নাঙ্গলকোটে বিএনপির সম্মেলন, ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ
Published: 12th, August 2025 GMT
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন করা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও বিদ্যালয়-মাদ্রাসায় আসে। কিন্তু, মাঠে সম্মেলনের মঞ্চ, মাইকের আওয়াজ ও শত শত নেতাকর্মীর ভিড় দেখে শিক্ষকরা ক্লাস বন্ধ করতে বাধ্য হন। কিছু বিদ্যালয়ে সকালে কয়েক ঘণ্টা ক্লাস হলেও পরে মাইকের আওয়াজ ও ভিড়ের কারণে ছুটি ঘোষণা করা হয়।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন
যোগ্য হয়েও রাবির শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়ার অভিযোগ
ক্লাস বন্ধ করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হলো—আদ্রা দক্ষিণ ইউনিয়নের ভোলাইন বাজার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভোলাইন বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বটতলী ইউনিয়নের বটতলী এম এ মতিন উচ্চ বিদ্যালয়, বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ ইউনিয়নের বক্সগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়, বক্সগঞ্জ আলিম মাদ্রাসা, বক্সগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা পূর্ব ইউনিয়নের জোড্ডা বাজার পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, জোড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জোড্ডা বাজার সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসা এবং জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের দুয়ারিয়া জা’মিউল উলূম কওমী মাদ্রাসা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৫ ইউনিয়নের সম্মেলনের তারিখ ১২ ও ১৩ আগস্ট। এর মধ্যে প্রথম দিনে সাত ইউনিয়নের সম্মেলন হয়। দৌলখাঁড় ও আদ্রা উত্তর ইউনিয়নের সম্মেলন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে হলেও বাকি পাঁচ ইউনিয়নের সম্মেলন হয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে। একই মাঠে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় মোট ১১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নজির আহমেদ ভূঁইয়া বলেছেন,“নাঙ্গলকোটে যে প্রক্রিয়ায় ইউনিয়ন সম্মেলন হচ্ছে, তা দলীয় গঠনতন্ত্রের বিরোধী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দলীয় কার্যক্রম করার বিধান আমাদের দলে নেই। এটি দলের বদনাম করার শামিল। এ ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দকে অবহিত করব।”
নাঙ্গলকোট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, “বিএনপির ইউনিয়ন সম্মেলনের কারণে কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কিছু সময় ক্লাস চালিয়ে পরে ছুটি দিয়েছে।”
নাঙ্গলকোট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আল আমিন সরকার বলেছেন,“বিষয়টি আমার জানা ছিল না। রাজনৈতিক সভার জন্য শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ন ঙ গলক ট উপজ ল ক ল স বন ধ বন ধ র খ ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
যাচ্ছিলেন বিয়ের দিন ঠিক করতে, পথে ২ জনকে পিটিয়ে হত্যা
রংপুরের তারাগঞ্জে ভ্যানচোর সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে ৯টার দিকে উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
রবিবার (১০ আগস্ট) তারাগঞ্জ থানার ওসি এমএ ফারুক বলেন, “গণপিটুনিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। মামলা প্রস্তুতি চলছে।”
নিহতরা হলেন, তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুরের রুপলাল দাস (৪০) এবং মিঠাপুকুরের বালুয়াভাটা গ্রামের প্রদীপ দাস (৩৫)। সম্পর্কে তারা আত্মীয়।
আরো পড়ুন:
সিলেটে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
সাংবাদিক তুহিন হত্যা: আরো একজন গ্রেপ্তার
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী জানান, নিহত রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর দাসের বিয়ের কথা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। রবিবার বিয়ের দিনতারিখ ঠিক করার কথা ছিল।
মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ের প্রদীপ দাস আত্মীয় রুপলাল দাসের বাড়ির দিকে রওনা হন। গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ দাস তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট এলাকায় গিয়ে রুপলালকে ফোন করেন। রুপালাল গেলে তারা দুইজনে ভ্যানে করে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হন।
রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের কয়েকজন আটক করেন। এরপর সেখানে লোক জড়ো হতে থাকে। এক পর্যায়ে প্রদীপ দাসের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে চারটি প্লাস্টিকের ছোট বোতল বের করেন লোকজন। এর একটি বোতল খুললে ভেতরে থাকা তরলের ঘ্রাণে অসুস্থ হয়ে পড়েন পাশারিপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক আলমগীর হোসেন ও বুড়িরহাটের মেহেদী হাসান। ফলে লোকজনের সন্দেহ আরো বেড়ে যায়।
এরপর ভ্যান চোর সন্দেহে তাদের মারধর শুরু করেন এলাকাবাসী। বটতলা থেকে মারতে মারতে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিয়ে আসা হয় তাদের। মারধরের একপর্যায়ে অচেতন হলে সেখানে ফেলে রাখা হয় তাদের। রাত ১১টায় আহতদের উদ্ধার করে পুলিশ তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
তারাগঞ্জ হাসপাতালের চিকিৎসক রুপলাল দাসকে মৃত্য ঘোষণা করেন। প্রদীপ দাসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে। আজ রবিবার ভোরে তিনিও মারা যান বলে নিশ্চিত করেছেন নিহত রুপলাল দাসের ভাই খোকন দাস।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