Prothomalo:
2025-07-30@09:45:26 GMT

জিংকের অভাবে ভুগছেন না তো

Published: 24th, July 2025 GMT

জিংক এমন এক পুষ্টি উপাদান, যা রোজ অল্প পরিমাণে গ্রহণ করলেই আপনি সুস্থ থাকতে পারবেন। এ ধরনের পুষ্টি উপাদানকে বলা হয় মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুললে সাধারণত আলাদাভাবে জিংকসমৃদ্ধ নির্দিষ্ট কোনো খাবার গ্রহণ করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে কেউ কেউ এই পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতেও ভুগতে পারেন। জিংকের অভাবে সাধারণ কিছু উপসর্গ দেখা দেয়, অনেক সময় যেসবকে কোনো পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

জিংক আমাদের দেহের নানা ক্রিয়াবিক্রিয়ায় অংশ নেয়। জিংকের অভাব হলে এসব ক্রিয়াবিক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। তারই কিছু উপসর্গ দেখা দেয় আমাদের দেহে। স্নায়ুর কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতেও পর্যাপ্ত জিংক প্রয়োজন। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানালেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান

আরও পড়ুনহিসাবের চেয়েও কম বা বেশি হতে পারে আপনার দেহের বয়স, কীভাবে২২ জুলাই ২০২৫যেসব সমস্যা দেখা দেয়

জিংকের ঘাটতি হলে কিছু উপসর্গ প্রায় সবারই হতে পারে, তবে কিছু সমস্যা আবার নির্দিষ্ট বয়স বা পরিস্থিতিতেই দেখা যায়। এ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

জিংকের অভাবে প্রায়ই ডায়রিয়া হতে পারে। এই পুষ্টি উপাদানের অভাবে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই বারবার নানা ধরনের সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

ত্বকে বারবার ব্রণ বা পিম্পলের মতো ক্ষত সৃষ্টি হওয়া কিংবা যেকোনো ক্ষত সহজে না শুকানোর মতো সমস্যাও দেখা যেতে পারে।

কম বয়সেই ত্বকে পড়তে পারে বয়সের ছাপ।

চুলের গড়ন বেশ পাতলা হয়ে যেতে পারে জিংকের অভাবে।

ক্ষুধামান্দ্য দেখা দিতে পারে। ওজন কমে যেতে পারে।

স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতিতে অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে।

কাজে মনোযোগ দেওয়ার ক্ষমতাও বিঘ্নিত হতে পারে। ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

শিশুদের ক্ষেত্রে জিংকের ঘাটতি খুব বেশি হলে শারীরিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

সন্তান নিতে ইচ্ছুক দম্পতির যে কারও জিংকের ঘাটতি থাকলে সন্তানধারণের চেষ্টা বিফল হতে পারে।

আরও পড়ুনকেন মিলেনিয়াল ও জেন-জিদের মধ্যে বাড়ছে কলোরেক্টাল ক্যানসার২২ জুলাই ২০২৫কারা আছেন ঝুঁকিতে

অন্তঃসত্ত্বা নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির ক্ষেত্রে জিংকের ঘাটতি হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে যেকোনো বয়সী মানুষই জিংকের ঘাটতিতে ভুগতে পারেন। যদি কারও খাওয়াদাওয়া ঠিকঠাক না হয় কিংবা পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ সত্ত্বেও কোনো রোগের কারণে অন্ত্র থেকে পর্যাপ্ত জিংক দেহে শোষিত না হয়, তাহলে জিংকের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তবে এ ধরনের কোনো রোগ না থাকলে কেবল বয়স অনুযায়ী সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখলেই আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন।

