হরমোনজনিত রোগ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) এখন জনস্বাস্থ্য সমস্যায় রূপ

নিয়েছে। দেশের প্রজননক্ষম ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারীর এই সমস্যা আছে। সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে কিশোরীরা। এ সমস্যা মোকাবিলায় জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর প্রথম আলো কার্যালয়ে পিসিওএস বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে আয়োজিত মুক্ত আলোচনা সভায় নারীস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। অবস্টেট্রিক্যাল অ্যান্ড গাইনোকোলজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশ (ওজিএসবি) ও প্রথম আলো যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করে। আয়োজনের সায়েন্টিফিক পার্টনার ছিল ওষুধ কোম্পানি ইনসেপ্টা ফার্সাসিউটিক্যালস।

অনুষ্ঠানে পিসিওএস কী, কেন রোগটি হয়, রোগের উপসর্গ কী কী, এর চিকিৎসা কী এবং সাধারণ মানুষ ও অভিভাবকদের করণীয় বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা মতামত দেন। পিসিওএস সচেতনতা মাস ২০২৫ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শুরুতে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও ওজিএসবির প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ফিরোজা বেগম বলেন, পিসিওএস অনেকসংখ্যক নারীর মধ্যে দেখতে পাওয়া বা ‘মোস্ট কমন’ একটি রোগ। দেশে কত নারী এই রোগে ভুগছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে অনুমিত হিসাবে প্রজনন বয়সী (১৫ থেকে ৪৯ বছর) ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারীর এ সমস্যা আছে। পিসিওএসকে রোগ না বলে উপসর্গ বলা যেতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

কারণ ও লক্ষণ

ওজিএসবির সাবেক সদ্য প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ফারহানা দেওয়ান পিসিওএসের কারণ বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, শরীরে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিলে বা হরমোনের তারতম্য হলে পিসিওএস হতে পারে। সময়মতো মাসিক না হলে বা মাসিক হতে বিলম্ব হলে পিসিওএসের ঝুঁকি বাড়ে। তিনি বলেন, সন্তান হচ্ছে না বা বন্ধ্যত্বের সমস্যা আছে, এমন ৬ থেকে ১২ শতাংশ নারীর এ সমস্যা দেখা যায়।

কী দেখে বোঝা যাবে অর্থাৎ রোগের লক্ষণ কী, এমন প্রশ্নের উত্তরে ওজিএসবির সদস্যসচিব অধ্যাপক মুসাররাত সুলতানা বলেন, মাসিকের সমস্যা আছে বা তিন থেকে চার মাস পরপর মাসিক হচ্ছে, এমন হলে পিসিওএসকে সন্দেহ করতে হবে। আবার ওজন যদি অনেক বেড়ে যায়, সেটিও সন্দেহের কারণ। অনেকের হাত-পায়ে বা মুখে অবাঞ্ছিত লোম গজায়, এটি হরমোনজনিত ত্রুটির লক্ষণ। এটি পিসিওএসের উপসর্গ। কারও বন্ধ্যত্ব ধরা পড়লে তার পেছনের কারণ হতে পারে পিসিওএস।

অধ্যাপক ফিরোজা বেগম বলেন, পিসিওএসের তিনটি প্রধান লক্ষণ হলো হাত-পায়ে-মুখে লোম, অনিয়মিত মাসিক ও ওভারিতে সিস্ট। এর দুটি লক্ষণ থাকলেই পিসিওএস সন্দেহ করা যায়।

মুক্ত আলোচনায় স্বাগত বক্তব্যে প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন বলেন, পিসিওএস নিয়ে মানুষের ভুল ধারণা দূর করতে, মানুষকে সচেতন করতে চায় প্রথম আলো। তাই এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

চিকিৎসা ও প্রতিরোধ

আলোচকেরা বলেন, পিসিওএস কিছু হয় জিনগত কারণে, কিছু হয় পরিবেশগত কারণে। পরিবেশগত কারণগুলো চিহ্নিত করা ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার ওপর কেউ কেউ জোর দেন।

ওজিএসবির সাবেক প্রেসিডেন্ট, স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগম বলেন, স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ ছেলেমেয়েদের খেলার ব্যবস্থা রাখতে হবে, নিয়মিত শরীরচর্চায় অভ্যস্ত করতে হবে। অন্ত্রের যত্নের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, নিয়মিত সবজি খেতে হবে, মানসিক চাপ কমাতে হবে। রোগের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। এখন পিসিওএসের ওষুধ পাওয়া যায়।

অনুষ্ঠানে কিশোরীদের সমস্যাগুলো গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করা হয়। বন্ধ্যত্ব–বিশেষজ্ঞ ও ইনফার্টিলিটি কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক রাশিদা বেগম বলেন, কিশোরীদের ওভারিতে সিস্টগুলো অনেক ছোট থাকে। তাই আলট্রাসাউন্ড ব্যবহার করে কিশোরীদের সমস্যা ঠিকভাবে শনাক্ত করা যায় না। অনিয়মিত মাসিক ও অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা পর্যালোচনা করেই কিশোরীদের সমস্যা শনাক্ত করতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। একাধিক আলোচক বলেন, কিশোরীরা স্থূল হলে ও তাদের ওজন বাড়লে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে।

