নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে এক সৌহার্দ্যপূর্ণ মতবিনিময় সভা করেছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিজান খন্দকার। সভায় নারায়ণগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন, নাগরিক সমস্যা এবং সমাজের দর্পণ হিসেবে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

রবিবার (২৭ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভায় মিজান খন্দকার নব-নির্বাচিত কমিটিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

মতবিনিময়কালে মিজান খন্দকার বলেন, “গণমাধ্যমকে বলা হয় সমাজের দর্পণ। নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে এবং জনগণের সমস্যা তুলে ধরতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। আমি নিজেও গণমাধ্যমের একজন কর্মী হিসেবে দীর্ঘকাল কাজ করেছি।

ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন (বিবিসি) থেকে শুরু করে আমেরিকার টাইম টেলিভিশনে কাজ করার সুবাদে আমি দেখেছি একটি শহরকে উন্নত করতে গণমাধ্যমের গঠনমূলক সমালোচনা কতটা জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “নারায়ণগঞ্জের যানজট, পরিবেশ দূষণ এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে গণমাধ্যমকর্মীরাই পারেন প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে কর্তৃপক্ষ ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করতে। আমি আপনাদের এই পথচলায় একজন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকতে চাই।” এবং আগামীতে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবকে আমি আমার পাশে চাই।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদ বলেন, “মিজান খন্দকারকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব সবসময়ই একটি নিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম। আমরা শহরের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে অঙ্গীকারবদ্ধ।

আমরা আশা করি, নারায়ণগঞ্জের উন্নয়নে সবাই একযোগে কাজ করবে এবং আমরা সাংবাদিক হিসেবে সেই চিত্রই তুলে ধরব।”

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, যুগ্ম সম্পাদক আহসান সাদিক শাওন, কোষাধ্যক্ষ আনিসুর রহমান জুয়েল, কার্যকরী পরিষদ সদস্য প্রণব কৃষ্ণ রায় এবং ক্লাব সদস্য এম আর কামাল, দিলীপ কুমার মন্ডল ও সাইফুল ইসলাম সায়েম প্রমুখ।

সভার শেষে ব্যক্তিগত আলোচনায় মিজান খন্দকার তার রাজনৈতিক ভাবনার কথা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, তিনি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একজন মনোনয়ন প্রত্যাশী।

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র

এছাড়াও পড়ুন:

আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না: জামায়াতের আমির

‘আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না’—এই দাবি করে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ধর্ম আমাদের চিন্তার অঙ্গ, আমাদের কলিজার অংশ। আমরা ধর্ম নিয়েই কাজ করি, ধর্মকে ব্যবহার করি না।’

কারা ধর্মকে ব্যবহার করেন, সে প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নতুন করে যাঁরা বেশি বেশি নামাজ শুরু করেন, টুপি পরেন, তসবিহ হাতে নিয়ে ঘোরেন, ধর্মকে তাঁরাই বোধ হয় সম্ভবত ব্যবহার করেন। আমরা কিন্তু সারা বছর তসবিহ হাতে নিয়ে ঘুরাই না, তসবিহ বুকে নিয়ে ঘুরাই। আমরা আমাদের কাজগুলো আমাদের বিশ্বাসের আওতায় করতে চাই। এখন যে যেভাবে বোঝেন, এটা তাঁদের ব্যাপার।’

জামায়াত ও তাদের মিত্র দলগুলো ধর্মকে ব্যবহার করছে—বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান। আজ সোমবার ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দূতাবাসে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

জাতীয় নির্বাচন পেছানোর কোনো শঙ্কা দেখেন কি না– এ প্রশ্নের জবাবে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পেছানোর কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করি না। এটা উচিত নয় বলে মনে করি। আমরা মনে করি, ফেব্রুয়ারির ঘোষিত সময়সীমার ভেতরে নির্বাচন হওয়াই দেশের জন্য একান্ত প্রয়োজন। এর সামান্য কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দেশ দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারও দ্বারাই দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তা আমরা চাই না। আমরা দল বা ব্যক্তির জন্য রাজনীতি করি না। আমাদের রাজনীতি জনগণের জন্য। কথায় নয়, কাজে আমরা এটার প্রমাণ দিতে চাই।’

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কারণে রাজনীতিতে কোনো সংকট দেখছেন কি না, জামায়াত আমিরকে এমন প্রশ্ন করেন সাংবাদিকেরা। জবাবে তিনি বলেন, ‘সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহ তাআলার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। দেশবাসী তাঁর অসুস্থতার জন্য তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে দোয়া করছে। কিন্তু আমিও তো মরব। আমরা কেউ তো চিরদিন থাকব না। আমাদের এই দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। আমাদের বিদায় নেওয়ার সঙ্গে সমাজের চাকা চলা-অচল হওয়ার সম্পর্ক থাকা উচিত নয়। তবে যাঁর যেটুকু শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পাওয়ার, সে যেন সেটা পায় সেদিকে সবার খেয়াল রাখা উচিত।’

