চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। কুমিল্লা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৮৪৪ জনের। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৭ জন। 

রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল ১০ টায় পুনঃনিরীক্ষণের ফলাফল প্রকাশিত হয়।

শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, কুমিল্লা বোর্ডে ৩৫ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেন। মোট ৭৫ হাজার ৮৭৭টি খাতা চ্যালেঞ্জ করেন। ৮৪৪ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। ফেল থেকে পাস করেছেন ১৯০ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৭ জন।

আরো পড়ুন:

এসএসসির পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ আজ, জানবেন যেভাবে

এ সপ্তাহের রাশিফল (৯-১৫ আগস্ট)

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডে মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাস করে ১ লাখ ৬ হাজার ৫৮১ জন। যা ফল পুনঃনিরীক্ষণের পর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৭৭১ জন। এ বোর্ডে জিপিএ ৫ পায় ৯ হাজার ৯০২ জন। যা পুনঃনিরীক্ষণের পর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৯৬৯ জনে।  

ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের বিষয়ে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন বলেন, পুনঃনিরীক্ষণের যতগুলো আবেদন পড়েছে, গুরুত্বের সঙ্গে সবগুলো খাতা পুনরায় নিরীক্ষা করা হয়েছে। যাদের ফলাফল পরিবর্তনযোগ্য মনে হয়েছে, সেগুলো করা হয়েছে।
 

ঢাকা/রুবেল/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফল এসএসস র ফল ফল ফল প পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

দিনমজুর বাবার ‘কষ্টের মর্ম বুঝে’ ২ মেয়ে এখন বিসিএস ক্যাডার

আবদুল হান্নান পেশায় দিনমজুর। পাঁচ কাঠা জমি আর টিনের ছাপরার একটি ছোট ঘরেই ছয় সদস্যের পরিবারের ঠিকানা। দিনমজুরের কাজ করে সংসার চলে কোনোরকমে। তবে আর্থিক সংকটের মধ্যেও মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করেননি তিনি। তাঁর স্ত্রী গৃহস্থালি সামলানোর পাশাপাশি সব সময় মেয়েদের পড়াশোনায় উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। অনেক কষ্ট ও সংগ্রামের পথ পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এ দম্পতির দুই মেয়ে বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন। মা–বাবা ও ভাই–বোনদের নিয়ে এখন তাঁরা সেই পরিশ্রমের আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন।

আবদুল হান্নানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে। তাঁর তিন মেয়ে ও এক ছেলে। বিসিএস ক্যাডার হওয়া দুই মেয়ে হলেন সারমিন খাতুন ও খাদিজা খাতুন। ছোট বোন খাদিজা ৪১তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিয়েছেন। এবার বড় বোন সারমিন ৪৪তম বিসিএসে পশুসম্পদ ক্যাডার পেয়েছেন। দুই বোনের ভাষ্যমতে, তাঁদের এ অবস্থানে আসার পেছনে মায়ের অবদানই সবচেয়ে বেশি।

দুই মেয়ের সাফল্যে মা–বাবার আনন্দ সীমাহীন। বাবা আবদুল হান্নান বলেন, ‘কষ্ট কর‍্যাছি, মেয়েরা বাপ–মায়ের কষ্টের মর্ম বুঝ্যাছে। তারা সফল হয়্যা দ্যাখিয়্যা দিয়াছে। বাপ–মাকে সম্মানের জাগাতে লিয়া গেছে। গাঁয়ের মানুষ হামারঘে এ্যাখুন অনেক সম্মান দ্যাখায়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দ্যায়।’

সারমিন খাতুন ২০০৮ সালে বালিয়াডাঙ্গা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পান। একই বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে জিপিএ–৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন খাদিজা খাতুন। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন আবদুর রাজ্জাক। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই দুই বোনের গল্প নিয়ে প্রথম আলোর ‘অদম্য মেধাবী’ সিরিজে প্রতিবেদন ছাপা হয়। এরপর সারমিন পান প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তি এবং খাদিজা পান হামদর্দ লিমিটেডের সহায়তা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগে ভর্তির পর প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তির টাকাই ছিল সারমিন খাতুনের মূল ভরসা। ছোট বোন খাদিজাও ভর্তির সুযোগ করে নেন একই বিভাগে। তখন বৃত্তির টাকা ভাগাভাগি করে পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন দুই বোন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে সারমিনের জন্য বরাদ্দ সিঙ্গেল সিট ব্যবহার করতেন ছোট বোন খাদিজা খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে। একই বিষয়ে পড়ায় দুজনের জন্য আলাদা করে বইপত্র কিনতেও হয়নি।

কঠিন পথ পেরিয়ে বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সারমিন বলেন, ‘আমাদের পরিবারের কষ্টের পথ অনেক লম্বা ছিল। প্রথম আলো ট্রাস্টের বৃত্তির সহায়তা ও মা–বাবার ত্যাগ না থাকলে আজকের অবস্থানে আসা সম্ভব হতো না।’

নিজ বাড়িতে বাবার সঙ্গে বড় মেয়ে সারমিন খাতুন। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দিনমজুর বাবার ‘কষ্টের মর্ম বুঝে’ ২ মেয়ে এখন বিসিএস ক্যাডার