হেনরিক নুর্ডব্রান্ডট • পালের নৌকায় ভেসে যাওয়া
প্রেমের পর আমরা কাছাকাছি শুয়ে থাকি
তীব্র ভালোবেসেও যেভাবে দুটো জাহাজ
নিজেদের মাঝে দূরত্ব রেখে
নিজ নিজ সরলরেখায় ভেসে যায়
ভেসে যায় জল ভাগ করে
যেন তাদের কাঠামো
বেগে এগিয়ে যেতে নিয়ে
এক অদম্য আনন্দে দুভাগ হয়ে যাচ্ছে
দুভাগ হয়ে যাচ্ছে নীলের দিকে ছুটে যেতে যেতে
যেখানে রাতের বাতাস পালের নিচ ভরে দিচ্ছে
ফুলের গন্ধ আর চাঁদের আলোয়—
ওরা একজন অন্যজনকে
অতিক্রম করে এগিয়ে যাচ্ছে
নিজেদের মাঝে দূরত্ব কমিয়ে
কিংবা আরও বেড়ে ওঠা বন্ধ করে দিয়ে।
কিন্তু তারপর আরও রাত আসে
যখন আমরা একজন আরেকজনের
কাছ থেকে দূরে সরে যাই
দুটো ঝলমলে বিলাসবহুল জাহাজের মতো
পাশাপাশি, ইঞ্জিন বন্ধ, এক অদ্ভুত নক্ষত্রপুঞ্জের নিচে
জাহাজে কোন আরোহী নেই:
উজ্জ্বল ঢেউয়ের সম্মানে
প্রতিটি ডেকে বেহালার অর্কেস্ট্রা বাজছে
অর্কেস্ট্রা বাজছে সমুদ্রে ভেসে যাওয়া
অসংখ্য ক্লান্ত জাহাজে
আমরা যা ডুবিয়ে দিয়েছি
একজন আরেকজনের কাছাকাছি যেতে গিয়ে।
যখন কেউ মারা যায়যখন কেউ মারা যায়
তার চারপাশটুকু থেকে যায়:
থেকে যায় দূরের পাহাড়গুলো
ব্লকের বাড়ি
থেকে যায় রোববারের সেই রাস্তা
শহর ছেড়ে যাওয়ার ঠিক অল্প একটু আগে
যা পেরিয়ে গেছে কাঠের ব্রিজ
আর সেই বসন্তের রোদ
যা সন্ধ্যার শুরুতে বই আর ম্যাগাজিনভর্তি
এক শেলফে এসে পৌঁছায়
এই সব বই আর ম্যাগাজিন
নিশ্চিতভাবে একদিন নতুন ছিল।
একটুও আশ্চর্যের নয় এই সবকিছু।
তবু বহুবার আমি
এই নিয়ে ভেবেছি।
একটি দুঃস্বপ্নের পরেযখন ঘুম ভেঙে উঠলাম,
বড় কালো কেটলিটার
ঢাকনা সেখানেই ছিল
আর নরখাদকদের জন্য
কেবল তাদের অনন্য নামগুলোর
প্রতিধ্বনিই থেকে গিয়েছিল।
একদম ঠিক জায়গায় রাখা নাইটস্ট্যান্ডের ওপর আছে বইটি
তা থেকে বের হয়ে আছে বুকমার্ক
আর যখন আমি বিছানা থেকে পা নামালাম
দেখলাম—আমার জুতার ফিতা একদম জায়গামতো আছে।
আর আমার মোজা ঠিক তার পাশে।
বিছানার নিচে কোনো কুমির নেই
আর দরজার পেছনে অপেক্ষা করছিল
যে ছারপোকাটা,
সে তার পথ ধরেছে।
আমার মাথা আর হাতগুলোর প্রতিটিকে
আলাদা আলাদা প্লাস্টিক ব্যাগে রাখা নয়।
তারা শক্তভাবে আমার শরীরের সাথে লাগানো।
রক্ত না ঝরিয়ে আমি নড়াচড়া করতে পারছি।
এমনকি আমার পেটে ব্যথা পর্যন্ত নেই।
রান্নাঘরের কাউন্টারে ছিল এক কফিমেকার
একটা সাধারণ কফিমেকার
ভোরের আলোয়
ফুলতোলা পর্দার ফাঁক দিয়ে
যার মাঝ দিয়ে চুইয়ে পড়ত কফি।
ওগুলো ধোয়ার দরকার ছিল
মনে হচ্ছিল সময়টা বুঝি এপ্রিলের মাঝামাঝি
যখন জল ফুটছিল
মনে হচ্ছিল বাড়িটা এত ফাঁকা।
