গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়াল
Published: 12th, July 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের মোট সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮০০ ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার (১১ জুলাই) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৬১ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩১ জন আহত হয়েছেন। এর ফলে গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোট ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৫৭ হাজার ৮২৩ জনে পৌঁছেছে। একইসঙ্গে অবরুদ্ধ নগরীতে আহতের সংখ্যা এখন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৮৮৭ জনে পৌঁছেছে।
মন্ত্রণালয় আরো জানিয়েছে, নিহত ও আহতের প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি। কারণ অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।
আরো পড়ুন:
ফিলিস্তিনিদের ওপর নিষ্ঠুর অমানবিকতার শেষ কোথায়?
ইসরায়েলের সমালোচনা করায় জাতিসংঘের বিশেষ দূতের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে বড় ধরনের হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি, এই হামলায় প্রায় ১২০০ নিহত ও দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস যোদ্ধারা। এর জবাবে ওই দিনই গাজায় বিমান হামলা ও পরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
দীর্ঘ ১৫ মাস ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পর যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় হামাস ও ইসরায়েল। তবে এই যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় ফের তীব্র হামলা শুরু করে ইসরায়েল।
গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৭ হাজার ২৬১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৫ হাজার ৮৪৬ জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘ বলছে, ইসরায়েলের ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং প্রায় ৮৫ শতাংশ জনসংখ্যা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
গাজায় ইসরায়েলি হামলা নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যা বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে রায় উপেক্ষা করে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল ম নব ক
এছাড়াও পড়ুন:
ভাঙছে পাড়, ঝুঁকিতে শতকোটি টাকার সেতু
নদী শাসন বাঁধ না থাকায় বর্ষার শুরুতেই ভাঙন দেখা দিয়েছে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে। সেতুর খুব কাছেই নদের পাড়ে ভাঙন শুরু হওয়ায় উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা।
উৎরাইল-শিবচর প্রধান সড়কের আড়িয়াল খাঁ নদের উপর নির্মিত সেতুটির নয়াবাজার পাড়ের দক্ষিণপাশে নদের পাড়ে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু জায়গা ভেঙে নদী গর্ভে চলেও গেছে। সেতুর একটি পিলার থেকে একশ’ ফুটেরও কম দূরত্বে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে।
২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৮০ মিটার প্রস্থের সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণের ফলে শিবচর সদরের সাথে দত্তপাড়া, শিরুয়াইল, নিলখী ইউনিয়নের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হয়। এতে অত্র অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হয়।
সম্প্রতি আড়িয়াল খাঁ নদে পানি বৃদ্ধির ফলে বেড়েছে স্রোতের তীব্রতা। সেতুর কাছে নদের পাড় ঘেঁষে সৃষ্টি হয়েছে ঘূর্ণিস্রোত। ফলে সেতুর কাছেই নদের পাড়ের বেশকিছু জায়গা ভেঙে গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পাড় ভেঙে নদী কিছুটা ভেতরে ঢুকে গেছে। একটি গাছ রয়েছে নদের পাড়ে। যেকোন সময় গাছটিও নদের গর্ভে চলে যেতে পারে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকদিন আগে হঠাৎ ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর এই স্থানটিতে পানির চাপও অনেক। পাড় ঘেঁষে তৈরি হয় ঘূর্ণিস্রোত। একারনেই পাড় ভাঙছে। সেতুটির খুব কাছে এভাবে নদী ভাঙন আতংকের বিষয়। সেতুর পাড়ে নদী শাসন বাঁধ থাকে। অথচ এখানে নদী শাসন বাঁধ দেওয়া গয়নি। নদীতে পানি বাড়লে ভাঙন আরও বাড়তে পাড়ে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সেতুটি।
শিবচর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে আড়িয়াল খাঁ নদের উপর ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৮০ মিটার প্রস্থের সেতুটিতে স্প্যান সংখ্যা ১১টি এবং পিলার সংখ্যা নয়টি। সেতুটির পাইলের সংখ্যা ১২৩টি, পাইলের দৈর্ঘ্য ৪৮ মিটার। সেতুর জন্য অ্যাপ্রোচ সড়কের (সংযোগ সড়ক) দৈর্ঘ্য ১.৫০ কিলোমিটার।
৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. মইন উদ্দীন বাঁশি ও হা-মিম ইন্টারন্যাশনাল। ২০২৩ সালের ৪ নভেম্বর সেতুটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
গিয়াস উদ্দিন মীর নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘সেতুর দুইপাড়ে নদী শাসন বাঁধ সেতু নির্মানের পূর্বেই দেওয়া উচিত ছিল। সেতু চালু হয়েছে প্রায় দেড় বছর। অথচ নদী শাসন বাঁধ দেওয়া হয়নি। এখন নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সেতুর কাছেই পাড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এটা উদ্বেগের বিষয়। পানি বাড়লে ভাঙন বাড়তে পারে। যা সেতুর জন্য হুমকি।”
এ ব্যাপারে শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভীন খানম বলেন, “এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/বেলাল/এস