পঞ্চগড়ের দুটি সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বুধবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে।

বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের সুকানি সীমান্ত দিয়ে সাতজন পুরুষ এবং সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। বিজিবি সদস্যরা গতকাল রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করেন। পরে তাঁদের তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি যশোর, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও বরিশাল জেলায়। পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম এবং নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ–অধিনায়ক মেজর কাজী আসিফ আহমদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

বিজিবি জানায়, আজ ভোরে তেঁতুলিয়ার ভজনপুর সেতু এলাকা থেকে সাতজন পুরুষকে আটক করা হয়। এর আগে রাতের কোনো এক সময় সুকানি সীমান্তের ৭৩৯ নম্বর মেইন পিলারের ২০ নম্বর রেফারেন্স পিলার-সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠান।

অন্যদিকে গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাগড়া সীমান্তের ৭৫৫ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাব–পিলার এলাকা দিয়ে ৯ জন নারী ও ১ জন পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠান ভারতের ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে তাঁদের প্রায় ২০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে বাঙ্গালপাড়া এলাকা থেকে আটক করেন বিজিবির ঘাগড়া বিওপি সদস্যরা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের ওডিশা ও অন্য কিছু এলাকা থেকে আটক করে ভারতের পুলিশ। পরে তাঁদের উড়োজাহাজ ও বাসে সীমান্তে এনে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশীষ কুমার শীল বলেন, ঠেলে পাঠানো ১০ জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুসা মিয়া জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা সাতজনের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এর আগে চলতি বছরের ১৬ মে থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিএসএফ পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে আরও ১৩৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জন প র ষ ব এসএফ জন ন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক

জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে। 

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে। 

বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি। 

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক। 

পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে। 

একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক। 

সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিলেট সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে খুঁটি উপড়ে ফেলে বিএসএফ, স্থানীয়দের প্রতিবাদ
  • পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে কর্মকর্তা নিয়োগ, বেতন ৫১,০০০ টাকা
  • জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক