নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে ‘গলায় গামছা ও মাজায় রশি’ লাগতে পারে: সিইসিকে ইসলামী আন্দোলন
Published: 13th, August 2025 GMT
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে তাঁকে সতর্ক করে এসেছেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। ওই সাক্ষাৎ শেষে দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হলে সিইসির গলায় গামছা ও মাজায় রশি লাগতে পারে, সে কথা তাঁকে বলে এসেছেন তিনি।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ইসলামী আন্দোলনের নেতারা। সাক্ষাৎ-পরবর্তী ব্রিফিংয়ে গাজী আতাউর রহমান দাবি করেন, নির্বাচনের জন্য দেশে এখনো ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি হয়নি। নির্বাচন কমিশনের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন তাঁরা।
গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আমরা বলেছি যে আপনি যদি মনে করেন সুষ্ঠু নির্বাচন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে পারবেন, তাহলে আপনি নির্বাচন দেন। আর যদি আপনি মনে করেন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারবেন না, তাহলে আপনি ঝুঁকি নেবেন না। কারণ, যদি আপনি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না দিতে পারেন, তাহলে বিগত নির্বাচন কমিশনের পরিণতি আপনাকে ভোগ করতে হবে। আপনার গলায় গামছা এবং মাজায় রশি লাগতে পারে। এই অবস্থাটা আপনি মনে রাখবেন।’
সাক্ষাতে নির্বাচন কমিশনের কাছে ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে সাতটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে: জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজন, নির্বাচনী কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যদের নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখার জন্য প্রশিক্ষণ, ভোটকেন্দ্রে সেনাবাহিনী মোতায়েন, জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে যে সংস্কার হবে, সে অনুযায়ী পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন, আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা এবং দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।
ইসলামী আন্দোলন নিরপেক্ষ ও ক্রেডিবল (গ্রহণযোগ্য) নির্বাচন চায় উল্লেখ করে গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘বিগত সময়ে বাংলাদেশে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেখানে মূল সমস্যা ছিল নির্বাচন পদ্ধতিতে। তাই পিআর পদ্ধতির নির্বাচন আয়োজন আমাদের মৌলিক দাবি। যাতে জনগণের শতভাগ ভোটের মূল্যায়ন হয় এবং নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হয়।’
ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমেদের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন ও যুগ্ম মহাসচিব আশরাফুল আলম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ রহণয গ য ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়ার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। আজ সোমবার সংগঠনের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমানের গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বন্দরের নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই বিদেশি সংস্থার হাতে দেওয়া যাবে না।
বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক শক্তির প্রাণকেন্দ্র বন্দর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা শক্তির হাতে ব্যবস্থাপনাগতভাবে স্থানান্তর করার যেকোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কৌশলগত স্থাপনা পরিচালনার নামে কোনো বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ সুবিধা বা গোপন চুক্তি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসংগত ও অগ্রহণযোগ্য।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জনগণের অগণিত ত্যাগ ও শ্রমে গড়ে ওঠা চট্টগ্রাম বন্দর–সম্পর্কিত যেকোনো সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা, জন আস্থার প্রতি সম্মান এবং রাষ্ট্রীয় কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করে গ্রহণ করতে হবে। জনগণের অজান্তে বা গোপন আলোচনা ও চুক্তির মাধ্যমে দেশের সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করি। জাতীয় সম্পদ রক্ষার প্রশ্নে কোনো শিথিলতা, সমঝোতা বা বিদেশি চাপ গ্রহণযোগ্য নয়। চট্টগ্রাম বন্দর দেশের, দেশেরই থাকবে। এটি রক্ষায় প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ নাগরিক সতর্কতা ও গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত রয়েছি।’