বিপৎসীমার ওপরে দুধকুমারের পানি, ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
Published: 14th, August 2025 GMT
কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে পানি বাড়লেও এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। নিচু এলাকাগুলোতে প্রবেশ করছে বন্যার পানি। তবে, এখনো বাসবাড়িতে পানি প্রবেশ করেনি।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুধকুমারের ভাঙনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর, তিস্তার ভাঙনে উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে উলিপুরের বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অন্তত ৩০টি পয়েন্টে নদ-নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে। এক সপ্তাহের নদীভাঙনে এসব এলাকার শতাধিক ঘর-বাড়িসহ মসজিদ, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে আছে আরো শত শত ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।
ভাঙনকবলিতরা জানিয়েছেন, নদীভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন তারা। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া এলাকার লেবু মিয়া বলেছেন, দুধকুমারে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বানিয়া পাড়ার প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। যাদের ঘর-বাড়ি, গাছপালা নদের কিনারে পড়েছে, তারা সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পুরো বানিয়া পাড়া গ্রাম নদীগর্ভে চলে যাবে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানিয়েছেন, বেগমগঞ্জের তিনটি পয়েন্টে ভাঙন অব্যাহত আছে। বার বার বলার পরও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে বন্যার পুর্বাভাস আছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী, দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনকবলিত ৩০টি পয়েন্টের মধ্যে ২০টি পয়েন্টে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
ঢাকা/বাদশাহ্/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব পৎস ম র প রব হ ত র উপজ ল ব যবস থ ঘর ব ড় র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
শত কোটি টাকার নদী খনন কাজ বন্ধ
নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু কিছুদিন কাজ করার পর তা বন্ধ চলে যায় চুক্তি করা টিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পুনরায় খনন কাজ শুরু করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, খাগড়াছড়ি শহর ও তৎসংলগ্ন অবকাঠামো নদী ভাঙন থেকে সংরক্ষণ প্রকল্পের আওয়াতায় ২৫০ কোটি ব্যয়ে নদীর নাব্যতা ফেরাতে চেঙ্গী ও মাইনি নদীর ৫৮ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকল্প অনুযায়ি, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ এবং মাইনি নদীর ইয়ারাংছড়ি থেকে লংগদু মুখ পর্যন্ত খনন করার কথা।
আরো পড়ুন:
ঢাকার ৪৪ খাস পুকুর-জলাশয় সংস্কার শুরু
মাদারীপুরে নদীর মাটি চুরি, ভাঙন আতঙ্ক
কিন্ত মাইনি নদীর খনন কাজ চললেও চেঙ্গী নদীর কাজ কিছুদিন করার পর বন্ধ করে চলে যায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। মহালছড়ি থেকে নানিয়ারচর অংশে কাজ নতুন করে শুরু হলেও রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর থেকে বুড়িঘাট শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ স্মৃতি স্তম্ভ পর্যন্ত অংশের খনন কাজ ৩-৪ মাস ধরে একেবারে বন্ধ।
এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
নানিয়ারচর পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম, মো. আনসার আলী ও হাসাপতাল এলাকা বাসিন্দা মো. নুরুল হক জানান, নদীর খনন কাজ শেষ হলে তারা উপকৃত হতেন। বিশেষ করে কাপ্তাই হ্রদের পানি যখন কমে যায়, শুকনা মৌসুমে নদী পথে তাদের মালামাল আনা-নেওয়া করতে সুবিধা হত। আর সেই মাটিগুলো দিয়ে যদি নিচু রাস্তাগুলো উচু করা যেত তাহলে তারা উপকৃত হতেন। তাদের দাবি আবার যেন দ্রুত খনন কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
এনিয়ে কথা বলতে নানিয়ারচর অংশের টিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েল এডব্লিউআর (জেভি) এর ম্যানেজার মো. মাহবুবের ও মহালছড়ি অংশের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এআরকেএল-এসএমআইএল (জেবি) এর ম্যানেজার মো. সোয়েবের মোবাইল নাম্বারে কল দেওয়া হলে তারা রিসিভ করেননি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, চট্টগ্রাম পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, চেঙ্গী নদীর মহালছড়ি থেকে নানিয়ার এর কাজ মাঝখানে বন্ধ হয়েছিল, ড্রেজার নিয়ে গিয়েছিল কন্ট্রাকটর। তখন কাজ বাতিলের নোটিশ করেছিলেন। তবে মহালছড়ি অংশের ঠিকাদার আবার নতুন করে ড্রেজার নিয়ে এসেছে। এখন থেকে নিয়মিত কাজ চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি জানান, নানিয়াচরে ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে কাজ করতে পারেনি। ফলে উপরের নির্দেশে কাজ বাতিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করতে হবে। আর মাইনী নদীর খনন কাজ চলমান আছে, আগামী জুন মাসে শেষ হবে।