পাবনার সুজানগরে মুঠোফোনে ছেলে-মেয়ের কথা বলা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের পাবনা জেনারেল হাসপাতাল ও সুজানগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে উপজেলা সদরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়।

আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব শেখ আবদুর রউফ (৫০), চর সুজানগর গ্রামের সুজন আলী (৩৫), শেখ মনজেদ আলী (৩০), আবদুর রহমান (৪৫), রিয়াজ খান (২৫), টিক্কা খান (৬০), চর ভবানীপুরের ইয়াকুব আলী (৫৬), আলহাজ হোসেন (৪০), সবুজ খাঁ (৩০), মাস্টারপাড়ার শাকিল খাঁ (২৫), যুবদল কর্মী মানিক খাঁ (৩৫), পাবনা সদরের চরতারাপুরের কাচারিপাড়া গ্রামের তুষার হোসেন (৪০), আসলাম হোসেন (৪৫) ও মনজিল হোসেন (৩০)। অন্যদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার ফোনে এক নারীর সঙ্গে কথা বলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মজিবর খাঁর অনুসারী ও উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আবদুর রউফ শেখের ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাউছার হোসেন। এ নিয়েই বিরোধের শুরু। কাউছার বিষয়টি মীমাংসার জন্য ছাত্রদল নেতা সবুজকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হয়। এ সময় সবুজ নামের আরেক ছাত্রদল নেতা বাধা দিতে গেলে তাঁকে মারধর ও ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে বিষয়টি অভিভাবক ও বিএনপি নেতাদের জানালে তাঁরা দলবদ্ধভাবে এসে কাউছারদের ওপর হামলা করেন। এ সময় আবদুর রউফ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে থামাতে গেলে তাঁকে কুপিয়ে ও মারধর করে আহত করা হয়। ঘটনার সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতাল এবং অন্যদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আবদুর রউফ শেখ ও মজিবর খাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তৌফিক ইমাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা রাজনৈতিক কোনো দ্বন্দ্ব নয়। ব্যক্তিগত বিরোধ। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবর রহমান বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলে আসছে। আজকের এই ঘটনা তাঁদের কাছে এখনো স্পষ্ট নয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। পুলিশ বিষয়টির তদন্ত করছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ র রউফ স জ নগর ব এনপ র ব ষয়ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

যাত্রাবাড়ীতে বৃদ্ধকে হত্যা, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন শনাক্তের দাবি পুলিশের

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় গ্রিল কেটে বাসায় ঢুকে ইসমাইল খান নামের এক বৃদ্ধকে হত্যা এবং তাঁর স্ত্রী সালেহা বেগমকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তবে ঘটনার বিস্তারিত জানতে ওই বাসার সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।

যাত্রাবাড়ী থানা সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ওই দিনের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এখন তাদের নাম ও পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত পরিবারের কেউ মামলা করেনি। পুলিশ ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে। তদন্তের কিছু অগ্রগতিও আছে। মামলা হলে তারপর হয়তো ঘটনার বিস্তারিত বের করা যাবে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইসমাইল খান ও সালেহা বেগম যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা এলাকায় ‘খান ভিলা’ নামে নিজেদের চারতলা বাড়ির দ্বিতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। মঙ্গলবার ভোররাত চারটার দিকে ফ্ল্যাটের পেছনের জানালার গ্রিল কেটে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করতে বাসায় ঢোকে। এই দম্পতি টের পেলে তাঁদের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। একপর্যায়ে ইসমাইল খানকে মারধর ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। আর সালেহা বেগমকে ছুরি দিয়ে পায়ে আঘাত করা হয়। পরে সালেহা বেগমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চিকিৎসকেরা ইসমাইল খানকে মৃত ঘোষণা করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