নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে চাঁদার দাবিতে সিরাজুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই সহোদরকে যাবজ্জীবন করাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১০ হাজার জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, ১ম আদালতের বিচারক মো. মোমিনুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময়ে তারা আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। 

কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- পাপ্পু (৪০) ও তার ভাই শুক্কুর (৩৭)। তারা উভয়ই সিদ্ধিরগঞ্জের মিজিমিজি বাতানপাড়া এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে। সেই সাথে নিহত সিরাজুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জের সিআই খোলা বউ বাজার এলাকায় তাঁর ভায়রা আব্দুল মালেকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো.

কাইউম খান এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার নথিপত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া এলাকায় ভায়রা সৌদিপ্রবাসী জাকির হোসেনের নির্মাণাধীন ভবনের কাজের তদারকির কাজ করতে সিরাজুল ইসলাম। বাতানপাড়ার শুক্কুর ও তার ভাই পাপ্পু সহ কয়েকজন তাঁর কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল।

তারই অংশ হিসেবে শুক্কুর ও তার ভাই পাপ্পু ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই সিরাজুল ইসলামের কাছে চাঁদা দাবী করে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। 

একপর্যায়ে সিরাজজুল ইসলামকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে চলে যায়। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

এই ঘটনায় তার ছেলে মো. জাকারিয়া কনক বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য স দ ধ রগঞ জ ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ স র জ ল ইসল ম স দ ধ রগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