আমি যাদের ভালোবাসতাম
তারা বহু আগেই মারা গেছে।
উগুর, আসাফ, বেচেতযে রাতে আমি আমার প্রিয় পানশালায় গিয়েছিলাম, বিধ্বস্ত
আর বলেছিলাম
একদিন আগে মরে যাওয়া আমার প্রেমিকার কথা
ওরা তিনজনই ওখানে ছিল:
উগুর, যে কিনা ফুল কিনে এনেছিল
আর বলেছিল, যেখানে ঘটনাটা ঘটেছে
সেখানে সেই ফুল নিয়ে যেতে
আসাফ পরে একটা আঁকা ছবি দিয়েছিল
আর সাইকিয়াট্রিস্ট বেচেত
আমায় বলেছিল ও সামলে নিতে
সাহায্য করবে সেই অনুভূতি
যার নাম ‘বিষাদ’।
কাকতালীয়ভাবে তারা সত্যিই সেই রাতে
ওখানে ছিল, দুই বছর পর তিনজনকেই
ঈশ্বরের নামে পুড়িয়ে মারা হয়।
এক ধর্মান্ধদের দল ওদের হত্যা করেছিল।
শুকিয়ে যাওয়া গোলাপ পড়ে আছে আমার গাড়ির ট্রাংকে
আসাফের আঁকা বাঁধাই করা ছবি
দেয়ালে ঝুলছে, হলুদ হচ্ছে
আর ‘বিষাদ’ শব্দটির জন্য আমি অবাক হয়ে ভাবছি যে
শব্দটি আমি বহু বছর আগেই শিখতে পারতাম
যখন আমায় সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়ে গিয়েছিল
ক্লান্তি।
আরও পড়ুনআদি অস্ট্রেলীয়দের অধিকার আদায়ের কবিতা২২ জুলাই ২০২৫নৈরাশ্যের স্বপ্নএক পাংশুল মেঘ সূর্যের সামনে দিয়ে ভেসে গেল
তা নিচু করে নিয়ে এল পাহাড়ের দিকটা
আমার প্রেমিকা আর তার প্রেমিকের জন্য
যা শীতের ডেরা।
আমার পায়ের নিচ থেকে
একটি সাঁকো চুরমার করে ভেঙে পড়ল
কিন্তু আমার প্রতিটি পদক্ষেপ দিকশূন্যহীন।
আমি আমার শৈশব ফেলে যত দূর চলে এসেছি
ঠিক ততটাই দূর ছিল তা।
তাই মৃত্যুকে খুঁজে পেতে হয়েছিল
অন্য তীরের ধূসর উইলোগাছ
আর আমার মাঝখানটার কোথাও।
সবকিছু এক মিনিটের থেকেও
কম সময়ের জন্য স্থায়ী ছিল
কিন্তু তা–ই ছিল বাকিটা পৃথিবী।
মার্চ মাসের শেষ দিনগুলোএকদিকে চলতে থাকে
মুখচ্ছবিগুলো ঠিক তার বিপরীতে।
নিরবচ্ছিন্নভাবে তারা একজন
অন্যজনের আলোটুকু ধার নেয়।
বহু বছর পর বোঝা যায় না
কোনগুলো দিন ছিল
আর কোনগুলো ছিল মুখচ্ছবি…
মনে হয়, এই দুটো জিনিসের মাঝের দূরত্ব
আর বুঝি ছোঁয়া যাবে না
একটি দিন থেকে অন্য দিনে
একটি মুখচ্ছবি থেকে অন্য মুখচ্ছবিতে।
মার্চ মাসের উজ্জ্বল শেষ দিনগুলোয়
এটুকুই দেখি আমি তোমার মুখে।
কসোভোর যুদ্ধ থেকে আসা চিরকুটনিচে বেজমেন্টে আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না
কেননা আবিষ্কার করলাম যে আমার চোখে সানগ্লাস।
যখন শেষ পর্যন্ত সানগ্লাসটা চোখ থেকে খুললাম
রেগে গিয়ে আমি সেই সানগ্লাসটা ছুড়ে ফেললাম।
এখন বসে আছি
আর সমুদ্র খুঁজে পাচ্ছি না
কেননা রিডিং গ্লাসটা আমার চোখে।
এবং সূর্য খুব উজ্জ্বল বলে
আমি যা লিখেছি
তা পড়তে পারছি না।
একগুঁয়ে আমি আমার রিডিং গ্লাসটা পরে থাকি