আরও পড়ুন’৭১-এ জামায়াত কী কী করেছিল, মনে রাখতে বললেন তারেক রহমান০৭ ডিসেম্বর ২০২৫‘২০০ আসনে জিতলেও জাতীয় সরকার করবে জামায়াত’

ইইউ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে হবে, সব মানুষের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত হবে, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান কীভাবে হবে—এসব বিষয়ে জামায়াতের চিন্তাভাবনা জানতে চাওয়া হয় বৈঠকে। জামায়াত নির্বাচিত হলে প্রথম ১০০ দিনে জনগণের প্রতি তাদের কী বক্তব্য বা করণীয় থাকবে, সে ব্যাপারেও জানতে চাওয়া হয়।

‘আমরা বলেছি, আমাদের সবকিছুই ফ্রেম করা আছে। যখন যেটা প্রযোজ্য, সেটা আমরা সামনে রিলিজ (প্রকাশ) করব,’ বলেন জামায়াত আমির।

আরও পড়ুনধর্মের নামে ট্যাবলেট বিক্রি করে জনগণের সঙ্গে প্রতারণার পরিকল্পনা চলছে: সালাহউদ্দিন আহমদ৭ ঘণ্টা আগে

ইইউর প্রতিনিধিরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ দেখতে চান উল্লেখ করে শফিকুল রহমান বলেন, ‘আমরা বলেছি, আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা ও দেশের জনগণের ভালোবাসায় আমরা নির্বাচিত হলে সেই অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশই আমরা গড়ব, ইনশাআল্লাহ। আমরা কোনো দলকেই বাদ দেব না। আমরা দেশের স্বার্থে দারুণভাবে অনুভব করি যে অন্তত আগামী পাঁচটা বছর দেশের স্থিতিশীলতা, অর্থনীতি ফিরিয়ে আনা, সমাজে আইনের শাসন কায়েম করা এবং সমাজ থেকে দুর্নীতিকে নির্মূল করা বা বিদায় দেওয়ার জন্য প্রয়োজন একটি জাতীয় সরকারের। আমরা নির্বাচিত হলে সেই সরকারটাই গঠন করব।’

জামায়াতের সঙ্গে জাতীয় সরকারে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের কাছে দুটি প্রত্যাশার কথাও উল্লেখ করেন শফিকুর রহমান। এগুলো হলো—এক, কেউ নিজে দুর্নীতি করবেন না এবং দুর্নীতিকে কোনোভাবে প্রশ্রয় দেবেন না; দুই, সবার জন্য সমান বিচার নিশ্চিত করা, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না করা। কমপক্ষে এই দুটি ব্যাপারে যাঁরা একমত হবেন, তাঁদের নিয়ে সরকার গঠন করতে আগ্রহী জামায়াত। শফিকুর রহমান বলেন, ‘এমনকি আল্লাহর যদি ইচ্ছা হয় যে ২০০ আসনেও আমরা বিজয়ী হয়ে যাই, তারপরও আমরা এটা করব, ইনশাআল্লাহ।’

একই দিনে সাধারণ নির্বাচন ও গণভোট সম্পর্কে জামায়াত আমির ইইউর প্রতিনিধিদের বলেছেন, একই দিনে দুটো নির্বাচন হলে দুটো নির্বাচনই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ভোটার টার্নওভার কম হতে পারে। সেজন্য জামায়াত দুটো নির্বাচন আলাদা আলাদা করার দাবি জানিয়েছিল বলেও তিনি বৈঠকে উল্লেখ করেন।

এর বাইরে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির নির্বাচন, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অভিবাসন, শিক্ষা বিনিময়, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন ইত্যাদি বিষয়েও ইইউ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান জামায়াতের আমির।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমরা ধর্মকে কখনো ব্যবহার করিনি, করব না: জামায়াতের আমির
  • অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে স্মারকলিপি
  • মুছাপুরে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও শীতবস্ত্র বিতরণ করলেন মাসুদুজ্জামান
  • যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি পরিকল্পনা নাকি পড়েই দেখেননি জেলেনস্কি, হতাশ প্রকাশ ট্রাম্পের
  • গণভোট কি প্রতীকী ভোটে পরিণত হচ্ছে
  • জামায়াত দায়িত্ব পেলে ইসলামের ভিত্তিতে রাষ্ট্র চালাবে: এটিএম আজহারুল 
  • শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতির ইঙ্গি
  • বাংলাদেশের সঙ্গে স্থিতিশীল, গঠনমূলক সম্পর্ক চায় ভারত
  • যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের ‘গঠনমূলক’ আলোচনা
  • দাদাগিরি আর বরদাশত করা হবে না: জামায়াত আমির