নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাথে মিজান খন্দকারের মতবিনিময়
Published: 28th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ মতবিনিময় সভা করেছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিজান খন্দকার। সভায় নারায়ণগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন, নাগরিক সমস্যা এবং সমাজের দর্পণ হিসেবে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভায় মিজান খন্দকার নব-নির্বাচিত কমিটিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
মতবিনিময়কালে মিজান খন্দকার বলেন, “গণমাধ্যমকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে এবং জনগণের সমস্যা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। আমি নিজেও গণমাধ্যমের একজন কর্মী হিসেবে দীর্ঘকাল কাজ করেছি।
ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি) থেকে শুরু করে আমেরিকার টাইম টেলিভিশনে কাজ করার সুবাদে আমি দেখেছি একটি শহরকে উন্নত করতে গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনা কতটা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জের যানজট, পরিবেশ দূষণ এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে গণমাধ্যমকর্মীরাই পারেন প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে কর্তৃপক্ষ ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে। আমি আপনাদের এই পথচলায় একজন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকতে চাই।” এবং আগামীতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবকে আমি আমার পাশে চাই।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ বলেন, “মিজান খন্দকারকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সবসময়ই একটি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম। আমরা শহরের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আমরা আশা করি, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে সবাই একযোগে কাজ করবে এবং আমরা সাংবাদিক হিসেবে সেই চিত্রই তুলে ধরব।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, যুগ্ম সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য প্রণব কৃষ্ণ রায় এবং ক্লাব সদস্য এম আর কামাল, দিলীপ কুমার মন্ডল ও সাইফুল ইসলাম সায়েম প্রমুখ।
সভার শেষে ব্যক্তিগত আলোচনায় মিজান খন্দকার তার রাজনৈতিক ভাবনার কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, তিনি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র
এছাড়াও পড়ুন:
নিরপরাধ কেউ যাতে হয়রানি না হন, সে জন্য মামলার তদন্তে সময় লাগছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মামলাগুলোয় ২০ জন আসামি হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেখা গেছে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ জন্য তদন্তে সময় বেশি লাগছে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন কোনো অবস্থায়ই শাস্তির আওতায় না আসেন। অনেকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য নিরপরাধ ব্যক্তিকে আসামি করেছেন। প্রকৃত আসামিদের নাম দেওয়া হলে তদন্তে এত সময় লাগত না।
আজ শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনসে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথাগুলো বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সহযোগিতা চেয়ে বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা, সত্য ঘটনা আপনাদের তুলে ধরার আহ্বান জানাই। লুকোচুরি করার কিছু নেই। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তো থাকবেই, তারা জনগণের সঙ্গে পুলিশের বিভেদ তৈরির চেষ্টা চালাবেই।’ যেসব রাজনৈতিক দল পুলিশের সঙ্গে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা আপনাদের বিভেদ দূর করবেন। পুলিশের সঙ্গে বিভেদ থাকার কথা নয়। আপনাদের কাজ হচ্ছে জনগণের কাছে গিয়ে ভোট আদায় করা, আমাদের কাজ হচ্ছে জনগণ যাতে সুখে–শান্তিতে থাকতে পারে, সেটার জন্য আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন অবনতি না হয়, তা রক্ষা করা। আর আপনাদের (সাংবাদিক) কাজ হচ্ছে সত্যি সংবাদ তুলে ধরা।’
গত বছরের ৫ আগস্ট সারা দেশে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সব অস্ত্র উদ্ধার করতে পারিনি। তবে নির্বাচনের আগে আরও অনেক অস্ত্র উদ্ধার হয়ে যাবে। আপনাদের সহযোগিতায়, জনগণের সহযোগিতায় অস্ত্রগুলো উদ্ধারের অবশ্যই চেষ্টা করব।’ তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো স্টেক (অংশীজন) নয়, এখানে সবচেয়ে বড় স্টেক হোল্ডার যারা রাজনৈতিক দল বা যারা ইনডিপেনডেন্টভাবে নির্বাচন করবেন। তারা যদি সহযোগিতা করে, আমাদের পক্ষে নির্বাচন করা সহজ হবে। আমাদের সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট রয়েছে।’
আদমজীতে র্যাব-১১ ব্যাটালিয়ন কার্যালয় পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যারা বাংলাদেশি নাগরিক ওখানে (ভারতে) আছেন, তাঁদের হয়তো আমাদের নিতে হবে। তাঁরা ১০ বছর হোক বা ২০ বছর হোক, তাঁরা বাংলাদেশি হলে আমাদের নিতে হবে। কিন্তু যারা রোহিঙ্গা, তাদের আমরা গ্রহণ করছি না, রোহিঙ্গাদের আমরা ফেরত পাঠাচ্ছি। যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক গিয়ে থাকেন, তাঁদের প্রপার চ্যানেলে পাঠানোর নিয়ম আছে। আমরা পাঠালেও প্রপার চ্যানেলে পাঠাই। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, তারা প্রপার চ্যানেলে না পাঠিয়ে জঙ্গলে, নদীর পাড়ে ফেলে দিচ্ছে। এটা কোনো অবস্থায়ই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন। আমরা প্রতিবাদ করে যাচ্ছি, প্রতিবাদে কিছু কাজ হচ্ছে, এখন তা কিছুটা কমে আসছে।’
এ সময় র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) রেজাউল করিম মল্লিক, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) তাসমিন আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।