হোক না কিংবদন্তি, ৪০ বছর বয়সের একটা ভার তো থাকেই। তার ওপর পেশাদার ফুটবলে একটি-দুটি নয়, ২৫টি মৌসুম পার করেছেন। ভালো করার ক্ষুধা কি আর সব সময় ধরে রাখা সম্ভব? লোকটির নাম যদি হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, তাহলে সম্ভব।

এমনকি সেটা প্রীতি ম্যাচ হলেও। অস্ট্রিয়ার আন্টার্সবার্গ-অ্যারেনায় কাল রাতে যেমন—ফরাসি ক্লাব তুলুজের মুখোমুখি হয়েছিল আল নাসর। নতুন মৌসুম শুরুর আগে গ্রীষ্মকালীন প্রাক্‌-মৌসুম সফরের প্রস্তুতি হিসেবে এই ম্যাচে মাঠে নেমেছিল সৌদি প্রো লিগের দলটি; জিতেছে ২-১ গোলে, আর রোনালদোও গোল করেন যথারীতি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর ভক্তরা লিখছেন, সামনে নতুন মৌসুম, অথচ সেই একই রোনালদো!

আরও পড়ুনক্লাব ফুটবলের দলবদলে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করা ১০ কোচ৩ ঘণ্টা আগে

ম্যাচের ৩৩ মিনিটে তেমন রোনালদোকেই দেখা গেল। ডান প্রান্ত থেকে সতীর্থের লম্বা ক্রস পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে ওয়ান টাচে রোনালদোর গোল তাঁর সোনালি অতীত মনে করিয়ে দিতে পারে। গোল পেতে পারতেন আরও একটি। দ্বিতীয়ার্ধে বাঁ প্রান্ত থেকে আসা ক্রসে পা ছোঁয়ালেই গোল—এমন সুযোগ রোনালদোর সঙ্গে জোয়াও ফেলিক্সও নষ্ট করেন। দুজনেই বলের দখল নিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কেউ-ই আর পারেননি।

বিরতির পর মোহাম্মদ মারানের গোলে জয় তোলে আল নাসর। তবে এই অর্ধেও ভালো খেলেন রোনালদো। তাঁর দূরপাল্লার শট তুলুজের পোস্টকে চোখ রাঙিয়ে গেছে একাধিকবার। জয়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রোনালদোর পোস্ট, ‘(ভালো করার) খিদে কখনো কমে না। এখনো অনেক কাজ বাকি। আমরা কেবল শুরু করলাম।’

আরও পড়ুনফিরেই দলকে নাটকীয় জয় এনে দিয়ে ‘দেহরক্ষী’র অভিষেক রাঙালেন মেসি৪২ মিনিট আগে

গত মৌসুমে আল নাসরের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৩৫ গোল করেন রোনালদো। নতুন চুক্তিতে আল নাসরে ২০২৬-২৭ পর্যন্ত থাকবেন তিনি। ক্লাবটির হয়ে এখনো বড় কোনো শিরোপা জিততে না পারার খেদটা রোনালদো যে আগামী মৌসুমে কাটাতে বদ্ধপরিকর, সেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর এই পোস্ট থেকেই বোঝা যায়। প্রাক্‌–মৌসুম সফরে রোনালদোদের পরবর্তী ম্যাচ স্পেনে। রোববার লা লিগার দল আলমেরিয়ার মুখোমুখি হবে আল নাসর।

আগামী ১৯ আগস্ট সৌদি সুপার কাপের সেমিফাইনালে আল ইত্তিহাদের মুখোমুখি হয়ে নতুন মৌসুম শুরু করবে আল নাসর।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