মানিকগঞ্জে মরিচের দাম পেয়ে চাষি খুশি
Published: 25th, August 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় চলতি মৌসুমে কাঁচা মরিচের ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ঘিওর, দৌলতপুর, শিবালয়, সিংগাইর, হরিরামপুর, সাটুরিয়া ও মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার চাষিরা মরিচ চাষ করেছেন। তারা মরিচ বিক্রি করে লাভ পাচ্ছেন।
স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। চাষিরা বলছেন, এক কেজি মরিচ উৎপাদনে তাদের খরচ হয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। সেই হিসাবে এবার লাভের মুখ দেখছেন তারা। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় দ্বিগুণ দাম পাচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
কৃষকদের ক্ষতি কমাতে সরকারিভাবে আলু ক্রয় করা হবে: কৃষি উপদেষ্টা
ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কদ্বীপে সবজি চাষ
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ড.
তিনি জানান, মরিচ শুধু স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে না, ব্যবসায়ীরা মরিচ সংগ্রহ করে প্যাকেটজাত করে বিদেশে পাঠাচ্ছেন। ঢাকার বিমানবন্দর হয়ে মরিচ যাচ্ছে লন্ডন, দুবাই, মালয়েশিয়া, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ইতালি, ফ্রান্স, নেপাল ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্তত ১৫ থেকে ২০ দেশে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে কিনে রপ্তারি করে ভালো অঙ্কের মুনাফা করছেন।
ঘিওর হাটে পাইকাররা প্রতি কেজি মরিচ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় কিনেছেন। যেখানে গত সপ্তাহেও দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। বরংগাইল, উথলি, ঝিটকা, তরা ও টেপরা হাটে এমন বিক্রি হচ্ছে।
ঘিওরের মাইলাগি গ্রামের কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, “২০ শতাংশ জমিতে মরিচ লাগিয়েছি। এ বছর ফলন তেমন ভালো হয়নি কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় যা আয় হয়েছে, তা গত কয়েক বছরে কল্পনাও করিনি।”
আরেক চাষি হাসান আলী বলেন, ‘‘মরিচ চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা থাকলেও এবার লাভজনক হওয়ায় আগামী মৌসুমে চাষিরা উৎসাহী হবেন।’’
দৌলতপুরের কৃষক আবদুল করিম বলেন, “মরিচের দাম ভালো হওয়ায় পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। গত বছর লোকসান গুনতে হয়েছিল। এবার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারলাম।”
বরংগাইল হাটের আড়তদার রফিকুল ইসলাম জানান, “বিদেশে চাহিদা বেশি থাকায় বাজার চাঙা হয়েছে। যদি সরকার রপ্তানির সুযোগ আরো সহজ করে দেয়, তাহলে চাষি ও ব্যবসায়ী উভয়পক্ষই লাভবান হবে।”
মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন কমিটির সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘মরিচ এ অঞ্চলের সম্ভাবনাময় ফসল। যদিও কয়েক বছর ধরে দাম পড়ে যাওয়ায় অনেকে আবাদ কমিয়েছিলেন। তবে এবারের সাফল্য আবার নতুন আশার সঞ্চার করেছে। কৃষকরা মনে করছেন, সরকার যদি সঠিক সময়ে সংরক্ষণ ও রপ্তানির ব্যবস্থা করে দেয়, তবে মরিচ চাষ করে চাষিরা লাভবান হবে।’’
ঢাকা/চন্দন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ন কগঞ জ হওয় য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের দিন অমোচনীয় কালি সরবরাহ না হলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে: ছাত্রদল
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে অমোচনীয় কালি সরবরাহ না করলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতারা। এ ছাড়া এমফিল কোর্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ছাত্রদলকে ভোট প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর আচরণবিধিবিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ছাত্রদলের নেতারা এমন মন্তব্য করেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘নির্বাচনে যদি কোনো ধরনের অনিয়মের ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা একচুল ছাড় দেব না। আমি প্রতিজ্ঞা করছি, যদি কোনো ধরনের অনিয়ম হয়— কোনো ছাড় হবে না। নির্বাচনের সময় অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে হবে। যদি নির্বাচন কমিশন অমোচনীয় কালি ব্যবহার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকবে।’
ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘ম্যানুয়ালি’ ভোট গণনার দাবি জানিয়ে শামসুল আরেফিন বলেন, ‘কত ব্যালট ছাপানো হলো, কত ভোট গণনা হলো, কত ব্যালট নষ্ট হলো—এসব তথ্য স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করতে হবে। কারণ, আমরা ডাকসুতে ব্যালট কেলেঙ্কারির অভিযোগ সম্পর্কে জানি।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ বিধিমালায় এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা না দিয়ে ছাত্রদলকে ‘মাইনাস’ করার একটি মাস্টারপ্ল্যান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘জকসু গঠন ও পরিচালনা বিধিমালায় বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর নিয়মিত শিক্ষার্থী ভোটার কিংবা প্রার্থী ছাড়া কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। অন্যদিকে এমফিল শিক্ষার্থীদের ভোটার ও প্রার্থীর যোগ্যতা না দিয়ে আমাদের মাইনাস করা ছিল মাস্টারপ্ল্যান—আর সেই মাস্টারপ্ল্যান সফল হয়েছে।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, প্রক্টর, সিন্ডিকেটের সদস্য, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর নির্বাচন কমিশনার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।