আর কিছুই আমায় নিচের
বেজমেন্টে সানগ্লাসের খোঁজে
নিয়ে যেতে পারবে না!
এটাই আমার জীবন। এটাই আমাদের সকলের জীবন।
ঠিক এভাবেই যুদ্ধটা চলতে থাকে।
তুরোদুর পোলসেন • ঘাসমরে যাওয়া ঘাস সব সময়
আবার ফিরে আসে
কিন্তু সেই সব বহু বছর আগে
যে নারী ঘাসের ওপর
আমার পাশে শুয়েছিল
আর প্রতিজ্ঞা করেছিল যে
আমাদের আবার দেখা হবে
সে আসে না
মুক্তিআমাকে মুক্ত করে দিতে এসে
মাকড়সার জালে জড়িয়ে গেল এক দেবদূত
কিন্তু তখন এক প্রজাপতি উড়ে এসে
আমাদের মুক্ত করে দিয়ে গেল
কিছু শব্দ দিয়ে এগিয়ে আসা বৃষ্টির কথা বলে
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনা ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান বেলাল হোসেন
যমুনা ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের সভায় ব্যাংকের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মো. বেলাল হোসেন সর্বসম্মতিক্রমে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি দেশের একজন সফল উদ্যোক্তা। খবর বিজ্ঞপ্তি
যমুনা ব্যাংকের ওয়েবসাইটের তথ্যানুসারে, মো. বেলাল হোসেন ১৯৫৬ সালে নওগাঁ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের জগতে তাঁর পরিবারের দেশ-বিদেশে সুনাম আছে। পরিবারের মালিকানাধীন বৃহৎ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ছাড়াও আছে নানা ধরনের ক্ষুদ্র ও বৃহৎ খাদ্যশস্য শিল্প। তিনি একজন বিশিষ্ট আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক। বর্তমানে তিনি বেলকন কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড, বিএইচ হাইটেক ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, নাদিয়া ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড ও বিএইচ স্পেশালাইজড কোল্ডস্টোরেজ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বেলাল হোসেন নওগাঁ, দিনাজপুর ও হিলি অঞ্চলের বিভিন্ন ক্রীড়া ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। ২০০৪ সালে তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অতীশ দীপঙ্কর গবেষণা পরিষদের এডিজিপি ফেলো মেম্বারশিপ সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৫ সালে এফএনএস বিজনেস অ্যাওয়ার্ডে সেরা কৃষিভিত্তিক শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
বেলাল হোসেন নওগাঁ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, নওগাঁ এবং বাংলাদেশ অটো মেজর ও হাসকিং মিল মালিক সমিতি, ঢাকার কার্যনির্বাহী সদস্য।