যেন ঝড় তুলেছিল লাল-সবুজের মেয়েরা। প্রতিপক্ষ তুর্কমেনিস্তান, যাদের র‍্যাঙ্কিং ১৪১। নারী এশিয়ান কাপের ‘সি’ গ্রুপে সবচেয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ ধরা হয় যাদের। মিয়ানমারের কাছে আগেই ৮-০ গোলে উড়ে যাওয়া দলটির সামনে আজ শনিবার যেন ধ্বংসের আরেক নাম হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।

ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ যেন একেকটা গোল নয়, গাঁথছিল সম্মোহনী ফুটবল দিয়ে রচিত একেকটি মুহূর্ত। প্রথমার্ধ শেষ হতেই স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৭-০। এমন গোলবন্যা দেখে মনে হয়েছে যেন বাংলাদেশ ফুটবলের এক নতুন ফেনোমেনন হয়ে উঠেছে।

গোল উৎসবে জোড়া গোল করেছেন ঋতুপর্ণা ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। মনিকা চাকমা, তহুরা খাতুন ও স্বপ্না রানী ছিলেন বাকি গোলদাতাদের তালিকায়।

এশিয়ান কাপের মূলপর্বে আগেই জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। তাই তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ ছিল কেবল নিয়মরক্ষার। কিন্তু কোচ পিটার বাটলার যেন এক সেকেন্ডের জন্যও খেলোয়াড়দের শিথিল হতে দেননি। আগের দুই ম্যাচের একাদশই নামিয়েছিলেন মাঠে। তার কৌশল যে কতটা কার্যকর ছিল, তা বুঝিয়ে দিলেন মেয়েরা মাঠে।

তিন মিনিটেই প্রথম আঘাত করেন স্বপ্না রানী। বক্সের বাইরে থেকে তার দূরপাল্লার দুর্দান্ত শট ঠেকাতে ব্যর্থ হন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। এরপর যেন একের পর এক ঢেউ আছড়ে পড়ে তুর্কমেনিস্তানের ডিফেন্সে।

৬ ও ১৩ মিনিটে দুইবার গোল করে শামসুন্নাহার জুনিয়র দেখালেন কেন তিনি দলের নির্ভরতার নাম। দ্বিতীয় গোলটি আসে গোলরক্ষকের এক ব্যর্থ ক্লিয়ারেন্স থেকে, আর তৃতীয়টি বাম দিক থেকে আসা শামসুন্নাহার সিনিয়রের নিখুঁত ক্রস থেকে।

১৬ মিনিটে বাম পায়ের গর্জনে গোল করেন মনিকা চাকমা, যা টুর্নামেন্টে তার প্রথম গোল। এরপর ১৮ মিনিটে স্কোরশিটে নাম তোলেন ঋতুপর্ণা। টুর্নামেন্টে এটি ছিল তার চতুর্থ গোল।

২০ মিনিটে বাম দিক থেকে ঋতুপর্ণার আসা পাস ধরে আলতো টোকায় তহুরা করেন ষষ্ঠ গোল। যা তার ব্যক্তিগত ষষ্ঠ গোল এই প্রতিযোগিতায়। ৪০ মিনিটে আবারও ঋতুপর্ণার জাদু। কর্নার থেকে আসা মনিকার বলটি ধরে দারুণ নিখুঁত ফিনিশিংয়ে তিনি তার দ্বিতীয় এবং দলের সপ্তম গোলটি করেন।

প্রথমার্ধেই ৭ গোল করে বাংলাদেশ যেন স্পষ্ট বার্তাই দিলো তারা এখন আর কেবল অংশগ্রহণকারী দল নয়, তারা চায় প্রতিদ্বন্দ্বী হতে। প্রতিপক্ষ দুর্বল হলেও যে ছন্দে এবং আত্মবিশ্বাসে খেলেছে বাংলাদেশ, তাতে আগামী দিনের জন্য আশার আলো দেখছেন অনেকেই। 

ঢাকা/আমিনুল//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র কম ন স ত ন গ ল কর প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন

অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।

এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।

আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।

অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’

ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।

অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।

কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’

এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।

আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার 
  • আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
  • সম্পদ বৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন করায় সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপলেন ট্রাম্প
  • ‘আমি থানার ওসি, আপনার মোবাইল হ্যাকড হয়েছে’
  • অস্ট্রেলীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে কেন চটে গেলেন ট্রাম্প, আলবানিজের কাছে নালিশেরও হুমকি দিলেন
  • কালিয়াকৈরে এক মাসে ২০ ডাকাত গ্রেপ্তার 
  • বাঁশির সুরে বিরহের কষ্ট ভুলতে চান রিকশাচালক শফিকুল
  • রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
  • ট্রেন থেকে পড়ে ৮ দিন ধরে হাসপাতালে ছেলে, ফেসবুকে ছবি দেখে ছুটে এলেন মা
  • ভাড়া বাসায় একা থাকতেন বৃদ্ধা, তার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার