পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 31st, July 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দুটি সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। গতকাল বুধবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটে।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের সুকানি সীমান্ত দিয়ে সাতজন পুরুষ এবং সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়া সীমান্ত দিয়ে ১০ জন নারী-পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। বিজিবি সদস্যরা গতকাল রাত থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্ত এলাকা থেকে তাঁদের আটক করেন। পরে তাঁদের তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় সদর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি যশোর, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর ও বরিশাল জেলায়। পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম এবং নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের উপ–অধিনায়ক মেজর কাজী আসিফ আহমদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বিজিবি জানায়, আজ ভোরে তেঁতুলিয়ার ভজনপুর সেতু এলাকা থেকে সাতজন পুরুষকে আটক করা হয়। এর আগে রাতের কোনো এক সময় সুকানি সীমান্তের ৭৩৯ নম্বর মেইন পিলারের ২০ নম্বর রেফারেন্স পিলার-সংলগ্ন এলাকা দিয়ে ভারতের ৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠান।
অন্যদিকে গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাগড়া সীমান্তের ৭৫৫ নম্বর মেইন পিলারের ২ নম্বর সাব–পিলার এলাকা দিয়ে ৯ জন নারী ও ১ জন পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠান ভারতের ৯৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা। পরে তাঁদের প্রায় ২০০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে বাঙ্গালপাড়া এলাকা থেকে আটক করেন বিজিবির ঘাগড়া বিওপি সদস্যরা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ভারতে বসবাস করছিলেন এবং বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। সম্প্রতি তাঁদের ওডিশা ও অন্য কিছু এলাকা থেকে আটক করে ভারতের পুলিশ। পরে তাঁদের উড়োজাহাজ ও বাসে সীমান্তে এনে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশীষ কুমার শীল বলেন, ঠেলে পাঠানো ১০ জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি বলে দাবি করেছেন। পরিচয় ও নাগরিকত্ব যাচাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তেঁতুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুসা মিয়া জানান, বিজিবির হস্তান্তর করা সাতজনের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে তাঁদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে চলতি বছরের ১৬ মে থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে বিএসএফ পঞ্চগড় সীমান্ত দিয়ে আরও ১৩৭ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জন প র ষ ব এসএফ জন ন র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আরো পড়ুন:
গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।
বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/সাজু/রফিক