ঢাকা ফার্টিলিটি সেন্টারের প্রধান পরামর্শক অধ্যাপক মারুফ সিদ্দিকি বলেন, পিসিওএস অনেকটা ডায়াবেটিসের মতো। একবার হলে তা সারা জীবনের রোগ। এ রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় হয় না, তবে একে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিশোরীদের জন্য এর চিকিৎসা ভিন্ন। বিবাহিত অথচ সন্তান নিতে চান না, এমন রোগীর চিকিৎসা সন্তান নিতে চাওয়া রোগী থেকে ভিন্ন। রোগীর বয়স অনেক সময় চিকিৎসা কী হবে, তা ঠিক করে দেয়। পিসিওএস আছে অথচ বন্ধ্যত্বের সমস্যায় ভুগছেন, এমন নারীর চিকিৎসা কী হবে, তারও বর্ণনা দেন এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেন, পিসিওএস এবং বন্ধ্যত্বের সব আধুনিক চিকিৎসা দেশে আছে। এনাম ফার্টিলিটি সেন্টারের প্রধান পরামর্শক এফ এম এনামুল হক বলেন, প্রতিদিন যত রোগী কেন্দ্রে আসেন, তার ৬০ শতাংশের পিসিওএস আছে। অনেক রোগী চিকিৎসার পরামর্শ নিচ্ছেন গুগল বা চ্যাটজিপিটি থেকে। এই প্রবণতা বিপজ্জনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগের পরামর্শক মীর্জা মো.

আসাদুজ্জামান বলেন, রজোনিবৃত্তির (মেনোপজ) কাছাকাছি যেসব নারী, তাঁদের মধ্যে পিসিওএসের ঝুঁকি অন্য নারীদের চেয়ে চার গুণ বেশি। পিসিওএসের কারণে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে এই বিষয় আলোচনায় কম স্থান পেতে দেখা যায়।

পাশে দাঁড়াতে হবে

সুষম খাদ্য ও পুষ্টি পিসিওএস সমস্যার সমাধান দিতে পারে বলে অনেকেই মনে করেন। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির পুষ্টি কর্মকর্তা ফাহমিদা মাহমুদ বলেন, কিশোরীদের ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয় থেকে দূরে রাখতে হবে। সন্তানদের সঠিক খাবার খাওয়ানো ও শরীরচর্চা শেখাতে হবে। খাওয়ার সময় প্রথমে সবজি, পরে প্রোটিন, তারপর শর্করা খাওয়া অভ্যাস করতে হবে। প্রতিদিন হাঁটতে হবে, শরীরচর্চা করতে হবে।

বাংলাদেশ মেনোপজ সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক শেখ জিনাত আরা নাসরিন বলেন, ‘এই রোগ দেখা দিলে কিশোরীদের মনস্তাত্ত্বিক সাহায্য-সহযোগিতা দিতে হবে। কিশোরীদের বলতে হবে, আমরা সবাই তোমাদের পাশে আছি। রোগটির চিকিৎসা আছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প স ওএস র প রথম আল অন ষ ঠ ন র সমস য সন ত ন হরম ন

এছাড়াও পড়ুন:

গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন

অ্যানথ্রাক্স রোগটি‘তড়কা’ নামেই বহুল পরিচিত। গ্রীক শব্দ ‘অ্যানথ্রাকিস’ বা কয়লা থেকে উদ্ভূত এই নামটি হয়তো অনেকেই জানেন না। তবে এর ভয়াবহতা সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ ঠিকই অবগত।

অ্যানথ্রাক্স নামের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগটি শুধু বন্য বা গৃহপালিত পশুকে নয়, বরং মানুষের জীবনকেও ঝুঁকিতে ফেলে দিচ্ছে বারবার।

আরো পড়ুন:

১৬ দিন ধরে অচলাবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ বাকৃবি ছাত্রশিবিরের

দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি বাকৃবি শিক্ষার্থীদের

সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা বলছে, দেশের অ্যানথ্রাক্স পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। সাধারণত গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়াকে আক্রান্ত করে এই ব্যাকটেরিয়া। ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই রোগে মারা গেছে অন্তত ১ হাজার গবাদিপশু। আর আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।

সম্প্রতি রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্তের রিপোর্ট করেছেন অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ। এরইমধ্যে এ রোগের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন দুইজন, যা নিশ্চিত করেছেন রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ৫০০টিরও বেশি মানব অ্যানথ্রাক্স কেস রেকর্ড করা হয়েছে, যার সবগুলোই ছিল ত্বকের অ্যানথ্রাক্স। তবে ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৬ হাজার ৩৫৪টি পশুর অ্যানথ্রাক্স কেস রেকর্ড করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯৯৮টি পশুর মৃত্যু হয়েছে। সে হিসাবে মোট মৃত্যুর হার দাঁড়িয়েছে ১৫.৭ শতাংশে।

গবেষণার তথ্য মতে, বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্সের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা যায় ১৯৮০ সালে। এরপর থেকে এটি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বারবার ফিরে এসেছে। বিশেষ করে পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও মেহেরপুর জেলাকে ‘অ্যানথ্রাক্স বেল্ট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে এ রোগের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।

