে হয়রানি করেন।
অভিযোগ আছে, অনেক করদাতা আগাম কর দেন আবার কেউ কেউ বেশি কর দেন। নিয়ম হচ্ছে এই কর হিসাব-নিকাশ করার পর বেশি দেওয়া হলে তা ওই করদাতাকে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ আর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, করের বাড়তি টাকা ফেরত পেতে আরো অন্তত অর্ধেক টাকা ঘুষ বা উপহারে খরচ হয়।
অভিযোগ রয়েছে, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর কর্মকর্তারা করের টাকা ফেরত দিতে নিজেরাও কামিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা। বিগত ২০-২৫ বছর ধরে বিভিন্ন স্টেশনে চাকরিকালীন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে শুল্ক, ভ্যাট ও কর ফাঁকির সুযোগ করে দিয়ে ও নিজে লাভবান হয়ে রাষ্ট্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মাধ্যমে দুর্নীত, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন এমন অভিযোগে এনবিআরের উক্ত ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে শুরু করে দুদক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত র ব র ব আর র
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
নেত্রকোনায় সাংবাদিক লুৎফুজ্জামান আলিফের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় জেলা প্রেসক্লাবের সামনে নেত্রকোনা সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও চ্যানেল আইয়ের প্রতিনিধি জাহিদ হাসানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সাধারণ সম্পাদক নাজমুস শাহাদৎ, জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের জেলা কমিটির সভাপতি পারভেজ, হামলার শিকার লুৎফুজ্জামান আলিফ প্রমুখ।
লুৎফুজ্জামান আলিফ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রূপসী বাংলার নেত্রকোনা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১০ নভেম্বর দুপুরে লুৎফুজ্জামান আলিফ ও তাঁর সহকর্মী শাহজাহান শেখ জেলার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী পার হয়ে একটি ভাড়া মোটরসাইকেলে নদীর তেরিবাজার ঘাটে নামেন। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে করে চারজন ব্যক্তি সেখানে যান। তাঁদের মধ্যে দুজন চাপাতি হাতে লুৎফুজ্জামানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। সঙ্গে থাকা শাহজাহান শেখ বাধা দিতে গেলে তাঁকেও কোপানোর চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয় লোকজন লুৎফুজ্জামানকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি পরে ঢাকায় চিকিৎসা শেষে গতকাল বাড়ি ফেরেন।
এ ঘটনায় লুৎফুজ্জামান বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছেন। এতে দুর্গাপুর পৌরশহরের পশ্চিম মোক্তারপাড়া এলাকার ইমরান ইসলাম ওরফে ইমন (২৩) ও পুলিশ মোড় এলাকার মো. সৌরভের (২৩) নামোল্লেখ করে এবং আরও চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।