নির্বাচনে যাদের ভরাডুবি হবে, তারাই পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়: সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স
Published: 6th, July 2025 GMT
কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচনে বিপর্যয়ের আশঙ্কা করে নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে এসে জটিলতা করে নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়। ভোটের সংখ্যানুপাতে সংসদের আসন তথা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের ধুয়া তুলে বিতর্ক সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্যে ফাটল ধরানো হচ্ছে। পিআর পদ্ধতিতে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে যেমন জনগণের অধিকার হরণ হয়, তেমনি দেশে আবার দলীয় কর্তৃত্ববাদ, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ কায়েমের পথ প্রশস্ত হবে। নির্বাচনে যাদের ভরাডুবি হবে, তারাই পিআর পদ্ধতিতে ভোট চায়।
আজ রোববার সকালে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা, ইউনিয়ন ও বিভিন্ন কলেজ ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ। এ ছাড়া এমরান সালেহ প্রিন্স দুপুরে উপজেলা ও ইউনিয়ন মহিলা দল এবং বিকেলে উপজেলা ও ইউনিয়ন ওলামা দলের নেতাদের সঙ্গে পৃথক পৃথক মতবিনিময় সভা করেন।
ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, যারা বলে বিএনপি শুধু নির্বাচন নির্বাচন করছে, তারা জনগণ ও নির্বাচনকে ভয় পায়। সে জন্য তারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে কূটকৌশল করছে। বিএনপি নির্বাচন ও জনগণকে ভয় পায় না। বিএনপি দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে, দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি, নিরাপত্তা এবং জন–আকাঙ্ক্ষা ও গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের স্বার্থে দ্রুত নির্বাচন চায়।
বিএনপি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে সংস্কার ও ফ্যাসিস্টদের বিচার ত্বরান্বিত করতে চায়।
এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান রোধে বিএনপি প্রশ্নাতীতভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ দ্বারা দেশের সঙ্গে সঙ্গে বিএনপিও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের মোকাবিলা করে বিএনপি টিকে আছে। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের আর পুনরুত্থান যাতে না ঘটে, সে জন্য আন্তরিকভাবেই বিএনপি সংস্কার চায়। কিন্তু সংস্কারের নামে অযৌক্তিক ও জনসম্পৃক্ততাহীন নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি নির্বাচন বিলম্বিত করার যড়যন্ত্র।
নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে প্রিন্স আরও বলেন, আগামী দিনে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত থাকতে হবে। শত শহীদের রক্তে, গুম, খুনের শিকার সহকর্মীদের আত্মত্যাগে আর লাখো নেতা-কর্মীর অবর্ণনীয় দুঃখে ফ্যাসিবাদের অবসান হলেও পরিপূর্ণ বিজয় অর্জন হয়নি। দ্রুত নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। তবেই পরিপূর্ণ বিজয় ও গণ–অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথ প্রশস্ত হবে।
ধোবাউড়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় ধোবাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মফিজ উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক আযহারুল ইসলাম, সদস্যসচিব আনিসুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসেন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এমর ন স ল হ প র ন স ছ ত রদল র ব ত কর উপজ ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”
দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”
নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”
রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।
ঢাকা/কেয়া/রফিক