বিশেষজ্ঞরা ময়মনসিংহ, পাবনা ও কুষ্টিয়া জেলাকে যথাক্রমে উচ্চ, মাঝারি ও নিম্ন-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। গ্রীষ্ম ও বর্ষা মৌসুমে, বিশেষত এপ্রিল থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।

অ্যানথ্রাক্সের মূল কারণ হলো- ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস নামের একটি ব্যাকটেরিয়া, যা সাধারণত মৃত পশুর দেহে পাওয়া যায়। এটি এতই শক্তিশালী যে, জৈবিক অস্ত্র হিসেবেও এর ব্যবহারের খবর পাওয়া গেছে। এই ব্যাকটেরিয়া বাতাসে উড়ন্ত স্পোর তৈরি করতে পারে, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। 

অ্যানথ্রাক্স নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের স্নাতক রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট অর্ণব সাহা। 

তিনি বলেন, “মানুষ তিনভাবে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে— ত্বকের মাধ্যমে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে এবং খাদ্যগ্রহণের মাধ্যমে। এর মধ্যে ত্বকের অ্যানথ্রাক্স সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং এর সুপ্তিকাল সাধারণত দুই থেকে ছয়দিন।”

অন্যদিকে, শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমিত অ্যানথ্রাক্সের সুপ্তিকাল গড়ে চারদিন, যা ১০-১১ দিন পর্যন্তও হতে পারে।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, মোট আক্রান্তের ৯১.৩ শতাংশ মানুষই ত্বকের অ্যানথ্রাক্সে ভুগেছে, যেখানে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল এবং উভয় ধরনের সংক্রমণ ছিল যথাক্রমে ৬.৫২ শতাংশ ও ২.৬৬ শতাংশ।

ত্বকীয় অ্যানথ্রাক্সের ক্ষেত্রে চামড়ায় প্রথমে একটি চুলকানিযুক্ত লাল ফোঁড়া দেখা যায়, যা পরবর্তীতে কালো কেন্দ্রযুক্ত ব্যথাহীন ঘা হিসেবে প্রকাশ পায়। উলের কারখানায় কাজ করা শ্রমিকদের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যাওয়ায় এটি ‘উল-সর্টার্স ডিজিজ’ নামেও পরিচিত।

সবচেয়ে মারাত্মক ধরণ হচ্ছে শ্বাস-প্রশ্বাসের অ্যানথ্রাক্স। ব্যাকটেরিয়ার স্পোর শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করলে ঠান্ডা, জ্বর ও কাশির মতো উপসর্গ দেখা যায়, যা দ্রুত শ্বাসকষ্ট, শক এবং উচ্চ মৃত্যুহারের দিকে নিয়ে যায়।

অর্ণব বলেন, “প্রাণীদের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স হলে হঠাৎ মৃত্যু সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ। মৃত পশুর নাক, মুখ ও মলদ্বার থেকে কালচে, জমাট না বাঁধা রক্ত বের হয় এবং পেট ফুলে যায়।”

রোগটির প্রতিকার ও প্রতিরোধের বিষয়ে বাকৃবি মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. গোলজার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে অ্যানথ্রাক্সের সংক্রমণ ছড়ানোর অন্যতম কারণ হলো জনসচেতনতার অভাব। অসুস্থ পশু জবাই করে তার মাংস কম দামে বিক্রি করার একটি প্রবণতা আমাদের সমাজে দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান। অনেক বিক্রেতা ও সাধারণ মানুষ জানেনই না যে, এই মাংস থেকে মানুষের শরীরেও রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।”

“পাশাপাশি, মৃত পশুর দেহ সঠিক উপায়ে অপসারণ না করে খোলা মাঠে, নদী, খাল বা বন্যার পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। এর ফলে এই জীবাণু পরিবেশ ও পশুপালনের জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে, যা নতুন করে সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি করে,” যুক্ত করেন ড. গোলজার।

তিনি বলেন, “অ্যানথ্রাক্সের বিস্তার রোধে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ এই রোগের বিস্তার রোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম- জনসচেতনতা বৃদ্ধি। পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধে জনশিক্ষা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো গবাদি পশুর মধ্যে নিয়মিত এবং ব্যাপক হারে টিকাদান নিশ্চিত করা। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত টিকাদান কর্মসূচিকে আরো শক্তিশালী করতে হবে, বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে। আমদানি করা ও জবাই করা পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইন করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।”

ড. গোলজার বলেন, “এছাড়া মৃত পশুর দেহ ও দূষিত পদার্থ সঠিকভাবে মাটির নিচে পুঁতে ফেলতে হবে এবং অনুমোদিত মাংস বিক্রেতাদের মাধ্যমে এবং পশু চিকিৎসকের পরীক্ষা করা মাংস বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।”

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গবাদিপশু থেকে মানুষের শরীরে ‘তড়কা’ রোগ, প্রতিরোধে যা করবেন
  • প্রোস্টেট ক্যানসারের উপসর্গগুলো আপনার জানা আছে কি