মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করা ব্যক্তিদের আশ্রয় প্রার্থনার অধিকার সীমিত করতে চাওয়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ স্থগিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক। প্রতিবছর অন্তত ৫০০ বাংলাদেশি এই সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন।

স্থানীয় সময় বুধবার ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের বিচারক র‍্যান্ডলফ ড্যানিয়েল মস ১৪ দিনের জন্য এ আদেশ স্থগিত করেছেন। ট্রাম্প প্রশাসন এ সময়ে আপিল না করলে ১৬ জুলাই থেকে আদেশটি কার্যকর হবে এবং আশ্রয় চাওয়ার অধিকার ফিরে আসবে।

তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আবিগেইল জ্যাকসন এক বিবৃতিতে জানান, ট্রাম্প প্রশাসন এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে। তাঁর ভাষায়, ‘একজন জেলা বিচারকের রায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার বিচারক মসকে কটাক্ষ করে ‘মার্ক্সবাদী’ বলে মন্তব্য করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মিলার লেখেন, ‘এই রায় ভবিষ্যতে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ করে দেবে।’

বিচারক মস তাঁর ১২৮ পৃষ্ঠার রায়ে বলেন, ‘এই নির্বাহী আদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন (আইএনএ) এবং সংবিধানের পরিপন্থী। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে প্রত্যেক ব্যক্তির আশ্রয় চাওয়ার অধিকার আছে, সে বৈধভাবে এসেছেন কি না, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়।’

আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন (এসিএলইউ) গত ফেব্রুয়ারিতে এই মামলা করেছিল। সংস্থাটি জানায়, ট্রাম্পের আদেশ আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ আইন লঙ্ঘন করে।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির কারণে সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশের হার ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। আদালতের তথ্য বলছে, ২০২৫ সালের জুন মাসে সীমান্তে ৬ হাজারের কম আটকের ঘটনা ঘটেছে, যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার ইঙ্গিত দেয়।

দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে বহু মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয়ের আশায় মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে হেঁটে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এই পথে এশিয়া থেকেও প্রায় ৫ শতাংশ অভিবাসনপ্রত্যাশী আসেন।

উল্লেখ্য, বিচারক র‍্যান্ডলফ ড্যানিয়েল মস সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রশাসনের সময়ে নিয়োগ পেয়েছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র প রব শ র ব চ রক

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’

ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আঘাত হানতে যাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’। মঙ্গলবার রাতে এটি আঘাত হানবে বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়া দপ্তর। খবর আনন্দবাজার অনলাইন।

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরো পশ্চিম-উত্তর পশ্চিম দিকে সরবে এবং শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তখন তার নাম হবে মোন্থা। উত্তর-উত্তর পশ্চিমে সরতে সরতে ২৮ অক্টোবর সকালের মধ্যে ‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে মোন্থা। ২৮ তারিখ রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনম এবং কাকিনাড়ার কাছে কলিঙ্গপত্তনমের মধ্যবর্তী উপকূলে তা স্থলভাগে আছড়ে পড়বে। এই সময়ে উপকূলবর্তী এলাকায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি থাকবে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছে যেতে পারে ১১০ কিলোমিটারে। এর ফলে অন্ধ্রপ্রদেশ তো বটেই, তামিলনাড়ু, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের কিছু অংশে ঝড়বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

সাধারণত ঘূর্ণিঝড় পুরোপুরি তৈরি হয়ে না গেলে আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম ঘোষণা করা হয় না। কিন্তু বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণিঝড়গুলোর জন্য আগে থেকেই একাধিক নাম স্থির করা হয়েছে। এক-একটি দেশের দেওয়া নাম ক্রমানুসারে ব্যবহৃত হয়। সেই ক্রম অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরের পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের নাম হওয়ার কথা মোন্থা। এ ক্ষেত্রে সেই নাম ব্যবহার করা হচ্ছে। মোন্থা নামটি থাইল্যান্ডের দেওয়া। এই শব্দের অর্থ ‘সুন্দর সুগন্ধী ফুল’।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তালিকায় রয়েছে হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ। এ ছাড়া, কলকাতার জন্যেও আবহাওয়া সংক্রান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কলকাতায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বইবে। বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গের কিছু জেলায়।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