ফ্লাইট এক্সপার্টের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা, তিন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
Published: 3rd, August 2025 GMT
উড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’-এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ফ্লাইট এক্সপার্টের তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- এজেন্সির হেড অব ফাইন্যান্স সাকিব হোসেন (৩২), চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সাঈদ আহমেদ (৪০) ও চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন (৩২)।
মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আজ রোববার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, বিপুল সরকার নামে এক গ্রাহক গতকাল শনিবার রাতে মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। এতে পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুজন আসামি হলেন, ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) সালমান বিন রাশিদ শাহ সাঈম ও তাঁর বাবা এম এ রাশিদ। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন ওসি।
থানা সূত্রে জানা গেছে, ১৭টি ভুক্তভোগী এজেন্সি তাদের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১৭টি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৭৭ লক্ষ টাকা বলে জানা গেছে।
গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যায় ফ্লাইট এক্সপার্ট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি। তাঁরা অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করেছিলেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে মালিকপক্ষ দেশ ছেড়েছে। এতে গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কোটি কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, অনেক মানুষ সেখানে ভিড় করেছেন। তাঁদের অনেকেই বিভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সির প্রতিনিধি, যাঁরা নিজেদের কেনা টিকিটগুলো কী হবে, তা জানতে চান। কিন্তু কার্যালয়ে গিয়ে অধিকাংশই হতাশ।
২০১৭ সালের মার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন (কক্ষ সংরক্ষণ), ট্যুর প্যাকেজ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মতো বিভিন্ন সেবা দিত তারা। বিশেষ করে কম খরচে সহজে টিকিট বুকিংয়ের সুবিধার কারণে প্ল্যাটফর্মটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ফ্লাইট এক্সপার্ট নিজেরা সরাসরি উড়োজাহাজ পরিচালনাকারী সংস্থাগুলোর কাছ থেকে টিকিট না নিয়ে দুটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করত। এখন ওই দুটি এজেন্সি নিজেদের কেনা টিকিটগুলো রিফান্ড (ফেরত) করে অর্থ তুলে নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুনফ্লাইট এক্সপার্ট হঠাৎ বন্ধ, মালিক ও কর্মকর্তার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ১৬ ঘণ্টা আগেফ্লাইট এক্সপার্টের অভ্যন্তরীণ একটি ফেসবুক গ্রুপে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদের একটি বার্তার স্ক্রিনশট পেয়েছে প্রথম আলো। সেখানে তিনি দাবি করেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। তিনি নিজেকে হুমকি ও অপবাদ থেকে রক্ষা করতেই প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করে দিচ্ছেন এবং দেশ ছাড়ছেন।
হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান বিন রশিদ টাকা নিয়ে পালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ত্রাণ সংগ্রহকারী ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে সাইলেন্সারযুক্ত অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরায়েল
ত্রাণ সংগ্রহ করতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের হত্যা করতে সাইলেন্সার যুক্ত অস্ত্র ব্যবহার করছে ইসরায়েলি সেনারা। ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল প্রথমবারের মতো এই অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে আল-জাজিরা অনলাইন।
উত্তর গাজায় আল জাজিরার আরবি সংবাদদাতা আনাস আল-শরিফ জানিয়েছেন, তিনি একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলেছেন যারা বেইত লাহিয়ার কাছে সুদানী এলাকায় সাইলেন্সার ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সেখানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী একটি সাহায্য কেন্দ্রের আশেপাশের লোকদের লক্ষ্য করে সাইলেন্সারযুক্ত অস্ত্র ব্যবহার করেছিল।
তিনি জানান, এর অর্থ হল ইসরায়েলি সেনারা নিজেদের বেপরোয়াভাবে ত্রাণ সংগ্রহকারীদের হতাহত করার চেষ্টা করছিল। শুক্রবার মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ এবং ইসরায়েলে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাইক হাকাবি কয়েক ঘন্টা ধরে গাজা সফর করার সময় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ হচ্ছে একটি মার্কিন সমর্থিত একটি ত্রাণকেন্দ্র পরিচালনাকারী সংস্থা। একে সমর্থন দিয়েছে ইসরায়েল। গাজায় সরবরাহ পৌঁছানোর জন্য জিএইচএফ বেসরকারি মার্কিন নিরাপত্তা ও সরবরাহ কোম্পানি ব্যবহার করে। এটি জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন একটি ব্যবস্থাকে এড়িয়ে চলে। গাজায় জিএইচএফ মে মাসের প্রথম দিকে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের প্রায় প্রতিদিন গুলি করার জন্য কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৭৩ জন ফিলিস্তিনি জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে নিহত হয়েছেন।
ঢাকা/শাহেদ