উপসর্গ দেখা দিলে

উপসর্গ দেখে যদি মনে হয়, আপনি জিংকের ঘাটতিতে ভুগছেন, তাহলে নিজের খাদ্যাভ্যাসের দিকে মনোযোগ দিন। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, যেকোনো ধরনের বাদাম, গোটা শস্য, চানাবুট, রাজমা, শিম, মটরশুঁটি, কুমড়ার বীজ, বিভিন্ন ধরনের ডাল, মাশরুম প্রভৃতিতে আপনি জিংক পাবেন।
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা শুরু করার কিছুদিন পরও সমস্যাগুলো থেকে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এসব উপসর্গের পেছনে অন্য কোনো সমস্যাও দায়ী থাকতে পারে, যা চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করবেন। তবে নিজে থেকে জিংকের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করবেন না। হিতে বিপরীত হতে পারে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত জিংক গ্রহণ করলে দেহে অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের শোষণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ফলে অন্য কোনো পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা যেতে পারে।
বাড়ন্ত শিশুর শরীরে জিংকের ঘাটতি দেখা দিলে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কথা ভাবার আগেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ, এ ক্ষেত্রে দেরি করলে শিশুর বৃদ্ধির সুবর্ণ সময়টা হারিয়ে যেতে পারে।

আরও পড়ুনমাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্তের পর ছেলের খোঁজে রুদ্ধশ্বাস ৪ ঘণ্টা২২ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপসর গ দ খ ব ধ গ রস ত উপ দ ন র ধরন র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

জরায়ুর ফাইব্রয়েড কতটা ভয়ের

প্রতিবছর জুলাই মাস বিশ্বব্যাপী ‘জরায়ুর ফাইব্রয়েড সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালিত হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য নারীদের মধ্যে জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা টিউমার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো, এর সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সুস্থ জীবনযাত্রার গুরুত্ব তুলে ধরা।

ফাইব্রয়েড হলো জরায়ুর একধরনের নন ক্যানসারাস টিউমার বা মাংসপিণ্ড, যা প্রজননক্ষম নারীদের হতে পারে। লেইওমায়োমা বা মায়োমা নামেও এটি পরিচিত। জরায়ুতে নানা ধরনের টিউমারের মধ্যে বেশি দেখা যায় ফাইব্রয়েড। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিরীহ হয়। তবে সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না করলে জীবনমানের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে।

লক্ষণ বা উপসর্গ

এই টিউমার লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যায় পেটের আলট্রাসাউন্ড করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তবে যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে—

অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় ধরে ঋতুস্রাব।

তলপেটে চাপ বা ব্যথা। শরীর ফুলে যাওয়া।

ঘন ঘন প্রস্রাব বা মূত্রনালির সমস্যা।

সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা।

গর্ভধারণে সমস্যা বা বন্ধ্যত্ব।

বয়স ও বংশগতির প্রভাব।

ওজনাধিক্য, হরমোন পরিবর্তন ইত্যাদি।

নির্ণয় ও চিকিৎসা

আলট্রাসাউন্ড, পেলভিক ইমেজিং, এমআরআই বা জরুরি ক্ষেত্রে হাইফু বা হিস্টেরস্কোপি ব্যবহারের মাধ্যমে জরায়ুতে ফাইব্রয়েড শনাক্ত করা যায়।

টিউমার ছোট হলে বা উপসর্গ না থাকলে ওষুধ ও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে মায়োমেকটমি, ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন, এমআরআই গাইডেড ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড বা জরায়ু অপসারণ করা হয়। চিকিৎসার ধরন বাছাইয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কেন সচেতনতা জরুরি

ফাইব্রয়েড খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক নারী উপসর্গ পেয়েও সময়মতো এর চিকিৎসা নেন না। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হতে পারে। মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ক্ষুধা, ক্লান্তি, বন্ধ্যত্ব নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা—এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় মানসিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।

এই টিউমার ডিজেনারেটিভ, ইনফেকশন অথবা সারকোমেটাজে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারে রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে। তাই ক্যানসার ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ফাইব্রয়েড নিয়ে গবেষণা এখনো সীমিত। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা। ফাইব্রয়েড হলে সন্তান হবে না, এমন ধারণাও অমূলক। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়। এ জন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. শারমিন আব্বাসি, স্ত্রীরোগ ও বন্ধ্যত্ববিশেষজ্ঞ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জরায়ুর ফাইব্রয়েড কতটা ভয়ের
  • ডোনাল্ড ট্রাম্প ভুগছেন ক্রনিক ভেনাস ইনসাফিশিয়েন্সিতে, এই রোগ সম্পর্কে কতটা জানেন